ঢাকা; ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ডেমোক্রেট পার্টি। রাজ্যগুলো হলো পেনসিলভ্যানিয়া, নেভাদা, আরিজোনা ও ওহাইও। এ রাজ্যগুলো সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর অন্যতম। এসব রাজ্যের ভোটের হিসেবের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে কে হচ্ছেন নতুন প্রেসিডেন্ট। তাই এ রাজ্যগুলো ব্যাটলগ্রাউন্ড বা রণক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। সোমবার ডেমোক্রেট দলের কর্মকর্তারা ওই চারটি রাজ্যের ফেডারেল কোর্টে মামলা করেছেন। তাতে তারা বলেছেন, ডনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান দলের কর্মকর্তারা সেখানে সংখ্যালঘু ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। রিপাবলিকানদের এ প্রচেষ্টা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে ওই মামলায়। এতে আরও বলা হয়েছে এমন ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ১৯৬৫ সালের ভোটিং রাইটস অ্যাক্ট বা ভোটাধিকার আইন এবং ১৮৭১ ল’ ভঙ্গ করা হয়েছে। ওহাইও রাজ্য ডেমোক্রেটিক পার্টি মামলায় লিখেছে, ভোটারদের চাপে রেখে ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণা জোরালো করতে বলেছেন। এতে সবচেয়ে তীব্র মাইক্রোফোন ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে তার সমর্থকদের বলেছেন অবৈধভাবে ভোটারদের ভীতি প্রদর্শনে ব্যস্ত থাকতে। একই রকম ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে অন্য রাজ্যগুলোর মামলায়ও। এ বিষয়ে ট্রাম্প শিবির থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায় নি। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনের দিনে যেসব স্থানে ভোট জালিয়াতি হওয়ার ঝুঁকি আছে সেসব জায়গায় মনিটরিং করতে সমর্থকদের আগস্ট থেকেই আহ্বান জানিয়ে আসছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। মাঝে মাঝেই তিনি ফিলাডেলফিয়া, সেন্ট লুইসের মতো শহরে নিবিড় নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, এসব শহরে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই সংখ্যালঘু। ওহাইওতে নির্বাচনী প্রচারণায় হিলারি ক্লিনটন অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনে যাতে লোকজন ভোট দিতে না যান সেজন্য তাদেরকে অনুৎসাহিত করার প্রত্যাশা করছেন ট্রাম্প। হিলারি ক্লিনটন ক্লিভল্যান্ডে বলেছেন, ডনাল্ড ট্রাম্পের পুরো কৌশল হলো ভোট চাপিয়ে রাখা। এ জন্য প্রচণ্ড হুমকি দেয়া হবে। ভোট থেকে মনোযোগ সরিয়ে দেয়ার প্রচণ্ড চেষ্টা করা হবে। তাই রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি ট্রাম্পের প্রচারণা অথবা নির্বাচন মনিটরিংয়ে রাজ্যের দলগুলোর সঙ্গে যেন কাজ না করে সেজন্য চেষ্টা করছে ডেমোক্রেটরা। আলাদা একটি মামলায় বলা হয়েছে, আদালতের দীর্ঘদিনের নির্দেশ আছে, রাজনৈতিক জাতীয় দলগুলোর সাংগঠনিক কাঠামো যাতে নির্বাচনে নিরাপত্তায় কোনো সমস্যা সৃষ্টি না করে সে জন্য তাদেরকে এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত না হওয়ার। তবে জবাবে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি (আরএনসি) বলেছে, তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে জড়িত নয়। তবে অন্য এলাকাগুলোতে ট্রাম্পের সমর্থনে কাজ করে যাচ্ছে। আরএনসি বলেছে, এটা রাজনীতি। কোনো অন্যায় নয়। উল্লেখ্য, অনেক রাজ্যে এমন বাধা থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন মনিটরিং করছে। নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। ফিলাডেলফিয়ায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীদের অবশ্যই স্থানীয় নির্বাচনী বোর্ড থেকে অনুমোদন নিতে হয়। অবশ্যই ওই কাউন্টির নিবন্ধিত ভোটার হতে হয়। এসব বাধা দূর করার জন্য আদালতে একটি আর্জি জানিয়েছে রাজ্যের রিপাবলিকান পার্টি। যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে আগাম ভোট শুরু হয়ে গেছে। সুশীল সমাজের অনেক গ্রুপ এরই মধ্যে অভিযোগ করেছে, তারা স্বঘোষিত কিছু নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীর বিষয়ে রিপোর্ট পেয়েছে। এসব পর্যবেক্ষণকারী ভোটারদের ছবি তুলছে। অন্যদের ভীতি প্রদর্শন করছে। অন্যদিকে এক্সিট পোলিং নিয়ে একটি প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের মিত্র রিপাবলিকান দলের অপারেটিভ রজার স্টোন। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ডেমোক্রেটরা। ডেমোক্রেটরা বলেছে, তার এ প্রকল্পের নাম ‘স্টপ দ্য স্টিল’। এর সত্যিকার উদ্দেশ্য হলো সংখ্যালঘু ও নগর এলাকার ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন করা। তবে রজার স্টোন এর জবাবে বলেছেন, তার প্রজেক্টের একটি ভাল উদ্দেশ্য আছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ঠিকমতো, যথাযথভাবে কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্যই তিনি ওই প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তবে তিনি ‘স্টপ দ্য স্টিল’ ওয়েবসাইটে লিখেছেন, হিলারির ডেমোক্রেটরা নির্বাচনে ভোটারের বন্যা ডাকানোর চেষ্টা করছেন। এ জন্য তারা অবৈধদেরও ব্যবহার করছে। লিবারেলরাও তাদের স্থানীয় ও রাজ্য নির্বাচনে এমনটা করছে। এখন তারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও তাই করার চেষ্টা করছে। রজার স্টোন আরও বলেছেন, তার প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কাজ করছেন ১৪০০ মানুষ। তাদেরকে নমনীয় ভাষা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। ভোট দেয়ার পরে বুথ ফেরত মানুষের সঙ্গেই শুধু তাদেরকে কথা বলতে বলা হয়েছে। রজার স্টোন বলেন, যেহেতু আমরা ভোট দেয়ার পরে ভোটারের সঙ্গে কথা বলছি তাহলে কিভাবে তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হলো?