ঢাকা; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি ও অনিয়ম ধরবে এবার সফটওয়্যার। শুধু অনিয়ম-দুর্নীতি নয়, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য দৈনিক ইনপুট হবে এই সফটওয়্যারে। এর মাধ্যমে বের হয়ে আসবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক চিত্র। জানা যাবে শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের সকল তথ্য। বন্ধ হবে অনিয়ম ও দুর্নীতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এ কাজের দায়িত্ব পেয়েছে এমপিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অডিটের দায়িত্বে থাকা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। আর এ পদ্ধতির নাম দেয়া হয়েছে পিয়ার ইন্সপেকশন। এর মাধ্যমে দেশের ৩৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মনিটরিংয়ের আওতায় আসবে। আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই সফটওয়্যারের ডামি উদ্বোধন করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এই সফটওয়্যারের কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সফটওয়্যার মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত, প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আনবে। যে কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে তথ্য জানতে পারবেন। অভিভাবকরা ঘরে বসে ছেলেমেয়ের ক্লাসে উপস্থিতি ও ফলাফল জানতে পারবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি নজরদারি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। শিক্ষকরাও ক্লাস ফাঁকি দিতে পারবেন না।
ডিআইএ’র সূত্র জানায়, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমমূল্যায়ন পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এর জন্য শিক্ষার্থী, পিতা-মাতা এবং তাদের অবর্তমানে একজন অভিভাবক-এ চার ব্যক্তির মোবাইল নম্বর, বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা সফটওয়্যারে দিতে হবে। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে শিক্ষার্থীর ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সকল তথ্য সফটওয়্যারে থাকবে। শিক্ষক, কর্মচারী এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরও তথ্য দিতে হবে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারীর দৈনিক হাজিরা সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপডেট করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে আইডি কার্ড পাঞ্চের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকতে হবে। এর মাধ্যমে অটোমেটিক ওয়েবসাইটে হাজিরা কাউন্ট হবে। পরবর্তীতে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হাজিরা দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের দৈনিক আয়-ব্যয়সহ সকল তথ্য সফটওয়্যারে আপডেট করতে হবে। কোনো অসঙ্গতি পেলে ডিআইএ’র কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক এমএসএস দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেবে। ম্যাসেজটি না পড়া পর্যন্ত আনরিড সাইন দেখাবে। প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক পরিদর্শন করবে।
সূত্র আরো জানায়, সারা দেশের ৩৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের কাছে শিক্ষামন্ত্রী বা সচিবের তাৎক্ষণিক বার্তা ভয়েস এসএমএস বা এসএমএসের মাধ্যমে তাদের মোবাইলে চলে যাবে। প্রতিষ্ঠান থেকে সফটওয়্যারের মাধ্যমে ১৭ ধরনের তথ্য ইনপুট দিতে হবে। তথ্যগুলো হলো, শিক্ষকের পেশাদারিত্ব-শ্রেণি পাঠদান মূল্যায়ন, শিক্ষকের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য (এসিআর), প্রতিষ্ঠান প্রধানের একাডেমিক কার্যক্রম মূল্যায়ন, শিক্ষার্থীর কৃতিত্ব মূল্যায়ন, ক্লাস রুটিন পর্যালোচনা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সমাবেশ, শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ, স্যানিটেশন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ, শিক্ষার্থীর আসনব্যবস্থা, মিলনায়তন, পাঠাগার, বিজ্ঞানাগার, ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাবের তথ্য, শিক্ষার্থী ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা যাচাই, আয়-ব্যয় বিবরণী, সহশিক্ষা কার্যক্রম ও অভিভাবক-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়গুলো অনলাইনের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। এ জন্য সফটওয়্যারের পাসওয়ার্ড প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দেয়া হবে। কোনো সমস্যা হলে হট লাইনে কল দিয়ে সেবা গ্রহণ করা যাবে। প্রতিষ্ঠানের তথ্য সঠিক কিনা তা যাচাই করার জন্য প্রতি শিক্ষাবর্ষের শেষে সমমানের এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান আরেক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন (সমজাতীয়) করবেন। এক মাসের মধ্যে পরিদর্শন কাজ শেষ করতে হবে।
ডিআইএ কর্মকর্তারা জানান, আইটি শিক্ষকরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে তথ্য ইনপুট দেবেন। কাছাকাছি এক প্রতিষ্ঠান প্রধান আরেক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবেন। এসময় চিঠি দিয়ে উভয়কে জানিয়ে দেয়া হবে। পরিদর্শনকারী ওই দিনের ভ্রমণ ভাতা নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে নেবেন। প্রতিষ্ঠান নিজের দেয়া তথ্য এবং পিয়ার ইন্সপেক্টরের তথ্য যাচাই করে প্রতিষ্ঠানের গ্রেডিং করা হবে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য গত বছরের জুন মাসের মধ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরির নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে।
