ঢাকা; শামীম জামান। এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা ও নির্মাতাদের মধ্যে একজন। বিশেষত গ্রামীণ পটভুমিতে নির্মাণ হওয়া নাটকে অভিনয়ের জন্য বেশ খ্যাতি রয়েছে তার। আর নির্মাণের ক্ষেত্রেও তিনি গ্রামীণ গল্প নিয়ে কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন। তবে একই ফ্রেমে সবসময় বন্দি থাকতে চান না বলে ২০১৪ সাল থেকে একটি শহর কেন্দ্রিক গল্পের নাটক নির্মাণের পরিকল্পনা করেন শামীম জামান। সে পরিকল্পনার পথ ধরেই গল্প তৈরি করে নির্মাণ করেন একটি ধারাবাহিক নাটক। নাম ‘ঝামেলা আনলিমিটেড’। এটাই কোনো শহুরে গল্প নিয়ে শামীম জামানের নির্মিত প্রথম নাটক। এখন প্রচার চলছে স্যাটেলাইট চ্যানেল আরটিভিতে। এ ধারাবাহিকের গল্প কিভাবে মাথায় এলো জানতে চাইলে শামীম জামান বলেন, নাটকের গল্প তো চাইলেই বানানো যায়। কিন্তু আমি যা করি সেটা কিছুটা রিয়েলিস্টিক করার চেষ্টা করি। অনেক বছর আগে আমি ঢাকায় আসি। তখন মিরপুরে এক খালাতো বোনের বাসায় থাকি। সেখানে অতিথি হিসেবে যখন থাকা শুরু করি বেশকিছু ঝামেলার সামনে পড়ে যাই। তাদের পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া, শহুরে বাড়িতে থাকাতে অভ্যস্ত হওয়া সহ বেশকিছু ঝামেলা তৈরি হয়ে যায়। ঠিক তখন থেকেই আমি চিন্তা করি এই বাড়ির মানুষগুলোকে আমার একটি গল্পে রূপ দেয়ার। অনেক বছর পর গল্পটি লিখলাম। চিত্রনাট্য সাজালাম। সঙ্গে আরও কিছু নতুন চরিত্র আমি নিজেও যোগ করেছি। সবমিলিয়ে বলতে পারেন, আমার জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে এ নাটকটি নির্মাণ করেছি। শহরের মানুষ নিয়ে নির্মাণ তো হলো। আর কিছুদিন পর আবারও শামীম জামান চলে যাবেন গ্রামের নাটকে। বাংলাভিশনের জন্য নির্মাণ করবেন নতুন একটি নাটক। এ গল্পটিও বেশ দারুণ বলেই জানান তিনি। নতুন এ নাটকের নাম ‘চাকাম ঘর’। নির্মাণের পাশাপাশি শামীম জামান এ সময়ে প্রচার চলতি আরটিভির ‘অলসপুর’ ও মাছরাঙার ‘শেফালি’ ধারাবাহিক দুটোতে অভিনয় করছেন। নির্মাণ নিয়ে ব্যস্ততার কারণে অনেক প্রস্তাব থাকলেও অভিনয় করা হয় না শামীম জামানের। তাই আগের মতো হরহামেশাই পর্দায় দেখা মেলে না তার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এর মধ্যেও অনেক প্রস্তাব আসে। কিন্তু নাটক নির্মাণেই ব্যস্ত থাকি বলে বিনয়ের সঙ্গে ফিরিয়ে দিতে হয় সেসব প্রস্তাব। দীর্ঘদিন ধরেই নাটকের সঙ্গে আছেন শামীম জামান। নির্মাণ ও অভিনয় দুটোই করে চলেছেন তিনি। সে সঙ্গে চিত্রনাট্যের কাজও করছেন । দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে বর্তমান সময়ের নাটকের হালচাল কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগেই একটু বলে রাখি, আমাদের নাটকের মান কখনোই খারাপ ছিল না। তবে এখন নানামুখি সমস্যায় আমরা মার খেয়ে যাচ্ছি। আমাদের নাটকে ভালো স্ক্রিপ্টের খুব অভাব। লেখকরা চিত্রনাট্য লেখাটা বেশি পেশাদারী করে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে কয়েকদিকে ছোটাছুটি করছেন। যে কারণে ভালো কাজ করতে পারছেন না। আরেকটা হলো শিল্পীদের সিডিউল। ঠিকভাবে তাদের সিডিউল পাওয়া যায় না। অনেকে আছেন যারা সময়মতো সেটে আসেন না। তাদের নিয়েও বিপাকে পড়ে যেতে হয়। আর বিজ্ঞাপনের আধিক্য, বাজেট সহ নানামুখি সমস্যা তো আছেই। এক কথায় হৃদয়ে দাগ কাটার মতো নাটক এখন কম। পর্দায় সদা হাস্যজ্জ্বোল শামীম জামান বাস্তব জীবনেও সবসময় বেশ হাসিখুসি থাকেন। নিজের ব্যক্তিজীবনটা খুব উপভোগ করেন তিনি। শামীম জামান বলেন, আমি মিডিয়াতে কাজ করি। অনেকের ক্ষেত্রে এ নিয়ে ব্যক্তিজীবনে প্রভাব পড়তে দেখেছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি অনেক ভালো আছি। পরিবারে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বেশ সুখে আছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। যেন সবসময় সৎভাবে-ভালোভাবে কাজ করে যেতে পারি।