গাইবান্ধার খবর

Slider বাংলার মুখোমুখি

3-1

 
সাঘাটার গৃহবধূ পাপিয়ার একসঙ্গে তিন ছেলে

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল/গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভাঙ্গামোড় গ্রামের গৃহবধূ পাপিয়া বেগম (২৫) গতকাল একসঙ্গে তিনটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (মঙ্গলবার রাত ২টা ) মা ও নবজাতকেরা সুস্থ আছে।

একসঙ্গে তিন ছেলে পাওয়ার আনন্দের অনুভূতি জানিয়ে মা পাপিয়া বেগম বলেন, ‘চেয়েছিলাম একটি, কিন্তু আল্লাহ আমাকে তিনটি সন্তান দিয়েছেন। আমি খুব খুশি। আপনারা দোয়া করেন। আল্লাহ তাদের বাঁচিয়ে রাখুক এটাই আমি চাই।’

পাপিয়ার পারিবারিক সূত্র জানায়, সাঘাটা উপজেলার ঝড়াবর্ষা গ্রামের পাপিয়ার সঙ্গে বছর দেড়েক আগে একই উপজেলার ভাঙ্গামোড় গ্রামের আকাশ মিয়ার বিয়ে হয়। আকাশ ঢাকায় রিকশাভ্যান মেরামতের কাজ করেন। প্রথমবারেই আকাশ-পাপিয়া দম্পতির তিন ছেলে হলো।

গত শনিবার সকালে পাপিয়া বেগমের প্রসববেদনা উঠলে তাঁকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে তিনি স্বাভাবিকভাবে তিনটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতকদের ওজন কম থাকায় বিকেলে তাদের গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় নবজাতকদের নিয়ে গতকাল রোববার বিকেলে ঝড়াবর্ষা গ্রামে পাপিয়ার বাবার বাড়িতে চলে যান।

গাইবান্ধার সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু চৌধুরী সোমবার রাতে মুঠোফোনে বলেন, নবজাতকেরা ভালো আছে। তবে ওজন কম থাকায় ঝুঁকি আছে। ওদের ভালোভাবে দেখভাল ও উন্নত চিকিৎসা করাতে হবে। নবজাতকদের পরিবার চাইলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে ঢাকায় পাঠানো যেতে পারে বলে তিনি জানান।

সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঝড়াবর্ষা গ্রামে পাপিয়ার বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা ও তিন নবজাতক সুস্থ আছে। তাদের ফিডারে দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। দুই নবজাতকের ওজন এক কেজি করে এবং অপর নবজাতকের ওজন ৭০০ গ্রাম। এই তিন নবজাতককে দেখতে আশপাশের লোকজন বাড়িতে ভিড় জমিয়েছে।

তিন নবজাতকের বাবা আকাশ মিয়া বলেন, ‘একসঙ্গে তিন ছেলে পেয়ে আমি খুশি। চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেছেন। কিন্তু নিয়ে যাব কেমনে? যা আয় করি তা দিয়ে সংসারই চলে না।’

 

4-2

 
পলাশবাড়ীর কিশোরগাড়ী ইউপিকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল/গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার বিকেলে কাশিয়াবাড়ী হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে কিশোরগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিন্টু’র সভাপতিত্বে কিশোরগাড়ী ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করার লক্ষ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করে বাল্যবিবাহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকার গাইবান্ধার উপ-পরিচালক মোকলেছুর রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভার) কোহিনুর আক্তার বানু শিফন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুর রহমান, থানা অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান পিপিএম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ওসি) নবিউল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার আজিজুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুল আলম, উপজেলা প্রকৌশলী আহসান হাবিব, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস, স্থানীয় ইউপি সদস্য অঞ্জনা রাণী, অহেন্দ্রনাথসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
পলাশবাড়ীর শিমুলিয়া ২নং সঃপ্রাঃবিঃ মিড-ডে মিল উদ্বোধন

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল/গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার শিমুলিয়া ২নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মিড-ডে মিল উদ্বোধন করেন।

বিদ্যালয়ের সভাপতি কমলা কান্ত রায়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ বক্তব্য রাখেন,অন্যন্নদের মধ্যে,স্থানীয় সরকার গাইবান্ধার উপ-পরিচালক মোকলেছুর রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভার) কোহিনুর আক্তার বানু শিফন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুর রহমান, থানা অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান পিপিএম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ওসি) নবিউল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার আজিজুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুল আলম, উপজেলা প্রকৌশলী আহসান হাবিব, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুলতানা রাজিয়া প্রমুখ।

অপরদিকে জেলা প্রশাসক নয়আনা নওদা কমিউনিটি ক্লিনিক, কিশোরগাড়ী ইউপি ভবন, উপজেলা ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন।

