কারাগারের জায়গায় জাদুঘর-পার্ক

Slider জাতীয়

file (1)

 

ঢাকা; রাজধানীর নাজিম উদ্দিন রোডে অবস্থিত সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় পূর্ব নির্ধারিত জাদুঘর, বিনোদন কেন্দ্র বা পার্ক, শপিং মল, কনফারেন্স রুম নির্মাণ করা হবে। এ জমি অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা হবে না।
গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, পুরাতন জেলখানা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্য। এখানে বঙ্গবন্ধু বন্দি ছিলেন, সেখানে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। কাজেই এ বিষয়গুলো বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই ইতিহাস সংরক্ষণে এখানে একটি জাদুঘরসহ পুরাতন ঢাকাবাসীর জন্য একটি কনফারেন্স রুম, বিপণি বিতান, পার্ক হবে। পুরাতন জেলখানার জমি এসব কাজে ব্যবহার করা হবে, অন্য কোনো কাজে নয়। একাধিক সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমসহ সিনিয়র মন্ত্রীরা জেলখানার জমি অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের তীব্র বিরোধিতা করেন। মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্যের বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কারাগারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার স্মৃতি জড়িয়ে থাকায় সেখানে পার্ক ও জাদুঘর করার আগের সিদ্ধান্তই ঠিক থাকবে। এরপর জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে- তা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, কেরানীগঞ্জে ছেলেদের জন্য একটি হল নির্মাণ করা হবে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ২৫ বিঘা জমি আছে। আর ছাত্রী হোস্টেল হবে বর্তমান ক্যাম্পাসের পাশেই। বর্তমান ক্যাম্পাসের মধ্যে ২০ তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মিত হচ্ছে। এর বাইরে পূর্বাচল ও ঝিলমিলি প্রকল্পে জায়গা খোঁজা হচ্ছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কোন্‌ ধরনের পরিকল্পনা?  ছাত্ররা থাকবে কেরানীগঞ্জে, এক জায়গায় প্রশাসনিক ভবন, অন্য জায়গায় ছাত্রী হল? এটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থা হতে পারে না। এটা অস্থায়ীভাবে চলতে পারবে। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ীভাবে পরিচালনার জন্য একটি পরিপূর্ণ পরিকল্পনা প্রয়োজন। সেই ভাবে পরিকল্পনা করুন। একটি অখণ্ড জমিতে হল, হোস্টেল, প্রশাসনিক ভবন, টিএসসিসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যা যা দরকার তা যেন করা যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেরানীগঞ্জে কি আর জমি ছিল না? সেখানে কি বেশি করে জমি কিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবন এক জায়গায় করা যেতো না? পরে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ব্যবস্থা এক জমিতে করতে পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রীকে।
এদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বুড়িগঙ্গার ওপারে কেরানীগঞ্জে ‘অখণ্ড জমিতে’ সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। কেরানীগঞ্জে নতুন ক্যাম্পাসে হলেও পুরান ঢাকার চিত্তরঞ্জন এভিনিউয়ে এ বিশ্ববিদ?্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী পুরনো স্থাপনাগুলোও থাকবে। তখন কোন্‌টি মূল ক?্যাম্পাস হবে, কোথায় কী কাজ হবে- সেসব বিষয়ে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হবে। জগন্নাথের ছাত্রদের জন?্য কেরানীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ১০ তলা একটি আবাসিক হল নির্মাণের যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে, সেখানেই আরো জমি নিয়ে এই ক?্যাম্পাস হবে। তিনি বলেন, ওখানে ২৫ বিঘা জায়গা কেনা আছে। ওই জায়গার আশেপাশে আরো জমি আছে। সবার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে পরিমাণ জমি প্রয়োজন, তা ওখান থেকে নিতে পারবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *