ঢাকা; মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ওসি তেজগাঁওকে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী বাদি হয়ে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম বাদির বক্তব্য শুনে এ নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে উল্লিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দখল করেন। জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশে ফিরে এলে জিয়াউর রহমান তাকে হুমকি ও অবরুদ্ধ করে রাখেন। এতে জিয়াউর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশ, স্বাধীনতার ইতিহাস হুমকিযোগ্য ও মানহানিকর অপরাধ করায় তাকে মামলায় মরণোত্তর আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত-শিবিরের সাথে জোট করে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি স্বাধীনতা বিরোধীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার সম্মান লঙ্ঘন করেছেন।
এদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে আদেশের জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলার বাদি ঢাকা মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ জামানের আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। আদালত মামলার নথি পর্যালোচনা করে ১৭ নভেম্বর ওই বিষয়ে আদেশ দেয়ার জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর ম্যাট্রিক পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট। তার বিবাহের কাবিননামায় জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
বিভিন্ন মাধ্যমে তার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট জন্মদিন পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর দিন জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ-উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছেন। শুধু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্নের জন্য তিনি জন্মদিন পালন করেন। এ ঘটনায় ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন। আদালতে হাজির না হওয়ায় মামলার বাদি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলেন। ওই আবেদনের শুনানি শেষে আজ আদেশ দেয় আদালত।