কিশোরগঞ্জ: শোলাকিয়া হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে আটক হওয়া ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো পাঁচ সন্দেহভাজনকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের ১নং আমলগ্রহণকারী আদালতের বিচারক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ. ছালাম খান তাদেরকে অব্যাহতির এই আদেশ দেন। এর আগে সকালে তাদের কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে আদালতে পাঠানো হয়। আদেশের পর আদালত থেকেই পাঁচ সন্দেহভাজন মুক্তি পান। তারা হলেন, করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের মোশারফ হোসেনের ছেলে মামুনুর রশিদ মামুন (২৮), নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মৃত আ. জলিলের ছেলে তারা মিয়া (৫৮), বাজিতপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের সামসুদ্দিনের ছেলে সোহেল মিয়া (২০), কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের পশ্চিম তারাপাশা এলাকার মাহবুবুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম আসিফ (৩২) ও কিশোরগঞ্জ সদরের বয়লা এলাকার মো. আবদুল হাইয়ের ছেলে আহসানউল্লাহ (২৩)। এর আগে সোমবার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই ইমরান হাসান সন্দেহভাজনদের অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে জঙ্গি হামলার ঘটনার সঙ্গে সন্দেহভাজনদের কোন ধরনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ৭ই জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহের অনতিদূরের আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সবুজবাগ এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাদের আটক করে। পরে গত ১১ই জুলাই তাদেরকে ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করার পর কারাগারে পাঠানো হয়। ৫৪ ধারা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আগে আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের জামিন আবেদন করা হলেও সেটি নথিভূক্ত করা হয়। পুলিশ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদালত থেকে অব্যাহতি পেয়ে দীর্ঘ দুই মাস ১৩দিন পর তারা মুক্তি পেলেন। এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইমরান হাসান জানান, জঙ্গি হামলার ঘটনার সাথে সন্দেহভাজনদের কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হয়। শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় পুলিশের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করা পাকুন্দিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বাদী হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক ও পরে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত শফিউল এবং ঘটনাস্থল থেকে আটক স্থানীয় তরুণ জাহিদুল হক তানিমের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে সদর থানায় গত ১০ই জুলাই মামলা করেন। পরবর্তিতে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার মামলায় নিহত জঙ্গি শফিউলের গাইবান্ধার বাড়িওয়ালা আনোয়ার হোসেন (৪৫) কে শ্যোন এ্যারেস্ট দেখিয়ে আদালত থেকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এখন পর্যন্ত এই মামলায় আনোয়ার হোসেন ও জাহিদুল হক তানিম গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মুর্শেদ জামান।