পদ্ধতির সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য গত বছরের ১০ই জুন রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) মিলনায়তনে শিক্ষাবিদসহ মাঠ পর্যায়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এরপর গত বছরের ১৮ই অক্টোবর পরীক্ষামূলক ভাবে রাজধানীর পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সিদ্ধেশ্বরী মহিলা কলেজ, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মদিনাতুল উলূম মডেল মহিলা মাদরাসা, মহানগর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মমতাজ উদ্দিন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ।
ডিআইএ কর্মকর্তাদের দাবি, ২০৪১ সালের উপযোগী করে সফটওয়্যারটি তৈরি করা হয়েছে। এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য ওয়েবসাইট ও সফটওয়্যার তৈরি, সার্ভারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ ১০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছিল ডিআইএ। কিন্তু প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় স্বেচ্ছায় তারা এসব তৈরি করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিদর্শন ও নিরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ডিআইএ’র কর্মকর্তাদের মতে, বর্তমান মনিটরিং পদ্ধতিতে সীমিত জনবলে বছরে দেড় হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন সম্ভব হয় না। এমনও দেখা গেছে পরিদর্শন টিম একটি প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ হয় ৫ বছর পর। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা সরকারের নজরদারির বাইরে থেকে যাচ্ছে। তবে প্রস্তাবিত ডিজিটাল মনিটরিং পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা গেলে সব প্রতিষ্ঠানই নিয়মিত পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। এ পদ্ধতির কারণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যুক্ত হবে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ধরনের অনিয়ম রোধ করা যাবে।
ডিআইএ’র যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ সরকার বলেন, স্বমূল্যায়ন ও সমজাতীয় পরিদর্শন-এ দুই পদ্ধতির মাধ্যমে মূলত আমরা দৈনিক ভিত্তিতে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবো। এর মাধ্যমে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি- এ চার ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ও আর্থিক চিত্র, বিশেষ করে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের যেকোনো তথ্য জানা যাবে। তিনি আরো বলেন, পরীক্ষামূলক চালু করা পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের আইসিটি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সফটওয়্যার দিয়েছি। সুপারভাইসও করেছি। তাদের তথ্য ইনপুট দেয়া শেষ। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে পিয়ার ইন্সপেকশনের ডেমো মন্ত্রী ও সচিব স্যারকে দেখাবো। তাদের কোনো পরামর্শ থাকলে তা যুক্ত করা হবে। এরপর ঢাকার বাইরে পরীক্ষামূলক কাজ করার জন্য সফটওয়্যার ওপেন করে দেবো। ডিসেম্বরের মধ্যেই সারা দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। দুর্গম এলাকার প্রতিষ্ঠানে এ পদ্ধতি চালুতে কোনো সমস্যা হবে না বলে তিনি দাবি করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সফটওয়্যার মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত, প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আনবে। যে কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে তথ্য জানতে পারবেন। অভিভাবকরা ঘরে বসে ছেলেমেয়ের ক্লাসে উপস্থিতি ও ফলাফল জানতে পারবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি নজরদারি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। শিক্ষকরাও ক্লাস ফাঁকি দিতে পারবেন না।
ডিআইএ’র সূত্র জানায়, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমমূল্যায়ন পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এর জন্য শিক্ষার্থী, পিতা-মাতা এবং তাদের অবর্তমানে একজন অভিভাবক-এ চার ব্যক্তির মোবাইল নম্বর, বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা সফটওয়্যারে দিতে হবে। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে শিক্ষার্থীর ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সকল তথ্য সফটওয়্যারে থাকবে। শিক্ষক, কর্মচারী এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরও তথ্য দিতে হবে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারীর দৈনিক হাজিরা সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপডেট করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে আইডি কার্ড পাঞ্চের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকতে হবে। এর মাধ্যমে অটোমেটিক ওয়েবসাইটে হাজিরা কাউন্ট হবে। পরবর্তীতে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হাজিরা দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের দৈনিক আয়-ব্যয়সহ সকল তথ্য সফটওয়্যারে আপডেট করতে হবে। কোনো অসঙ্গতি পেলে ডিআইএ’র কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক এমএসএস দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেবে। ম্যাসেজটি না পড়া পর্যন্ত আনরিড সাইন দেখাবে। প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক পরিদর্শন করবে।
