অনলাইন ডন ; যুদ্ধের বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্য দেয়া হচ্ছে ভারতের পক্ষ থেকে। যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এটা কারো স্বার্থে নয়। এমন মন্তব্য করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। অনলাইন ডন এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, উত্তেজনা ও উস্কানি কারো স্বার্থেই দেয়া হচ্ছে না। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনসের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল অসীম বাজওয়া নিয়ন্ত্রণ রেখার একটি কমান্ড পোস্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, উত্তেজনা ও যুদ্ধের প্রচার কারো জন্য সুখকর নয়। আমরা উত্তেজনা সৃষ্টি করি না। সৃষ্টি করতেও চাই না। যুদ্ধের যে বাগাড়ম্বরতা চালানো হচ্ছে তার সবই ভারত থেকে হচ্ছে। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের যেসব স্থানে ভারত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালিয়েছে বলে বলা হচ্ছে তার সাতটির মধ্যে দুটি স্থানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ৪০ জন সাংবাদিককে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এসব সাংবাদিক প্রায় ২০ টি মিডিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদেরকে যে দুটি স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় তা হলো ভিমবার সেক্টরের বাগসার ও হটস্প্রিং সেক্টরের মন্ডল। এ সব স্থানেই ভারতীয় শেলের আঘাতে পাকিস্তানের দু’জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এ স্থানে সাংবাদিকদের সামনে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরেন সেনাবাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডাররা ও সামরিক মুখপাত্র। এ ছাড়া সাংবাদিকরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। ডনের রিপোর্টে বলা হয়, ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের’ কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন স্থানীয়রা। এ সময় জেনারেল বাজওয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের’ কোনো চিহ্নও খুঁজে পাওয়া যায় নি। এর অর্থ হলো, ভারত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের’ যে দাবি করছে তার কোন বাস্তবতা নেই। তিনি এ সময় ভারতের দাবি ও তার স্বচ্ছতার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি আরও বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখার ২৫০ কিলোমিটারে ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বরে যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্তে সহযোগিতা করছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে তিনি ভারতের দাবি তদন্ত করে দেখার জন্য তিনি মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। জেনারেল বাজওয়া ভারতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কেন তারা তাদের দাবিকে যাচাই করে দেখতে দিচ্ছে না তাদের দেশবাসীকে? ডনের ওই রিপোর্টে বলা হয়, ভারতের দাবি করা ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ দাবির বিষয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন জেনারেল বাজওয়া। তিনি স্পর্শকাতর ইস্যুতে বিবৃতি দেয়ার আগে নিশ্চিত তথ্য দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ভারতে ডিজিএমও’র প্রতি। জেনারেল বাজওয়া যেসব প্রশ্ন তুলেছেন তার মধ্যে কয়েকটি এরকম: সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে যেসব মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে তাদের মৃতদেহ কোথায়? ভারত হামলা চালিয়ে যেসব ক্ষয়ক্ষতি করেছে তা কোথায়? কিভাবে সেনারা সেখানে গিয়েছে ও চ্যালেঞ্জ ছাড়া ফিরে যেতে পেরেছে ৫ ঘন্টার জটিল পথ ধরে? ভারত দাবি করেছে, তাদের সেনাবাহিনীর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে সন্ত্রাসীদের ও তাদের যারা সমর্থন দিতেন তাদের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। এক্ষেত্রে সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখায় ‘ফিজিক্যাল ভায়োলেশনের‘ কোনো ঘটনা ঘটে নি। শুধু দু’পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখায় অনুপ্রবেশ অনুমোদন করে না পাকিস্তান। পাকিস্তান থেকে কোন সন্ত্রাস কোথাও চালান দেয়া হয় না। এ সময় তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের দোহাই দিয়ে ভুলপথে পরিচালিত করছেন। এটা দুঃখজনক। এর মাধ্যমে তিনি কাশ্মীরের সমস্যাকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। জেনারেল বাজওয়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ভারতের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলে তাদের যে সীমান্ত সেখানে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যে প্রতিশ্রুতি তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।