পলাশবাড়ীর গ্রামগঞ্জ থেকে বিলুপ্তির পথে দেশীয় পাখী
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল/গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশী পাখি।
ফলে এখন আর পাখির কিচির মিচির ডাকে ঘুম ভাঙ্গেনা- গ্রামবাংলার ক্ষেত্রেও কথাটি শোনা যায়। গ্রামবাংলার প্রকৃতি থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে পাখি। দেশীয় পাখিরা গ্রামগঞ্জের ঝাউ-জঙ্গল, বাঁশ-ঝাড়ে বাস করলেও দ্রত জনবসতি গড়ে ওঠায় এসব পাখিরা তাদের বাসস্থান পরিবর্তন করছে।
গ্রামাঞ্চলের মানুষ প্রয়োজনের তাগিদেই এনসব ঝাউ-জঙ্গল কেটে ফেলছে। ফলে হারিয়ে ফেলছে তাদের চিরাচরিত বাসস্থান। কিছুদিন আগেও মাঠ-ঘাট, ক্ষেতে-খামারে বিচিত্র ধরণের পাখিদের বিচরণ ছিল।পাখিরা সেসময় ঝাঁকে ঝাঁকে এসে পাখিরা তৃষ্ণা মেটাতো আর খাদ্য অনুসন্ধানে ব্যস্ত থাকতো। ফসলের মাঠে পাখি বসার দৃশ্য সচরাচর দেখা গেলেও এখন তা হারিয়ে যাচ্ছে।অতীতে গ্রাম এলাকায় ব্যাপকহারে বক, শালিক, ঘুঘু, দোয়েল, বাবুই, টুনটুনি, চিল, পানকৌড়ি, ডাহুক, বালীহাঁস, কোকিল, কাকসহ বিভিন্ন পাখিদের দেখা যেত।
বিশেষ করে জাতীয় পাখি দোয়েল, ঘুঘু, বাওয়াই, শালিক, টুনটুনি, কাঠ ঠোকরা, কোকিল, ডাহুক, ক্যাসমেচি, বাবুই, মাছরাঙা, বটর, টেইটেরা, গোমড়া ও প্যাচাসহ অনেক পাখিকে আর দেখা যায় না। শোনা যায় না এসব পাখির ডাক। গ্রামবাংলার অতি পরিচিত যে পাখি ‘বউ কথা কও’ বলে গ্রামের প্রতিটি মানুষকে মাতিয়ে তুলতো সেই পাখির দেখা আর পাওয়া যায় না।
বর্তমান প্রজম্ম চেনেনা এসব পাখি। এসব পাখির ডাকও শোনেনা কোনদিন। ফলে শিশু কিশোরদের কাছে দিন দিন হয়ে যাচ্ছে এসব পাখি ইতিহাস। পাখি কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্ষেতে কীটনাশকের ব্যবহার অনেকাংশেই দায়ী।
কৃষকরা এখন বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে সব সময় কীটনাশক প্রয়োগ করে। এতে করে পাখির খাদ্য ফড়িং, ফুতি, প্রজাপতি, মশা, লেদা পোকা, গোয়ালীসহ বিভিন্ন প্রকার কীটপতঙ্গ মরে যায় বা আক্রান্ত হয়। পাখিরাও দিনের পর দিন এসব খেয়ে মারা যাচ্ছে।
তাছাড়া পাখি শিকারীদের নিষ্ঠুরতা তো রয়েছেই। কখনও কখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা ঝড়ে পাখির বাসা ভেঙ্গে পাখর ছানার মৃত্যু ঘটে ও ডিমগুলো নষ্ট হয়ে যায়। পাখির বিলুপ্তি ঘটায় যেমনি জীববৈচিত্রের সংকট বাড়ছে, তেমনি আমরা হারিয়ে ফেলছ সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ।
গ্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় পাখির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই কেবল মানব জাতিই জীবের প্রতি দয়া, সহনশীলতা এবং সচেতনতাই রক্ষা করতে পারে পাখির স্বাভাবিক বেঁচে থাকা বংশবিস্তারের সুদৃঢ় ভবিষ্যৎ।
জানা যায়, বাংলাদেশে ৬৫০ প্রজাতির পাখি আছে। এর মধ্যে ৩০টি বর্তমানে বিলুপ্ত, অতীতে ছিল। ৬২০টি প্রজাতির মধ্যে ১৪৩টি প্রজাতির পাখি বাংলাদেশে কালেভদ্রে দেখা যায়। বাকি ৪৭৭ প্রজাতির পাখি বাংলাদেশে নিয়মিত দেখা যায়। এই ৪৭৭ প্রজাতির মধ্যে ৩০১টি বাংলাদেশের ‘ধাবাসিক’ পাখ যেগুলো স্থায়ীভাবে এদেশে বাস করে।

বাকি ১৭৫টি বাংলাদেশের ‘পরিযায়ী’ পাখি যেগুলো খন্ডকালের জন্য নিয়মিতভাবে এদেশে থাকে। এই ১৭৬ প্রজাতির মধ্যে ১৬০টি শতে এবং ৬টি গ্রীষ্মে বাংলাদেশে থাকে, বাকি ১০টি বসন্তে এদেশে থাকে, যাদেরকে ‘পান্থ পরিযায়ী’ নামে আখ্যায়িত করা হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *