গ্রামবাংলা ডেস্ক; আমরা বিভক্তি চাই না। আমরা কেবল রিপাবলিকানদের নিয়ে নয়, আমরা ডোমোক্রেটদের নিয়েইও কাজ করব। আমরা সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে ‘ইউনাইটেড পিপল’ গড়ে তুলব। আমরা মানুষের জন্য কাজ করব। আমেরিকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করব। আমেরিকার অর্থনীতিকে এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ ভালো করব। প্রেসিডেন্ট হিসেবে িিনর্বাচিত হওয়ার প্রথম দেয়া বক্তব্যেই এসব কথা বলেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। সিএনএনের খবরে বলা হয়, একে একে বিভিন্ন রাজ্যের ফলাফল ট্রাম্পের পক্ষে আসতে থাকলে নিশ্চিত হয়ে যায় ট্রাম্পই হচ্ছেন ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ট্রাম্পের পক্ষে এলেই নিউ ইয়র্ক সিটিতে নিজের প্রচারণা শিবিরের সদর দপ্তরে তাৎক্ষণিকভাবে বক্তব্য রাখেন তিনি। ওই মঞ্চে শুরুতে আবির্ভূত হন ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাইক পেন্স। তিনি শুরুতেই নির্বাচনের ফলাফলকে স্বাগত জানিয়ে ধন্যবাদ জানান রিপাবলিকান ভোটারদের। তিনি তার পরিবারের সদস্যদেরও পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। একইসঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানান ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি যিনি তাকে রানিং মেট হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। দীর্ঘ ১৮ মাসের নির্বাচনী প্রচারণায় জড়িত প্রচারণা দলের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে পেন্স মঞ্চে আহ্বান জানান নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে। ট্রাম্প এ সময় তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হাজির হন। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও তাদের ছেলেমেয়েরা। ট্রাম্প বক্তব্য দিতে গিয়ে শুরুতেই বলেন, ‘এই মাত্র আমি হিলারি ক্লিনটনের ফোন পেয়েছি। তিনি আমাকে বিজয়ের অভিনন্দন জানিয়েছেন। আমিও তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি দীর্ঘদিন ধরে কঠিন এই নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্য।‘ এরপরই ট্রাম্প আকুণ্ঠ প্রশংসা করেন তার সমর্থকদের। তিনি বলেন, আপনারা এভাবে সমর্থন না করলে আমি আজকে এই অবস্থানে আসতে পারতাম না। তবে তাই বলে কেবল রিপাবলিকানদের নিয়েই তিনি কাজ করবেন না বলে জানান। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা বিভক্তি চাই না। আমরা ঐক্য চাই। যে যেখানে রয়েছেন, তিনি ডেমোক্রেটই হোন আর রিপাবলিকানই হোন, সবাইকে নিয়ে আমরা একটি ‘ইউনাইটেড পিপল’ গড়ে তুলব। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, প্রতিটি মার্কিন জনগণ আমার কাছে সমান গুরুত্ব পাবে।’ ডেমোক্রেট সমর্থক বা যারা তাদের ভোট দেননি তাদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনাদের আমি ভুলে যাব না। আপনাদের কাছে আমি যাব। আপনাদের কাছ থেকেও নির্দেশনা গ্রহণ করব যাতে করে একটি মহান আমেরিকা আমরা গড়তে পারি।’ নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমাদের প্রচারণা প্রকৃতপক্ষে প্রচারণা ছিল না। আমাদের এই প্রচারণা ছিল একটি মহান আন্দোলন। আমরা কঠোর পরিশ্রমী মার্কিন নাগরিকদের উন্নত ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে কাজ করব। বর্ণ, ধর্ম, বিশ্বাস যার যাই হোক না কেন, আমরা সব জনগণের ভবিষ্যতের জন্য কাজ করব।’ ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, কোনো স্বপ্নই অর্জনের বাইরে নয়। আমরা মার্কিন জনগণের অমিত সম্ভাবনায় বিশ্বাসী। আমরা প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনা, সুযোগ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করব। আমরা রাস্তাঘাট তৈরি করব, আমরা নতুন ভবন তৈরি করব, আমরা রেললাইন তৈরি করব, আমরা নতুন অবকাঠামো গড়ে তুলব। আমরা অদ্বিতীয় নজির স্থাপন করব।’ ট্রাম্প বলেন, ‘অর্থনীতির উন্নয়নে আমাদের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে। এই পরিকল্পনায় আমরা আমেরিকার অর্থনীতিকে দ্বিগুণ বড় করব।’ ট্রাম্প বহির্বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বলেন, কারো সঙ্গেই সাংঘর্ষিক সম্পর্ক চান না তিনি। বরং সবার সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে চান। তিনি বলেন, ‘আমরা সব দেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করব। আমরা কারো সঙ্গে সংঘর্ষ চাই না। সব দেশের সঙ্গেই আমাদের সুসম্পর্ক থাকবে।’ পরে ট্রাম্প তার এই অর্জনে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান তার পিতা-মাতাসহ পরিবারের সব সদস্যদের। বলেন, তারা পাশে না থাকলে এমন অর্জন তার পক্ষে সম্ভব হতো না। তিনি নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তার নির্বাচনী প্রচারণা দলের সদস্যদের কাছে। বলেন, তারা দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে যে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তার কারণেই এমন সম্মানজনক অর্জন সম্ভব হয়েছে তার জন্য।