কলকাতা প্রতিনিধি; পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটে ৩৪বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের টালির বাড়িতেই বসবাস করে আসছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার সময়ই বাড়ি পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন নিরাপত্তা এজেন্সির লোকজন। কিন্তু নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাই বাড়ি বদলে রাজি হননি। অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মমতার এই একচালা টালির ঘরেই এসেছিলেন। তখন অবশ্য মমতার মা বেঁচে ছিলেন। দেশবিদেশের বহু নেতা-মন্ত্রী-ভিআইপি কালীঘাটে মমতার এই বাড়িতে এসেছেন। এখনও আসেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁর বাড়ি বদলের পরামর্শ দিয়েছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তারা। সেবারও পরামর্শকে আমল দেননি। ন্যাশানাল সিকিউরিটি গার্ড এনএসজির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মমতার বাড়ি মোটেই তাঁর নিরাপত্তার পক্ষে নিরাপদ নয়। সেটি সংস্কার করা দরকার। মুখ্যমন্ত্রী থাকেন টালির চালের এক চিলতে ঘরে। যে ঘরে তিনি থাকেন, সেখানে শোয়ার জায়গাটি খুবই ছোটো। ঘরে চেয়ার পাতলে টেবিল পাতা যায় না। আর বাড়িটির অবস্থাও শোচনীয়। ঘুটিতে ঘুন ধরেছে। বাড়ির টালির ছাদ যে কোনও সময় ভেঙে মাথায় পড়তে পারে। বৃষ্টিতে পানিও পড়ে ঘরের মধ্যে। তার উপর রয়েছে টালি নালার ধার থেকে উঠে আসা ধেড়ে ইঁদুর আর ছুঁচোর উপদ্রব। সারারাত ইঁদুর-ছুঁচোরা চালে উঠে দাপাদাপি করে। মুখ্যমন্ত্রী ঘুমোতেও পারেন না ভাল করে। তাই আর আপস করতে রাজি হননি মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসারেরা। কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা অফিসারেরা বাড়ির হাল খতিয়ে দেখে অবিলম্বে সংস্কারের সুপারিশ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, তার বর্তমান বাসস্থানটি সংস্কার না করে তাকে সেখানে আর থাকতে দেয়া যাবে না। শেষ পর্যন্ত মমতা রাজি হয়েছেন বাড়ি বদল করতে। তবে মাত্র একমাসের জন্য। এই সময়ের মধ্যেই বাড়ি সংস্কার কাজ শেষ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, তার সঞ্চিত অর্থেই সেই সংস্কার হবে। সরকারি কোষাগারের একটি টাকাও এর জন্য খরচ করা যাবে না। ঠিক হয়েছে আপাতত এক মাসের জন্য কাছেই হেস্টিংসের একটি সরকারি ভবনে মমতা থাকবেন। বাড়ি মেরামতির পরে আবার মমতা তাঁর পুরনো ঠিকানাতেই ফিরবেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা গেছে।