৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের নিজ কক্ষ থেকে আকতার জাহানের লাশ উদ্ধার করা হয়। চার বছর আগে তানভীর আহমদের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর আকতার জাহান ওই কক্ষে একাই থাকতেন। ওই কক্ষ থেকে উদ্ধার করা চিরকুটে আকতার জাহান লিখেছিলেন, ‘যে বাবা সন্তানের গলায় ছুরি ধরতে পারে, সে যেকোনো সময় সন্তানকে মেরে ফেলতে বা মরতে বাধ্য করতে পারে।’
ছেলের গলায় ছুরি ধরার ব্যাপারে আকতার জাহানের মৃত্যুর পরদিন তানভীর আহমদ বলেছিলেন, ‘এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি মিথ্যা।’
সোয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছে সে। মুঠোফোনে সে বলেছে, ‘স্ট্যাটাসটি আমি দিয়েছি। আমার মনে হয় এগুলো সবার জানা দরকার। তাই আমি এগুলো লিখেছি।’
ফেসবুকে ‘গলায় ছুরি ধরার’ অভিযোগের বর্ণনায় সোয়াদ লিখেছে, মায়ের সঙ্গে বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সে। বাবার কাছে অনুমতি চাইতে গেলে তিনি তা নাকচ করে দেন। বাবা বলেন, মায়ের সঙ্গে নয়, তিনি ওই বাসায় দিয়ে আসবেন তাকে (সোয়াদ)। তখন সোয়াদ মায়ের সঙ্গে যাওয়ার পরিকল্পনায় বাধা দেওয়ায় রেগে যায়। বাবার কাছে জানতে চায়, কেন বাধা দিচ্ছেন। জবাবে বাবা জানান, বাবা হিসেবে এ অধিকার তাঁর আছে। সোয়াদ পাল্টা জবাব দিয়ে বলে, মায়ের সঙ্গে বেড়ানোর পরিকল্পনা নষ্ট করার কোনো অধিকার তাঁর (বাবা) নেই। সে আরও জানতে চায়, তার মা এমন কী করেছেন যে তাকে এত ক্ষতিকর মনে করছেন বাবা।
বিষয়টি ওই দিন সন্ধ্যায় আবারও বাবার কাছে তোলে সোয়াদ। মায়ের সঙ্গে বেড়ানোর পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার জন্য বিদ্রূপের সুরে বাবাকে ধন্যবাদও জানায়। বাবা রেগে গিয়ে সোয়াদকে মায়ের (আকতার জাহান) সঙ্গে তুলনা করলে সোয়াদ তাকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করতে বাবাকে নিষেধ করেন। এ সময় বাবা তাকে মায়ের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করতে বলেন। সোয়াদ অভিযোগ করে, সে মায়ের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করবে না জানালে তার বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে রান্নাঘর থেকে একটি বড় চাকু নিয়ে এসে তার গলায় ধরেন। এ সময় সোয়াদ বলে, মেরে ফেলতে চাইলে মারো। পরে তার বাবা চাকু ছুড়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে কিছু না বলে নিজের কক্ষে চলে যান।
আকতার জাহানের লাশ উদ্ধারের পরদিন ময়নাতদন্তের পর তাঁর ছোট ভাই কামরুল হাসান আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে রাজশাহী নগরের মতিহার থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।