আগের দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বক্তব্যও উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় বিদেশি মেহমানরা ছিলেন, তাঁদের সামনে খুব বড় গলায় বলেছেন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, তারা গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে চায়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অনৈতিকভাবে দেশ শাসন করছে। তারা গণতন্ত্রের সব স্তম্ভ ভেঙে দিয়েছে। ভোটের অধিকার, মানুষের কথা বলার, লেখার, সমবেত হওয়ার, প্রতিবাদ করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এরা এমন একটি কর্তৃত্বপরায়ণ সরকার যারা প্রতি মুহূর্তে মিথ্যাচার করে জনগণের দৃষ্টি ফেরানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের অপকৌশলের আশ্রয় নেয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ক্ষমতায় এসে ১৯৭২ থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তাদের দুঃশাসনের কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছে। সে কথাটা আমরা অনেকে ভুলে গেছি। তখন তারা সবক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছে। তিনি বলেন, আজ যুগ পাল্টেছে, সময় পাল্টেছে, বিভিন্ন ব্যাখ্যাও পাল্টেছে, এখন গণতন্ত্রের ব্যাখ্যাও পাল্টে গেছে। সেই জায়গায় আসছে উন্নয়ন না গণতন্ত্র। তারা বলছে, উন্নয়ন আগে, পরে গণতন্ত্র।
ফখরুল বলেন, আজকে আরেকটি কথা আসছে, ইফেক্টিভ গভর্নমেন্ট। অর্থাৎ, যারা অত্যাচার-নির্যাতন করে, দমননীতি চালিয়ে বিরোধী দলকে নিশ্চুপ করে রাখতে পারে, সে সরকার হচ্ছে ইফেক্টিভ গভর্নমেন্ট। এর মধ্যে দিয়ে তারা বাংলাদেশের জনগণের রক্ত দিয়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হরণ করছে। এখন তারা স্বপ্ন দেখছে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে। সে স্বপ্ন তারা দেখতে শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। এ কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রস্তুতির দরকার কি? আপনারা তো গতবার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় চলে এসেছেন বিনা ভোটে। ভোটের বা দরকার কি? ঘোষণা করে দিলেই হয়, আমরা আবার পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় চলে গেলাম। তাহলে তো এ নাটকের প্রয়োজন নেই।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে ‘সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নের সহযোগী’ মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘এদের তো বিচার হওয়ার উচিত। সময় যদি আসে তাহলে অবশ্যই এদের বিচার হবে। আমরা নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন চাই। অন্যথায় কারও বশংবদ, সাজানো নির্বাচন কমিশন জনগণ মেনে নিবে না।’
বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফসার আহমদ সিদ্দিকীর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক জাহানারা সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান প্রমুখ।