ঢাকা; দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
গতকাল সকাল সোয়া ১১টায় আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। সেখানে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তাদের অভ্যর্থনা জানান বিএনপির নেতারা। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে এ আমন্ত্রণপত্র দেন। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক রিয়াজুল কবীর কাওসার, হাসান তারিক আরিফ ও আনিসুর রহমান। এ সময় বিএনপি মহাসচিব প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে তাদের চা-চক্রে আপ্যায়ন করেন। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন ও বেলাল আহমেদসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে মৃণাল কান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আমন্ত্রণ জানাতে এখানে এসেছি। দাওয়াত দিয়েছি। আশা করি তারা আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, আমাদের সম্মেলনে যোগদান করবেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের চর্চা ও রীতিনীতিকে সামনে রেখে আমরা আমাদের জাতীয় সম্মেলনে দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বাদ রেখেছি শুধুমাত্র স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। বঙ্গবন্ধু আত্মস্বীকৃতি কোনো শক্তি অথবা এদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা যারা বিশ্বাস করে না তারা ছাড়া সকল রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মহান মিলন ক্ষেত্রে রূপান্তরিত করতে পারি। পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুঃখজনকভাবে আওয়ামী লীগ সঠিক রাজনীতির মূল সংকটটাই ধরতে পারছে না। মূল সংকট নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া। যে পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে আসছেন। এভাবে কোনো দিনই জনগণের সঠিক প্রতিনিধিরা প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে না। সেটা কখনই জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলন উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও আমাদেরকে (বিএনপি) আমান্ত্রণ জানানোর কারণে আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা খুশি হতাম যদি তারা বিএনপির কাউন্সিলে আসতেন। দুঃখজনক হলেও সত্য তারা শুধু আসেনই না, তারা বিভিন্নভাবে বিএনপির কাউন্সিলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। বিএনপি প্রত্যাশা করেছিল অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো আওয়ামী লীগও বিএনপির কাউন্সিলে আসবেন। গণতান্ত্রিক রাজনীতি পরিবর্তনের নতুন ধারার শুভ সূচনা করবেন। কারণ তারাই বর্তমানে ক্ষমতায় আছেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করি যে গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে তাদের হাতে, সেই গণতন্ত্রকে তাঁরা এ কাউন্সিলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেবেন। এই কাউন্সিল থেকে তার সূচনা তাঁরা করবেন। আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিএনপির যোগদানের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মির্জা আলমগীর বলেন, বিএনপি ইতিবাচক রাজনীতি করে এবং বিশ্বাস করে। আমন্ত্রণ পেয়েছি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। উল্লেখ্য, আগামী শনিবার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের দুইদিনব্যাপী ২০তম জাতীয় কাউন্সিল শুরু হবে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন প্রাঙ্গণে গত ১৯শে মার্চ বিএনপির একদিনব্যাপী ৬ষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল, যাতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে আমন্ত্রণ জানালেও তাদের কেউ যোগ দেননি।