ঢাকা: পবিত্র হজ পালন শেষে আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর দেশে ফিরতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সৌদি আরব থেকে তার লন্ডনে যাওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি। তিনি লন্ডন না গেলে ২১শে সেপ্টেম্বর দেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন। একই দিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন তার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের প্র্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন। সৌদি বাদশাহ সউদ বিন আবদুল আজিজের আমন্ত্রণে রাজকীয় অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে খালেদা জিয়া ও লন্ডন থেকে তার বড় ছেলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, কন্যা জাইমা রহমান, প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যান। প্রথমে তারা সবাই জেদ্দায় মিলিত হন। তারপর মক্কা গিয়ে বৃহস্পতিবার ওমরাহ পালন করেন। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন খালেদাসহ তার পরিবারের সদস্যরা। রোববার সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে হজের আনুষ্ঠানিকতা সারেন তারা। সন্ধ্যার পর মুজদালিফায় ফিরে মাগরিব ও এশার নামাজ পড়েন খালেদা জিয়া। রাতে অবস্থান করে ভোরে ফজর নামাজ পড়ে মিনায় গিয়ে জামারাতে পাথর ছোড়ার পর কাবায় ফিরে তাওয়াফ করে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। এদিকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হজ পালনের পাশাপাশি সৌদি আরবে ঘরোয়াভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন করেন খালেদা জিয়া। হোটেলে পরিবারের সদস্যরা মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন। ওয়ান ইলেভেনের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বড় ছেলে তারেক রহমান পরিবার নিয়ে থাকেন লন্ডনে। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো সপরিবারে মালয়েশিয়ায়। আর বিএনপি চেয়ারপারসন একা বাংলাদেশে। এমন অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের ছাড়া অন্তত ১৭টি ঈদ পালন করেন খালেদা জিয়া। পরিবারের তিন অংশ তিন জায়গায় ঈদ করার কারণে ঈদের দিনে টেলিফোনে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল খালেদা জিয়ার পারিবারিক ঈদ আনন্দ। গত আট বছরে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের ঈদ উদ্যাপনের চিত্র ছিল এমন। এর মধ্যে আরাফাত রহমান কোকো গত বছরের ২৪শে জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় মৃত্যুবরণ করলে তার স্ত্রী ও দুই কন্যা লন্ডনে চলে যান। এরপর গত ঈদুল আজহার সময় চিকিৎসার উদ্দেশে লন্ডন অবস্থান করায় পরিবারের সকল সদস্যের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর প্রথমবারের মতো ঈদ উদ্যাপনের সুযোগ হয় খালেদা জিয়ার। এবার পবিত্র হজ পালন উপলক্ষে ফের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদ উদ্যাপনের সুযোগ পেলেন তিনি। এদিকে ঈদের দিন সকালে স্থানীয় কয়েক নেতা হোটেলে গিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেননি তারা। তবে দেশে ফেরার আগে প্রবাসী নেতাকর্মীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন খালেদা জিয়া। এদিকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগামীকাল পরিবারের সবাইকে নিয়ে মদিনা যাবেন খালেদা জিয়া। সেখান থেকে ২০শে সেপ্টেম্বর জেদ্দায় যাবেন। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২১শে সেপ্টেম্বর দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। পরের দিন তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।