ইউরোপে ডানপন্থি রাজনীতিকরা ডনাল্ড ট্রাম্পকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয়ী দেখতে চান। তারা মনে করেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে, তাদের আদর্শই বাস্তবায়িত হবে। বদলে যাবে দুনিয়াও। তাই ট্রাম্প তাদের কাছে আসলেই এক ট্রাম্পকার্ড। এখানে বলে রাখা ভালো, ইউরোপ জুড়ে দক্ষিণপন্থি দলগুলোর উত্থান ঘটছে। বিশেষ করে জার্মানির স্থানীয় নির্বাচনে ‘অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি’র বিজয়ের পর পালে হাওয়া লেগেছে। মার্কিন নির্বাচনে তারা ভোট দিতে পারবেন না, ঠিকই। কিন্তু প্রকাশ্যেই ঘোষণা করছেন, তাদের পছন্দের প্রার্থী ট্রাম্প। সুযোগ হলেই তারা তাকে ভোট দিতেন। ট্রাম্পের অভিবাসন ও মুসলিমবিরোধী অবস্থান তাদেরকে দারুণভাবে উজ্জ্বীবিত করেছে। নেতাদের কাছাকাছি আনার জন্য ব্রেক্সিট রেখেছে বড় ভূমিকা। বৃটেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ মিসিসিপিতে ট্রাম্পের সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছেন, তাকে অর্থ দিলেও তিনি হিলারিকে ভোট দেবেন না। মুসলিমবিরোধী পেগিডার বৃটেন শাখার নেতা রবিনসন ট্রাম্পের মুসলিম নিষিদ্ধের পরিকল্পনাকে বিতর্কের জন্য উত্তম বিষয় বলে মনে করেন। ওদিকে, হিলারির অপর নাম যুদ্ধ এবং ধ্বংস- অতি সম্প্রতি সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন ফ্রান্সের ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেত্রী মারিন লি পেন। ফ্রান্সের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ‘মাদাম ফ্রেক্সিট’ হিসেবে খ্যাত মিস পেনও ফারাজের সুরে বলেছেন, তিনি মার্কিন হলে ট্রাম্পকেই ভোট দিতেন। ইতালির চরম ডানপন্থি নর্দান লীগ নেতা মাত্তিও স্যালভিনির কাছে ট্রাম্প একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় নেতা। অন্যদিকে, নেদরল্যান্ডসের ট্রাম্প হিসেবে খ্যাত দেশটির ফ্রিডম পার্টির নেতা গ্রিক উইল্ডার্স-এর মন্তব্য হলো ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া ইউরোপ ও আমেরিকার জন্য মঙ্গলজনক। বেলজিয়ামের ফ্লেমিস ইন্টারেস্ট পার্টির নেতা ফিলিপ ডি উইন্টার ট্রাম্পের সঙ্গে নিজ দলের আদর্শিক মিল খুঁজে পেয়েছেন। গ্রীসে গত সংসদ নির্বাচনে গোল্ডেন ডন পার্টির তৃতীয় স্থানে উঠে আসার নেপথ্যে অভিবাসন নীতিকেই চিহ্নিত করেছে প্রভাবশালী অনলাইন সাময়িকী অল্টারনেট ডট অর্গ। যা ট্রাম্পের নীতিরই অনুসরণ। সুইডিশ ডেমোক্রেট দলের নেতা জিমি একিসন এক টিভি সাক্ষাৎকারে অকপটে বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে একমত যে, অবশ্যই অভিবাসন হ্রাস করতে হবে। দেশে কে ঢুকছে কে বের হচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজখবর রাখতে হবে। ওয়াশিংটন পোস্ট এক নিবন্ধে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানকে ইতিমধ্যে ইউরোপের ডনাল্ড ট্রাম্প হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। জার্মানির ডানপন্থি দল-‘অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি’র চেয়ারম্যান ফ্রাউক পেত্রি তার নিজের দলের সঙ্গে ডনাল্ড ট্রাম্পের মিল দেখছেন বলে মন্তব্য করেছেন।