সূত্র আরো জানায়, সারা দেশের ৩৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের কাছে শিক্ষামন্ত্রী বা সচিবের তাৎক্ষণিক বার্তা ভয়েস এসএমএস বা এসএমএসের মাধ্যমে তাদের মোবাইলে চলে যাবে। প্রতিষ্ঠান থেকে সফটওয়্যারের মাধ্যমে ১৭ ধরনের তথ্য ইনপুট দিতে হবে। তথ্যগুলো হলো, শিক্ষকের পেশাদারিত্ব-শ্রেণি পাঠদান মূল্যায়ন, শিক্ষকের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য (এসিআর), প্রতিষ্ঠান প্রধানের একাডেমিক কার্যক্রম মূল্যায়ন, শিক্ষার্থীর কৃতিত্ব মূল্যায়ন, ক্লাস রুটিন পর্যালোচনা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সমাবেশ, শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ, স্যানিটেশন পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ, শিক্ষার্থীর আসনব্যবস্থা, মিলনায়তন, পাঠাগার, বিজ্ঞানাগার, ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাবের তথ্য, শিক্ষার্থী ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা যাচাই, আয়-ব্যয় বিবরণী, সহশিক্ষা কার্যক্রম ও অভিভাবক-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়গুলো অনলাইনের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। এ জন্য সফটওয়্যারের পাসওয়ার্ড প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দেয়া হবে। কোনো সমস্যা হলে হট লাইনে কল দিয়ে সেবা গ্রহণ করা যাবে। প্রতিষ্ঠানের তথ্য সঠিক কিনা তা যাচাই করার জন্য প্রতি শিক্ষাবর্ষের শেষে সমমানের এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান আরেক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন (সমজাতীয়) করবেন। এক মাসের মধ্যে পরিদর্শন কাজ শেষ করতে হবে।
ডিআইএ কর্মকর্তারা জানান, আইটি শিক্ষকরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে তথ্য ইনপুট দেবেন। কাছাকাছি এক প্রতিষ্ঠান প্রধান আরেক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবেন। এসময় চিঠি দিয়ে উভয়কে জানিয়ে দেয়া হবে। পরিদর্শনকারী ওই দিনের ভ্রমণ ভাতা নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে নেবেন। প্রতিষ্ঠান নিজের দেয়া তথ্য এবং পিয়ার ইন্সপেক্টরের তথ্য যাচাই করে প্রতিষ্ঠানের গ্রেডিং করা হবে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য গত বছরের জুন মাসের মধ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরির নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে।
পদ্ধতির সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য গত বছরের ১০ই জুন রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) মিলনায়তনে শিক্ষাবিদসহ মাঠ পর্যায়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এরপর গত বছরের ১৮ই অক্টোবর পরীক্ষামূলক ভাবে রাজধানীর পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সিদ্ধেশ্বরী মহিলা কলেজ, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মদিনাতুল উলূম মডেল মহিলা মাদরাসা, মহানগর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মমতাজ উদ্দিন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ।
ডিআইএ কর্মকর্তাদের দাবি, ২০৪১ সালের উপযোগী করে সফটওয়্যারটি তৈরি করা হয়েছে। এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য ওয়েবসাইট ও সফটওয়্যার তৈরি, সার্ভারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ ১০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছিল ডিআইএ। কিন্তু প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় স্বেচ্ছায় তারা এসব তৈরি করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিদর্শন ও নিরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ডিআইএ’র কর্মকর্তাদের মতে, বর্তমান মনিটরিং পদ্ধতিতে সীমিত জনবলে বছরে দেড় হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন সম্ভব হয় না। এমনও দেখা গেছে পরিদর্শন টিম একটি প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ হয় ৫ বছর পর। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা সরকারের নজরদারির বাইরে থেকে যাচ্ছে। তবে প্রস্তাবিত ডিজিটাল মনিটরিং পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা গেলে সব প্রতিষ্ঠানই নিয়মিত পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। এ পদ্ধতির কারণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যুক্ত হবে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ধরনের অনিয়ম রোধ করা যাবে।
ডিআইএ’র যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ সরকার বলেন, স্বমূল্যায়ন ও সমজাতীয় পরিদর্শন-এ দুই পদ্ধতির মাধ্যমে মূলত আমরা দৈনিক ভিত্তিতে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবো। এর মাধ্যমে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি- এ চার ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ও আর্থিক চিত্র, বিশেষ করে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের যেকোনো তথ্য জানা যাবে। তিনি আরো বলেন, পরীক্ষামূলক চালু করা পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের আইসিটি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সফটওয়্যার দিয়েছি। সুপারভাইসও করেছি। তাদের তথ্য ইনপুট দেয়া শেষ। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে পিয়ার ইন্সপেকশনের ডেমো মন্ত্রী ও সচিব স্যারকে দেখাবো। তাদের কোনো পরামর্শ থাকলে তা যুক্ত করা হবে। এরপর ঢাকার বাইরে পরীক্ষামূলক কাজ করার জন্য সফটওয়্যার ওপেন করে দেবো। ডিসেম্বরের মধ্যেই সারা দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। দুর্গম এলাকার প্রতিষ্ঠানে এ পদ্ধতি চালুতে কোনো সমস্যা হবে না বলে তিনি দাবি করেন।