চট্টগ্রামে নগরে এক তরুণ মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার নগরের বারিক বিল্ডিং মোড় এলাকায় ‘সরকারি বিল্ডিং’ নামের ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ ওঠা তরুণের নাম সৌমিক চৌধুরী (২০)। তাঁর বাবার নাম সুখময় চৌধুরী। তিনি আয়কর আইনজীবী হিসেবে ঢাকায় কর্মরত। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় তাঁদের পৈতৃক বাড়ি। নগরের ওই ভবনের তৃতীয় তলায় তাঁর স্ত্রী কুমকুম চৌধুরী (৪৫), বড় ছেলে সোমনাথ চৌধুরী (২৪) এবং ছোট ছেলে সৌমিক চৌধুরী বসবাস করতেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী কুমকুম চৌধুরী নয় মাস ধরে অসুস্থ ছিলেন। বড় ছেলে হাজী মুহাম্মদ মোহসিন কলেজে বিবিএ প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন। সৌমিক এবার ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে তিন বিষয়ে অকৃতকার্য হন। পরে ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেন তিনি। পুনর্নিরীক্ষণে এক বিষয়ে পাস দেখালেও অপর দুটি বিষয়ে অকৃতকার্যই দেখানো হয়। এ নিয়ে আজ বড় ভাই তাঁকে বকাঝকা করেন। এটাকে কেন্দ্র করে হত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহত সৌমিককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে উপস্থিত বড় ভাই সোমনাথ চৌধুরী জানান, বেলা ১১টা থেকে ১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তিনি বলেন, অকৃতকার্য হওয়ায় ভাইকে বকাঝকা করে তিনি বেলা ১১টায় কলেজে চলে যান। এরপর মায়ের সঙ্গে ছোট ভাইয়ের কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। বেলা একটায় বাসায় ফিরে কয়েকবার কলবেল বাজানোর পর সৌমিক নিজে এসে দরজা খুলে দিয়ে সেখানেই পড়ে যান। তখন তিনি দেখতে পান সৌমিকের সারা গা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এরপর তিনি ছুটে মায়ের কক্ষে এসে দেখেন মা বিছানায় রক্তাক্ত মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। এক প্রতিবেশীর সহায়তায় গুরুতর আহত ভাইকে নিয়ে তিনি হাসপাতালে আসেন বলে জানান।
এদিকে নিহত কুমকুম চৌধুরীর বোন হাসপাতালে বলেন, তাঁর বোন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে নয় মাস ধরে অসুস্থ ছিলেন। ছোট ছেলে সৌমিকই মায়ের দেখাশোনা করতেন। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, যে মাকে এত যত্ন করত, সে কীভাবে এ কাজ করতে পারে! ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে ওষুধ খাওয়ানো সবই সৌমিক করত। কেন সে মাকে হত্যা করল?’
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজেদ কামাল বলেন, নিহত মায়ের গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। হামলাকারী সৌমিকের গলায়ও আঘাত রয়েছে। কোনো কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে সৌমিক মাকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে।