প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাস প্রান্ত, বৃহত্তর বরিশাল থেকে : সারা দেশে আজ মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণভাবে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। দেশের কোন কোন জায়গায় নকল করা ও নকলে সহায়তা করায় কতিপয় ছাত্র ও মাদ্রাসা শিক্ষক সহ দু একজন বহিস্কার হবার খবর পাওয়া গেলেও ভোলার চরফ্যাশনে কোন শিক্ষক বা শিক্ষার্থী অসদোপায় অবলম্বন না করায় শান্তিপূর্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন বিষাক্ত ভীমরুলের কামড় খেয়ে হল ত্যাগ করতে হয়েছে কতিপয় শিক্ষার্থীর। ঘটনার বিবরনে প্রতক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায় চরফ্যাশন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৬ নং কক্ষের পরীক্ষারত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭ জন ভীমরুলের হঠাৎ আক্রমনের শিকার হয়।কোন দ্রুতগামী পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দে ভেন্টিলেটর এর অপর পাশে থাকা ক্ষুদ্র চাক থেকে কয়েকটি ভীমরুল বেরিয়ে এসে পরীক্ষারত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তত সাত জনকে আক্রমণাত্মক ভাবে কামড়ে দেয়। ভিমরুলের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে পরীক্ষা দিতে পারেনি ৪ জন এবংযন্ত্রনাকাতর ৩ জন অতি কষ্ট করে অনেকটা সময় হারিয়ে শেষ মূহুর্তের আনুমানিক আধাঘন্টার মত পরীক্ষা দিতে পারে।সংকটাপন্ন অবস্থায় অভিষেখ, আহনাব, রাসেল, ও মারুফ পরীক্ষা দিতে পারেনি। তাদেরকে চরফ্যাশন সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। উক্ত কেন্দ্রের ভিজিলেন্স টিম প্রধান ডাঃ হিরন্ময় বিশ্বাস ইউএলও, চরফ্যাশন মহোদয় জানান তখন বেলা আনুমানিক ১১.৩০ টা হবে, এসময় তিনি পাশের ভেন্যু চরফ্যাশন বালিকা মাঃ বিদ্যালয় থেকে হৈ চৈ শব্দ শুনে তাৎক্ষণিক সেখানে ছুটে যান, সেখানে ২৬ নং কক্ষে ৭ জন ছাত্র ভিমরুলের কামড়ের শিকার হওয়ায় ঐ কক্ষের সহসা ভীত হওয়া ছাত্ররা ভয়ে কক্ষ থেকে বেড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাল বিলম্ব না করে তাদেরকে দ্রুত পাশের খালি রুমে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত মেডিকেল টিমের সদস্যবৃন্দ পৌঁছাতে একটু দেরী করে ফেলায় আহতদের মধ্যে বেশ খানিকটা আতংক বিরাজ করতে থাকে। পরে মেডিকেল টিমের সদস্য ডাঃ সাহাদাত, ডাঃ মনির এসে তাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করলে আতংক কেটে যায়, ডাক্তারদের চিকিৎসায় কোন গাফিলতি ছিলনা। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর সাত জনের মধ্যে তিনজন পরীক্ষায় বসতে পারলেও উক্ত চারজনকে চরফ্যাশন সদর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ইউএলও ডা: হিরন্ময় বিশ্বাস জানান অনেক দূরে দূলারহাটে পরীক্ষা পরিদর্শনে থাকা উপজেলা নির্বাহি অফিসার জনাব মোহাম্মদ মানোয়ার হোসেন খবর পেয়ে সাথে সাথে ছুটে আসেন, তিনি হাসপাতালে গিয়ে আক্রান্তদের যাবতীয় খোজ খবর নেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ তাঁদের সন্তান পুনরায় পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুযোগ পাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও জানান এ পরীক্ষা পুনরায় গ্রহনের এখতিয়ার তাঁর নেই, তাদের বিষয়ের পক্ষে যথাযথ কতৃপক্ষ বরাবরে ঘটনার সত্যতা জানিয়ে একটা আবেদন করা যেতে পারে তবে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কি করবেনা সেটা যথাযথ কতৃপক্ষই বুঝবেন এ ব্যাপারে তাঁর কিছু করার নেই বলে জানিয়ে দেন।তিনি বিচলিত অভিভাবিকদের সান্ত্বনা দিয়ে বলেন যেহেতু এটা আকস্মিক দূর্ঘটনায় ঘটেছে সে ক্ষেত্রে কতৃপক্ষ কোন সহায়ক ভূমিকা নিলেও নিতে পারেন।পরীক্ষা পরিচালনা কতৃপক্ষের অবহেলা এবংপারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্পর্কে অকিবহাল না থাকার মত দায়িত্ত্বে অবহেলা ছিল এমন ঘটনার বিষয় নিয়ে কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করলে তিনি বলেন আমাদের আন্তরিকতার কোন অভাব ছিলনা। ভিমরুলের ছোট্র বাসাটি ছিল উক্ত রুমের ভেন্টিলেটরের বাইরের পাশে যা সহজে কারো চোখে পড়ার কথা নয়। কাজেই এ বিষয়ে কতৃপক্ষের কিইবা করার থাকতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে ঐ নিষ্পাপ শিক্ষার্থীদের আকস্মিক দূর্ঘটনায় হারিয়ে গেল তাদের একটি সোনালী বছর, কে ফিরিয়ে দেবে তাদের এই সম্ভাবনাময় একটি বছর এ প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।