ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতাই দিয়ে যাননি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এদেশের মানুষের মর্যাদাও প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।
গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন। রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ স্মরণসভা আয়োজন করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সবই করে দিয়ে গেছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে কিভাবে সমৃদ্ধ করা ?যায় সে পরিকল্পনাও করেছিলেন তিনি। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই ১৫ই আগস্ট তাকে হত্যা করা হয়। সংবিধান থেকে শুরু করে সবই তিনি করে দিয়ে গেছেন। আজ যেখানেই হাত দিই সেখানেই দেখি চিন্তার প্রতিফলন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দেশের মানুষ সব অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। অনেকে পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে সেখানে চলে যায়। তাকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি বিল জারি করে সে বিচার কাজ বন্ধ করেন। যুদ্ধাপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে আনেন, শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানান, আবদুল আলীমকেও মন্ত্রী বানান। আর কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন, পাকিস্তানি পাসপোর্টেই তাকে দেশে আনা হয়। পরে খালেদা জিয়া তাকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেন। তাদের ভোটাধিকার দেয়া হয়, দেয়া হয় রাজনীতি করার অধিকার। শেখ হাসিনা বলেন, সে সময় কোনো অধিকার ছিল না মানুষের। পঁচাত্তরের পর প্রতিরাতেই কারফিউ জারি ছিল, স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ ছিল না। কোনো গণতন্ত্র ছিল না। যেখানে কারফিউ চলে, সেখানে গণতন্ত্র আসে কীভাবে? এমনকি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার যাতে না হয় সেজন্যে জিয়া মার্শাল ল জারি করে ইনডেমনিটি বিল আনেন। থানায় মামলা নেয়নি, জিডিও করা যায়নি। ২১ বছর পরে ক্ষমতায় এসে সেসব অর্ডিন্যান্স বাতিল করে বিচার শুরু করি আমরা। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। অনেক হুমকি-ধমকি এসেছে, কিন্তু নতি স্বীকার করিনি। আমি জাতির পিতার কন্যা। যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেয়ায় বিএনপিরও শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, রাজাকারের দোসর হিসেবে এদেরও বিচার করতে হবে। তাদের বিচার জনসম্মুখে হওয়া দরকার। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। নেতা-কর্মীদের প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতা নেই, আদর্শ আছে। তিনি সহজ সরল জীবনযাপন করে গেছেন, এটাই তার আদর্শ। তাকে হত্যার বিচার করেছি। এখন তার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তার ?আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দূর করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু নিহত জঙ্গিদের জন্য খালেদা জিয়ার এতো মায়া কান্না কেন? তাদের বাঁচিয়ে রেখে কী হবে? ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত