রিমান্ডে ঘুষ না পেয়ে আসামীর দুই স্ত্রীকে ধর্ষন, দারোগা ক্লোজড, মামলা

Slider বিচিত্র

 

30203_b2
নারায়ানগঞ্জ: সিদ্ধিরগঞ্জে রিমান্ডে থাকা আসামিকে মারধরের ভয় দেখিয়ে ঘুষের পুরো টাকা না পেয়ে তার ২ স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আতাউর রহমানকে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার মঈনুল হকের নির্দেশে পুলিশ লাইনসে তাকে ক্লোজ করা হয়। তবে পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আতাউর রহমানের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। কিন্তু দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ধর্ষিত ২ সতীনের মধ্যে ছোট সতীন বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সোর্স নজরুল ইসলাম ওরফে তোতলা নজরুল এবং শুভকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। বিকালে ২ জনই নারায়ণগঞ্জের একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় তাদের জবানবন্দি প্রদান করেন। বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটি ধর্ষিত ২ নারী এবং তাদের আইনজীবীর সঙ্গেও কথা বলেছে। সেখানে এসআই আতাউর রহমানের নাম আসেনি।
এদিকে মামলা থেকে রেহাই পেলেও শনিবার দুপুরে এসআই আতাউর রহমানকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা থেকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়।
গত বুধবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পাশেই সোর্স নজরুলের ভাড়া ফ্ল্যাটে ধর্ষণের শিকার হন ওই দুই সতীন। বৃহস্পতিবার আদালতপাড়ায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ওই দুই সতীন ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছিলেন। তাদের পক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমানও এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন যে, ওই দুই সতীন তার কাছেও এসআই আতাউর রহমান এবং দুই সোর্স নজরুল ও শুভর নাম বলেছেন।
গতকাল শনিবার বিকালে অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান জানান, ওই ২ নারী যা বলার তা নিজেরাই বলেছেন। বিষয়টি তাদের ব্যক্তিগত। এ ব্যাপারে গতকাল বিকালে তারা ২২ ধারায় আদালতে তাদের জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এখানে আমার কোনো নিজস্ব মতামত বা বক্তব্য নেই। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তৃতীয় একটি পক্ষের মাধ্যমে ওই ২ নারীকে সমঝোতার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল বলে ওই ২ নারীই আমাকে জানিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুনুর রশীদ মণ্ডল বলেন, ওই ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ চলছে। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক হোসেন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে নয়, বরং দায়িত্বে অবহেলার জন্য এসআই আতাউর রহমানকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। এসআই আতাউরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। ধর্ষিতরাও তার নাম তদন্ত কমিটির কাছে বলেননি। তাছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে এসআই আতাউরের নাম মামলা বা অভিযোগ থেকে বাদ দেয়া যে বিষয়টি শোনা গেছে সেটিও সত্য নয় বলে তিনি জানান। এসআই আতাউর রহমানের দায়িত্বে কি অবহেলা ছিল-এমন প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার পর আসামির খোঁজখবর নিতে তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়েছিল। সেখান থেকে সোর্সরা আসামির ২ স্ত্রীকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটালেও নিজের সোর্সদের সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণেই তাকে ক্লোজ করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি সরাফত উল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ২ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *