ঢাকা; নারীদের নিয়ে অশালীন, নোংরা মন্তব্যের জন্য ডনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তার স্ত্রী, সাবেক মডেল মেলানিয়া ট্রাম্প। ট্রাম্প নারীদের নিয়ে যে নোংরা কথা বলেছেন তাকে মেলানিয়া ‘ছেলেমি’ (বয় টক) বলে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, এসবই সাজাচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। যেসব নারী তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনছেন তিনি তাদের অতীত খুঁজে দেখার আহ্বান জানান। বলেন, তারা কি একবারও এসব নারীর অতীত যাচাই করে দেখেছেন? এসব অভিযোগের কি কোনো ভিত্তি আছে। তবে ২০০৫ সালের যে অডিও-ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে তাতে ট্রাম্প নারীদের নিয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মেলানিয়া। বলেছেন, আমার স্বামীর মুখ থেকে এর আগে কখনও আমি এমন ভাষা শুনি নি। তাই ওই টেপের ভাষ্য শুনে আমি বিস্মিত। ওই অডিও ভিডিও প্রকাশ পায় গত ৭ই অক্টোবর। তারপর এতদিন নীরব ছিলেন মেলানিয়া। এরপর সোমবার রাতে তিনি সেই নীরবতা ভেঙে স্বামীর পক্ষ নিলেন। প্রথমবার কথা বললেন মিডিয়ার সঙ্গে। তিনি সাক্ষাতকার দিয়েছেন সিএনএনের অ্যান্ডারসন কুপারকে। সেখানেই তিনি খুলে বলেন সব কথা। ওই সাক্ষাতকারে মেলানিয়া বলেন, ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা বলেছেন, কোনো নারীর অসম্মতিতে তাকে চুমু দেয়া বা জড়িয়ে ধরা যৌন নির্যাতন। তার এ মতের সঙ্গে একমত পোষণ করেন মেলানিয়া। তিনি বলেন, সব নির্যাতনই আদালতের আইনের চোখে দেখা উচিত। একই সঙ্গে যেকোনো অভিযোগকারী হোন তিনি একজন পুরুষ বা নারী প্রমাণ ছাড়া তার অভিযোগ মারাত্মক ক্ষতিকর ও অন্যায্য। মেলানিয়া বলেন, আমি আমার স্বামীকে বিশ্বাস করি। যখন ছেলেরা বড় হয়ে ওঠে তারা একজন আরেকজনের কাছে নিজের প্রকাশ ঘটাতে চায়, মেয়েদের নিয়ে তখন তারা যে ধরনের কথাবার্তা বলে ট্রাম্পও সেরকমই কথা বলেছেন। কিন্তু তার এ কথায় অবশ্যই আমি বিস্মিত। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত পিপল ম্যাগাজিনের সাংবাদিক নাতাশা স্টোয়নোফ অভিযোগ করেছেন তার প্রথম বিয়ে বার্ষিকীর একটি রিপোর্ট কভার করতে গেলে তার প্রতি অন্যায্যভাবে অগ্রসর হয়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এ প্রসঙ্গে মেলানিয়া ট্রাম্প বলেন, পিপল ম্যাগাজিনে যে কাহিনী এ নিয়ে ছাপা হয়েছিল তার লেখিকা বলেছেন, আমার স্বামী তাকে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে চুমু দেয়া শুরু করেন। একই রিপোর্টে তিনি আমাকে নিয়েও লিখেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, তিনি আমাকে ৫ম এভিনিউতে দেখেছেন। আমি তাকে বলবো, নাতাশা, আপনাকে কেন আমরা আর দেখতে পাই না? তার সঙ্গে আমার আর কোনো বন্ধুত্ব নেই। আমি তাকে আর স্বীকৃতি দেবো না। তাই পিপল ম্যাগাজিন যা বলেছে তা মিথ্যা। ২০০৫ সালের ওই রগরগে মন্তব্যের জবাবে মেলানিয়া বলেছেন, তার স্বামীকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। তাই তিনি অমন মন্তব্য করেছেন। এসব কথাকে মেলানিয়া ছেলেমি বলে মনে করেন। তিনি বলেন, আমি আমার স্বামীকে বলেছি, তুমি জানো এসব ভাষা অসংগতিপূর্ণ। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমি বিস্মিত। কারণ, আমি যাকে (স্বামী হিসেবে) চিনি তিনি এমন মানুষ নন। মেলানিয়া বলেন, ওই টেপটিতে যদি খেলায়ল করেন তাহলে দেখতে পাবেন সেখানে কোনো ক্যামেরা ছিল না। ছিল শুধু মাইক্রোফোন। আমার মনে হয় তারা যদি জানতেন যে সেখানে মাইক্রোফোন আছে তাহলে হয়তো এমন কথা বলতেন না। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ওই টেপে ডনাল্ড ট্রাম্প ও রেডিও হোস্ট বিলি বুশকে নারী নিয়ে রগরগে আলোচনা করতে শোনা যায়। মেলানিয়া বলেন, ওই দু’জন ছেলেমি আলোচনায় মেতে ছিলেন। ট্রাম্পকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন উপস্থাপক। তিনি নোংরা প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন। নিজের স্বামীর প্রসঙ্গে মেলানিয়া বলেন, তিনি খোলামেলা কথা বলেন। তিনি যা মনে করেন তাই বলে দেন। একথা আপনারা জানেন। তবে আমি জানি তিনি নারীদের শ্রদ্ধা করেন। তার বিরুদ্ধে যেসব নারী বিষয়ক অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। তাই তিনি এর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আমি তার ক্ষমা প্রার্থনাকে মেনে নিয়েছি। আশা করি আমেরিকার মানুষও তাকে ক্ষমা করে দেবে, যদিও ওইসব কথা বলা হয়েছে অনেক আগে।