বেশির ভাগ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক একমত যে, জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনের পর হিলারি স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি জনসমর্থন পেয়েছিলেন। ট্রাম্পও রিপাবলিকান সম্মেলনের পর অতিরিক্ত জনসমর্থন অর্জনে সক্ষম হন। কিন্তু গত তিন সপ্তাহে ক্লিনটন ফাউন্ডেশন ও ই-মেইল প্রশ্নে লুকোচুরি নিয়ে অব্যাহত বিতর্ক হিলারির বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নে নতুন সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এই মুহূর্তে হিলারির ব্যাপারে অসন্তুষ্ট এমন মার্কিনিদের সংখ্যা মোট ভোটারের ৫৯ শতাংশ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থা অবশ্য আরও খারাপ। তাঁকে অনুমোদন করে না—এমন আমেরিকানের সংখ্যা ৬০ শতাংশ।
নির্বাচনী ফলাফল আগাম ঘোষণার জন্য খ্যাত নেট সিলভার জানান, প্রতিটি নির্বাচনেই প্রধান দুই প্রার্থীর জনসমর্থন ওঠানামা করে। গত কয়েক সপ্তাহে ট্রাম্প দেশের আফ্রিকান-আমেরিকানদের কাছে টানতে একের পর এক নির্বাচনী সভা করেছেন। এতে আফ্রিকান-আমেরিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বাড়েনি। তবে ট্রাম্প বিরোধী মধ্যপন্থী রিপাবলিকান ও হিলারির প্রতি অসন্তুষ্ট ডেমোক্র্যাট ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা কিছুটা হলেও বেড়েছে। নেট সিলভার অবশ্য সব জাতীয় জনমতের গড় হিসেব নিয়ে যে মডেল ব্যবহার করছেন, তাতে এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে হিলারির জয়ের সম্ভাবনা ৭৪ শতাংশ।
মার্কিন নির্বাচনী ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে মোট ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট অর্জন করতে হবে। ট্রাম্প ও হিলারি উভয়েই জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিভাজিত মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের সর্বোচ্চ সংখ্যা অর্জনে ইচ্ছুক। এ জন্য গুটিকয় অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় মনোনিবেশ করছেন। ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দলের নিশ্চিত নিয়ন্ত্রণ নেই—এমন ১১টি অঙ্গরাজ্য রয়েছে। এগুলো ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট’ নামে পরিচিত। এসব রাজ্যের অধিকাংশেই এখন পর্যন্ত হিলারি ক্লিনটন এগিয়ে। তবে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ব্যবধান কমে আসার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যেমন, মার্কেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপ অনুসারে আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে উইস্কনসিনে ট্রাম্পের তুলনায় হিলারি ১১ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। এই বুধবার নতুন যে জরিপ বেরিয়েছে, তাতে এই ব্যবধান কমে এসে এখন দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ পয়েন্টে।
জনমতে পিছিয়ে পড়ার লক্ষণ দেখা গেলেও নির্বাচনী চাঁদা সংগ্রহের ব্যাপারে অভাবিত সাফল্য অর্জন করেছেন হিলারি। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, আগস্ট মাসে হিলারির নির্বাচনী ক্যাম্পেইন মোট ১৪৩ মিলিয়ন ডলার চাঁদা সংগ্রহ করেছে। গত সপ্তাহে তিন দিনে হলিউডে একাধিক নির্বাচনী ডিনার থেকে ক্লিনটন কমপক্ষে ২০ মিলিয়ন ডলার চাঁদা সংগ্রহ করেন বলে জানানো হয়েছে। একটি রক্ষণশীল ওয়েবসাইট জানিয়েছে, হলিউডে হিলারির সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ প্রতি মিনিটে ২,৭০, ০০০ ডলার। আগস্ট মাসে ট্রাম্পের সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ এখনো প্রকাশিত হয়নি।