ভাল কাজের প্রশংসা ও মন্দ কাজের সমালোচনা করবে গনমাধ্যম। দেশ ও জনগনের অধিকারকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যাবে রাষ্ট্রের আয়না বলে পরিচিত মিডিয়া। আমরা শুনেছি, যখন সংসদ কার্যকর থাকে না তখন গনমাধ্যমকে সংসদের আদলে গুরুত্ব দেয় সরকার। আমাদের দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশী সময় রাজনীতিবিদরা দেশ পরিচালনা করছেন। আর গনমাধ্যম যথাযথ ভূমিকাও পালন করছে।
আমাদের ইতিহাস বলছে, বিগত সময়ে গনমাধ্যম কর্মীরা অতিমাত্রায় রাজনীতি প্রবণ ছিলেন না। জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে তারা ঐক্যমত পোষন করেছেন। কোন কোন ইস্যুতে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে সরকারও পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
কিন্তু কয়েক বছর ধরে সাংবাদিকদের অতিমাত্রায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার স্পষ্ট তথ্য জাতির কাছে রয়েছে। বর্তমানে বড় দল গুলোর প্রধানকে ঘিরে রয়েছেন বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক। তারা উপদেষ্টা পদমর্যাদায় আছেন। আবার দলপন্থি সংগঠনেও আছেন। মন্ত্রী এমপি ও লাভ জনক অনেক পদে আসীন হচ্ছেন সাংবাদিকেরা। সাংবাদিকদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে পদ লাভ করার প্রবনতাও বিদ্যমার রয়েছে। আবার তলিয়ে যাওয়া অনেক খবরও গনমাধ্যম বিচারের আওতায় এনেছে।
দিন যত যাচ্ছে সাংবাদিকেরা ততই রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। শেষ তথ্য বলছে, সাংবাদিকেরা এত বেশী রাজনীতি প্রবণ হয়ে পড়েছেন যে, তাদের কিছু কিছু ভূমিকা পেশাদার রাজনীতিবিদদের দুঃসাহসিক ভূমিকাকেও হার মানাতে যাচ্ছে। এটা অশুভ লক্ষন। একটি দেশকে শক্তিশালী করতে হলে গনমাধ্যমকে শক্তিশালী করতে হবে। গনমাধ্যম শক্তিশালী না হলে গনতন্ত্র দুর্বল হয়ে যায়। দেশও হুমকির মুখে পড়ে যায়।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যা যা আছে তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হলে গনমাধ্যমকে রাজনীতিমুক্ত করতে হবে। মুখে মুখে গনতন্ত্রের বুলি দিয়ে গনমাধ্যমকে রাজনীতিতে সক্রিয় করলে দেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। কারণ গনমাধ্যম কর্মী রাজনৈতিক কর্মী হয়ে গেলে জনগন ও দেশের প্রতি যে কোন সরকারের নেয়া ভুল পদক্ষেপের সমালোচনা করার কোন মাধ্যম থাকবে না। তাই ভুল ও অন্যায় ধরিয়ে দিতে গনমাধ্যমকে রাজনীতির বাইরে রাখা উচিত। এর অর্থ এই নয় যে সাংবাদিকেরা রাজনীতি করতে পারবেন না। তারা সমর্থন করতে পারেন কিন্তু নেতা-কর্মী না হওয়াই ভাল। এতে রাষ্ট্র ও জনগনের স্বার্থে কথা বলতে গিয়ে যেন কোন পদ থেকে পদত্যাগ করতে না হয়। তবেই মঙ্গল।