মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বাধীন, আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। পিছনের ইতিহাস আমরা সবাই জানি। আমরা বা আমাদের রাজনৈতিক দল গুলো কতটুকু গনতন্ত্রমনা যা তারা চর্চা করে, তা সকলের জানা। নিকট অতীতের দিকে যদি তাকাই তবে স্পষ্ট যে, ১৯৯৬ সনে বিএনপি একতরফা কথিত ভোট দিয়ে ১৫দিনের সরকার গঠন করেছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী আওয়ামীলীগ বিএনপির পদাঙ্ক অনুসরণ করে ক্ষমতায় আসে। চলছে প্রায় ৩ বছর। এর আগে বে-আইনীভাবে দুই বছর দেশ চালিয়েছে একটি সেনাসমর্থিত সরকার। ৮১ থেকে ৯০ এরশাদ সাহেব জোরকরে ক্ষমতায় ছিলেন।
পূর্বের ইতিহাস জানা থাকায় ৯০ পরবর্তি সময়ে আমাদের দেশে গণতন্ত্র কতটুকু সুরক্ষিত আছে তাও আমরা জানি। মানে হল, এখন আর ভোট দিতে হয় না। ভোট ছাড়াই পাশ হওয়া যায়। এটা হল দেশের মালিক জনগনের ভোটাধিকারের অবস্থা। এখন আসি গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে ভোটাধিকারের পরিস্থিতি মূল্যায়নে।
আমরা বিএনপির সম্মেলন দেখলাম। জাতীয় পার্টির সম্মেলনও দেখলাম। এখন দেখছি আওয়ামীলীগের সম্মেলন। এ সকল সম্মেলনে কাউন্সিলররা দলে দলে যায়। খাওয়া দাওয়া আনন্দ ফূর্তি হয়। দেশ ও জনগনের কল্যানে মিডিয়ায় নেতাদের ভাষন হৃদয়ে কম্পন সৃষ্টি করে। মানুষ আশায় বুক বাঁধে নতুন করে। কিন্তু শেষে দেখা যায়, একটি প্রেসনোট দিয়ে কমিটি গঠন হয়ে যায়। অবশ্য এটা হয় সঠিক ভাবেই। কারণ কাউন্সিলররা ভোট না দিয়ে দলীয় প্রধানকে দায়িত্ব দেয়ায় আর ভোটের প্রয়োজন হয় না। তাই প্রেসনোটই কমিটি ঘোষনা করে দিতে পারে।
আমরা ধন্য যে ,আমরা ভক্ত তাই। ভক্তি শ্রদ্ধা আর বিশ্বাস ্আমাদের সব সময় নতুন করে আশার ঝিলিক দেয়। মনের ক্যানভাসে নানা স্বপ্নের আলপনা আঁকি আমরা। এটা বাঙালীদের ঐতিহ্যৃ। তাই সম্মেলন গুলোতে আমরা যাই আনন্দ উল্লাস করে দায়িত্ব দিয়ে ঘরে ফিরি। এতে আমরা বিশ্বাসী জাতি হিসেবেও ইতিমধ্যে সুনাম কুঁড়িয়েছি অনেক।
পরিস্থিতি বলছে, আমরা অতি বিশ্বাসী হয়ে গেছি। আবার অতিমাত্রায় নৈতিকও বটে। ফলে আমাদের দেশের জনগনকে এখন আর ভোট দিতে হয় না। রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলরদেরও ভোট দেয়ার প্রয়োজন নেই। একই সঙ্গে কোন দল, অন্য দলের কাউন্সিলে আমন্ত্রন পেলেও যায় না। এটা রাজনৈতিক শৃষ্টাচার লংঘন না বলে বলতে হয় রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পর পরস্পরের প্রতি অতিবিশ্বাস ও শ্রদ্ধাবোধ থাকার প্রমান। তারা আসে নি তাই আমরা যাই নি, এটা যদি গনতন্ত্র চর্চা বা রাজনৈতিক শৃষ্টাচারকে সুরক্ষিত করে তবে এটাই ঠিক। কারণ আমরা রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস করি বলে কথা।
জাতি আশা করে, এখনো সময় আছে, রাজনীতিবিদরা জনগনের না বলা কথা বুঝে ভবিষৎ চলবেন। গণমাধ্যমে চিৎকার চেঁচামেচি না করে নীরব ভাষা গুলো অনুধাবন করে দেশপরিচালনা করলে বা সরকারের বিরোধীতা করলে দেশ ও জাতির মঙ্গল।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম