লন্ডন;মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক নিয়ে ইউরোপজুড়ে টানটান উত্তেজনা যেমন ছিল তেমনি ছিল বিপুল কৌতূহল। কিন্তু সেই বিতর্ক দেখে ইউরোপীয় মিডিয়ায় নেতিবাচক মন্তব্যই এসেছে বেশি। কোনো কোনো মিডিয়া হতাশ হয়ে লিখেছে- ‘এই বিতর্ক ড্রয়িংরুমে বসে দেখার মতো নয়’। জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলের ভাষ্যকার ইনেস পোল বলেছেন, এটি এমন একটি বিতর্ক যা ছিল ঘৃণায় পরিপূর্ণ। এর কোনো গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল না। ট্রাম্প তার নার্ভ বজায় রেখেছেন। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, তিনি জিতে গেছেন। আবার অনেকে যেমনটা আশা করেছিলেন, সেভাবে হিলারিকেও মেধাদীপ্ত জয়ী বলা যায় না।
ইউরোনিউজ ডটকমের মন্তব্য- বিতর্কে কে হেরেছেন? আসলে হেরেছেন মার্কিন জনগণ। মার্কিনিরা তাদের সংবিধান, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা নিয়ে গর্ব করে থাকেন। কিন্তু দ্বিতীয় বিতর্কের রাতটি মার্কিনিদের জন্য বিদ্রূপ বয়ে না আনলেও যথেষ্ট বিব্রত করেছে। বৃটেনের দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, আত্মরক্ষায় ব্যস্ত থাকা ট্রাম্প ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন বেশি, প্রশ্নের ধারে কাছেও যাননি। দ্য ইন্ডিপেডেন্ট মনে করে, লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। আর টাইমস লিখেছে অনুশোচনাহীন ট্রাম্প ছিলেন উদ্দাম। বিবিসি’র শিরোনাম- ট্রাম্প ক্লিনটনের ওপর হিংস্র আক্রমণ করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের শিরোনাম- ‘ট্রাম্প বলেন তিনি শয়তান, হিলারি বলেন তিনি নারীদের লাঞ্ছিত করেছেন’। বার্তা সংস্থাটি আরো খবর দেয় যে, ট্রাম্প-ক্লিনটন বিতর্কের পরে মেক্সিক্যান পেসোর দাম চড়েছে। কিন্তু পুনরায় দরপতন ঘটেছে পাউন্ডের। ফ্রান্সের প্রভাবশালী পত্রিকা লা মন্ড বলেছে, এটা ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি টুইট হওয়া বিতর্ক। পত্রিকাটির সম্পাদকীয় মন্তব্য হলো, ট্রাম্প বিতর্ককে মর্যাদাহীন ও বিপথে চালিত করেছেন। যা হোয়াইট হাউসের প্রার্থীদের কেউ আগে করেননি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, ক্লিনটনকে জেলের হুমকি এবং নারীর সম্ভ্রমহানির জন্য তার স্বামীকে অভিযুক্ত করে ট্রাম্প বিতর্ককে যেভাবে কলুষিত করেছেন, তাতে তার রেটিংয়ে উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা কম। অবশ্য রুশ বার্তা সংস্থা তাস যুক্তরাষ্ট্রের মিডল টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আন্দ্রেই কোরবকভের বরাতে খবর দেয় যে, টেপ কেলেঙ্কারি সত্ত্বেও ট্রাম্প শক্তিশালী অবস্থান নেন। ওই অধ্যাপকের কথায়, ‘বিস্ময়করভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন’। তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু বলেছে, দ্বিতীয় বিতর্কের এজেন্ডায় পররাষ্ট্র বা অভ্যন্তরীণ নীতি নেই, ছিল না অর্থনীতিও। ছিল শুধু ব্যক্তিগত বিষয়, কুৎসায় ভরা।