ঢাকা; শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোড়ার দাগ, আঘাতের চিহ্ন, মাংস প্লাস দিয়ে তুলে নেয়া, ডান হাত ও কোমরের হাঁড় ভাঙ্গা, মাথার চুল কাটা এমন অবস্থায় গতকাল দুপুরে মেয়েটিকে ডিমলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২০০৯ সালে শেখ সুন্ধর গ্রামের আনছের আলীর কন্যা আর্জিনা বেগমকে টাঙ্গাইল জেলার বিশ্বাস বেতকার সিংনাত পাড়ার আমির উদ্দিনের পুত্র তাজুল ইসলামের বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসাবে পাঠানো হয়। মেয়েটি সেখানে দীর্ঘ ৭ বছর থেকে কাজ করছিল। গত ১ বছর থেকে আর্জিনাকে তাজুল ইসলামের স্ত্রী আমেনা বেগম ও কন্যা লাভলী আক্তার নির্মম নির্যাতন করে আসছিল। মেয়েটি ঠিকমতো কথা বলতে পারছে না। মেয়েটি বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোড়ার দাগ, মাংস প্লাস দিয়ে তুলে নেয়া, ডান হাত ও কোমরের হাঁড় ভাঙ্গা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন, মাথার চুল কাটা এমন অবস্থায় গতকাল দুপুরে কাজের মেয়েটিকে ডিমলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩ বোন এক ভাইয়ের মধ্যে আর্জিনা সবার বড়। আর্জিনার মা আনজু বেগম বলেন, ২০০৯ সালের আমার বড় মেয়ে আর্জিনাকে যখন টাঙ্গাইল পাঠাই তখন তার বয়স ৬ বছর। এ সময় স্থানীয় লোকদের সঙ্গে কথা বলে ভালো বাসায় কাজের মেয়ে নিবে জানতে পেরে সেখানে পাঠাই। মেয়েটি প্রথম প্রথম সেখানে ভালোই ছিল। প্রতি ঈদে বাড়ি আসতো আসার সময় পরিবারের জন্য নতুন কাপড় নিয়ে আসতো। গত ৬ মাস থেকে মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে দিতো না ওই পরিবারের লোকজন। যখনই সেখানে ফোন দেই বলে আমি বাইরে আছি বাড়িতে গিয়ে রিং দিবো কিন্তু আর মোবাইলে ফোন দেয় না। গত ঈদুল ফিতরের সময় মেয়েটি বাড়ি আসেনি বলেছিল পরের ঈদে বাড়ি যাবে। কিন্তু কোরবানির ঈদে বাড়ি না আসায় পরিবারের সন্দেহ হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে মেয়েটির দাদা নুর মোহাম্মদ আর্জিনাকে আনতে গিয়ে দেখে সে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। তাকে অনেক কষ্ট করে শনিবার সকালে বাসে টাঙ্গাইল থেকে ডিমলার সুটিবাড়ী বাজার সংলগ্ন নানার বাড়িতে নিয়ে আসে। মেয়েটির অবস্থা দেখে গয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন মেয়েটিকে ডিমলা হাসপাতালে ভর্তি করায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার ইয়াছমিন ইসলাম বলেন, মেয়েটিকে দীর্ঘদিন থেকে নির্যাতন করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোড়ার দাগ রয়েছে। ডান হাতের বাহুর হাঁড় ভাঙ্গা, হাতের নকগুলো সিরিজ ঢুকানো হয়েছে মর্মে মনে হচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্লাস দিয়ে মাংস তুলে নেয়া হয়েছে। সে মারাত্মক অসুস্থ তাকে জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত রংপুর হাসপাতালে স্থানান্তর করা দরকার।