চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হাইমচর থানার পুলিশ ও শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ সন্তানকে রেখে শিশুটির বাবা অন্যত্র চলে গেছেন। অভাবের তাড়নায় পরে মা শিশুটিকে মানুষের বাসায় কাজের জন্য দেন। এক বছর আগে হাইমচরের মোস্তফা সরদার নামের একজন শিশুটিকে গাজীপুরের জয়দেবপুরে ওমর ফারুক-মনি বেগম দম্পতির বাসায় নিয়ে যান। সম্প্রতি শিশুটি বাড়ি যাওয়ার জন্য গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীর কাছে আবদার করে। এ কারণে তাঁরা শিশুটিকে প্রচণ্ড মারধর ও নির্যাতন করেন। খবর পেয়ে মোস্তফা সরদার শিশুটিকে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে গাজীপুরের ওই বাড়ি থেকে হাইমচরে নিয়ে যান। পরে শিশুটির অবস্থা দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আর মোস্তফা সরদারকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে শিশুটিকে সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক দীপন দে বলেন, টাইলসের সঙ্গে মাথা লাগিয়ে নির্যাতন করায় শিশুটির মাথায় বেশ ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম খুন্তি ও বিদ্যুতের তারের আঘাতে ক্ষত হয়ে গেছে। তার পুরোপুরি সুস্থ হতে ১৫ থেকে ২০ দিন লাগবে।
এ ঘটনায় শিশুটির প্রতিবেশী চাঁদপুরের হাইমচর এলাকার শাহজাহান ভূঁইয়া বাদী হয়ে গতকাল সন্ধ্যার পর জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় ওমর ফারুক, তাঁর স্ত্রী মনি বেগম ও তাকে কাজ দিতে নিয়ে যাওয়া মোস্তফা সরদারকে আসামি করা হয়। শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করা হয়। ওমর ফারুক ও মোস্তফা সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাইমচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক বলেন, আজ ওমর ফারুক ও মোস্তফা সরদারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার মনিকে জয়দেবপুর থানায় পাঠানো হচ্ছে। আগামীকাল তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।
এদিকে শিশুটির চিকিৎসার জন্য ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পল্লবী চৌধুরী। আজ শুক্রবার তিনি জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মণ্ডলের মাধ্যমে এ সহায়তা পাঠান।