স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, করিমগঞ্জে বজ্রপাতে নিজ ঘরের মধ্যে এক গৃহবধূ ও তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছে গৃহবধূর মেয়ে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের পূর্বচরকরণশী গ্রামের দুইআনি পাড়ায় বজ্রপাতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, সকালে বৃষ্টির মধ্যে দুইআনি পাড়ার দিনমজুর মারুফ মিয়ার স্ত্রী ললিতা বেগম (৪০), মেয়ে রিমা আক্তার (২০) ও ছেলে রিমন মিয়া (১৩) নিজেদের ঘরে অবস্থান করছিল। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটলে ঘরের মধ্যেই মা ললিতা বেগম ও ছেলে রিমনের মৃত্যু হয়। এছাড়া এ ঘটনায় মেয়ে রিমা আক্তার গুরুতর আহত হলে তাকে পার্শ্ববর্তী তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। একসঙ্গে মা ও ছেলের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দিরাই-শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নে গতকাল বজ্রপাতে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- মাটিয়াপুর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে গ্রামের শামীম মিয়া (৪৫) ও আব্দুল হাসিমের ছেলে তহুর মিয়া (৩৫) এবং টুকদিরাই গ্রামের আজিদ উল্লার ছেলে সেমরান মিয়া (১০)। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শামীম মিয়া ও তহুর মিয়া দল বেদে চাপতি হাওরে মৎস্য শিকারে এসময় বজ্রপাতের আঘাতে মৃত্যুবরণ করেন এবং বাকীরা গুরুতর আহত হন। আহতরা হলেন, মাটিয়াপুর গ্রামের হাফিজ উল্লার ছেলে আ. হামিদ, সাঞ্জব আলীর ছেলে রুবেল মিয়া, রহমত আলীর ছেলে ফারুক মিয়া, আ. হেকিমের ছেলে হোসেন মিয়া, নিয়ামত উল্লার ছেলে, সোরত আলী, কুতুব উদ্দিনের ছেলে সবুজ মিয়া। তাদের দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয় এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাফিজ আলীর ছেলে হামিদ মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এবং টুক দিরাই গ্রোমের আজিদ উল্লার শিশুপুত্র বাড়ির পার্শ্ববর্তী ধানের জমিতে গরু তাড়াতে গিয়ে বজ্রপাতের কবলে পড়ে মৃত্যুবরণ করে।
অপরদিকে জেলার শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বজলার জানান, শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল এলাকায় বজ্রপাতের প্রাণ হারান আরো তিন জন। নিহতরা হলেন, আ. সালামের ছেলে হৃদয় মিয়া (১৮), আক্কল আলীর ছেলে ইমন মিয়া (১০), হায়দর আলীর ছেলে শাহিনুল ইসলাম (২৪)। এসময় শিশু মিয়া, নামের এক কিশোর আহত হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর থেকে জানান, দিনাজপুরে বজ্রপাতে দু’কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এদের একজন খানসামায় মতি চন্দ্র রায় (৩৪)। তিনি উপজেলার পণ্ডিত পাড়ার মৃত মেঘনাধ চন্দ রায়ের ছেলে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগর গ্রামে কৃষি জমিতে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে। আঙ্গারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা আহম্মেদ শাহ জানান, ধানক্ষেতে ইঁদুর মারার সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান কৃষক মতি। অন্যদিকে, দুপুরে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ি ইউনিয়নের ভেড়ম গ্রাামের বাসিন্দা সজমুদ্দিনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন বজ্রাঘাতে মারা যান।
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল থেকে জানান, টাঙ্গাইলের মধুপুরে বজ্রপাতে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরো একজন আহত হয়েছে। গতকাল ভোরে উপজেলার মাকুন্তিনগর গ্রামে এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার ভোরে মধুপুর উপজেলার গারো অধ্যুষিত পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপকভাবে বজ্রপাত হচ্ছিল। এক পর্যায়ে মাকুন্তিনগর গ্রামের নিখিল হাজংয়ের বাড়িতে বজ্রপাত হয়। এতে বাড়ির মালিক নিখিল হাজং (৩৮), তার দুই ছেলে জজ ইং সান (১০) লোটন ইং সান (৮) মারা যায়। এ ঘটনায় নিখিলের স্ত্রী আহত হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মধুপুর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে জানান, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় রাইল্ল্যা গ্রামে বজ্রপাতে মারা গেছেন মইজুদ্দিন (৫৫) নামের এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার সকালে গোয়াল ঘর থেকে গরু বের করার সময় বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলে নিহত হন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এ সময় একটি গরুও মারা যায়।
ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের পুরাপুটিয়া গ্রামে মঙ্গলবার সকালে বজ্রপাতে আকিকুল ইসলাম (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, পুরাপুটিয়া গ্রামের নুরুল আমীন কারীর পুত্র আকিকুল ইসলাম পুটিয়া বিলে জাল দিয়ে মাছ ধরতে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে।