আজ সোমবার মোহাম্মদপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলহত্যা দিবসের কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এই সভার আয়োজন করে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভাস্থলে প্রবেশের মুখে তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে ও ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ করেন। এ সময় ওবায়দুল কাদেরের নামে তাঁরা স্লোগানও দেন। নিজের বক্তৃতার সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ফুলের মালা দেখেছি। অনেক পুষ্পস্তবক দেখেছি। এখন আর ফুলের দরকার নেই। ফুল সাজিয়েছিলাম ১৯৭৫ সালে। বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। পাপড়িও প্রস্তুত ছিল…ভালোবাসার শ্রদ্ধার ফুল ১৫ আগস্ট সূর্যোদয়ে রক্তাক্ত হয়ে গেল। রক্তাক্ত হলো মানচিত্র। তারপর ফুল দেখলে ভয় পাই।’
প্লিজ, সংশোধন হোন
সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া দলের জাতীয় সম্মেলন স্বতঃস্ফূর্ত ছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন আর দলে কোনো হতাশা নেই। আর ফুল নয়, কথা নয়। সবাই কাজে নেমে পড়ুন। জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ করুন। যাঁরা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করেছেন, মাঝেমধ্যে করেন, কিছু কিছু অপকর্ম করেছেন—প্লিজ, সংশোধন হোন। নতুবা কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কতিপয় নেতা-কর্মীর ও জনপ্রতিনিধির জন্য নেত্রীর অর্জন ম্লান করতে দেব না। সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হোক—এটা হতে দেব না।’
দলের জাতীয় সম্মেলনের পর নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘হতাশ হবেন না। কমিটমেন্ট নিয়ে লেগে থাকলে পুরস্কৃত হবেন। এর বড় প্রমাণ আমি ওবায়দুল কাদের…আমি বিশ্বাস করি, আমার ভাগ্যের চেয়ে বেশি কিছু পাব না। আর সময়ের আগে হবে না। ভাগ্য যখন অনুকূলে ও সময় যখন এসে যাবে, তখন পুরস্কার পাবেন।’
আশরাফ আমার নাম প্রস্তাব করেছেন, এটাই আ.লীগ
সংগঠনে দলাদলি না করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক আশরাফ না কাদের? সবাই কনফিউজড। সারা দেশে কন্ট্রোভার্সি। অথচ আশরাফই আমার নাম প্রস্তাব করেছেন। এরপর আর কিছু থাকে? এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। এটাই শেখ হাসিনার ম্যাজিক্যাল লিডারশিপ। কখন কোথা থেকে কাকে নেতা বানিয়ে দেন…।’
টিভিতে চেহারা দেখানোর জন্য এভাবে দাঁড়িয়েছে
ওবায়দুল কাদেরের বক্তৃতার শুরু থেকেই অনেকগুলো বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা চালু হয়ে ওঠে। তিনি বক্তৃতা করতে ডায়াসে এলে অনুসারীদের একটি অংশ তাঁর পেছনে অবস্থান নেন। বক্তৃতার শেষের দিকে তিনি সবাইকে তাড়িয়ে দেন এবং একপর্যায়ে মঞ্চ থেকেই নামিয়ে দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘টিভিতে নিজের চেহারা দেখানোর জন্য এভাবে দাঁড়িয়েছে। টিভিতে দেখা গেলে এলাকায় গিয়ে বলবে, আমাকে কি দেখেছ? এটা চলবে না। একটা ডিসিপ্লিনে আসতে হবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহর সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।