এই প্রথম দেখলাম সাবেক একটি সরকারের মন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের মহাসচিব মির্জ ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিক সম্মেলনে হাউ মাউ করে কেঁদে দিলেন। কান্নার কারণ তার দলের কর্মীরা মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়ায়। রিক্সা চালায় ও হকারী করেন। আর যে ফখরুল ইসলাম অফিস বা বাসা থেকে বের হলে রাস্তার সকল যানবাহন আটকে দিয়ে তার যাতায়তের রাস্তা পরিস্কার রাখা হত ওই ফখরুল ইসলাম এখন যানজটে আটকে থাকেন। মানে এখন ফখরুল ইসলাম যখন যানজটে আটকে থাকেন তখন তার পূর্বের পদমর্যাদার কারো গাড়ি মনে হয় তাকে ক্রস করে যায়। সহজে যদি বলা হয় তবে বলা উচিত, ফখরুল ইসলামের যাতায়াতে যারা আটকা থাকতেন এখন ফখরুল সাহেবই আটকে থাকাদের একজন।
এটাকেই গনতন্ত্র বলে। আমাদের রাজনীতিবিদরা যখন ক্ষমতায় থাকেন তখন ক্ষমতার বাইরে যারা আছেন তাদের সম্পর্কে কোন ধারণা থাকে না। ধারণা হয় যখন মন্ত্রী ফখরুল ইসলাম সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাস্তায় বের হয়ে মন্ত্রীদের যাতায়াতের পথে সাধারণ মানুষ হিসেবে আটকে থাকেন।
আমরা দেখেছি, মন্ত্রী হিসেবে কারাগার উদ্বোধন করে ওই কারাগারেই বন্দি হিসেবে প্রবেশ করেছেন একাধিক মন্ত্রী। আবার পুলিশের লাঠি চার্জে রাজপথে আহত হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীও হয়েছেন আমাদের রাজনৈতিক নেতারা।
আবার বিপরীত দিকও আছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ ছিল বলে রাজনীতির মাঠে কথা আছে। বানিজ্য প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পেঁয়াজ চুরির অভিযোগের কথাও প্রচলিত। এ ছাড়া গম আত্মসাতের মামলায় দন্ডিত ব্যাক্তি সমবায় মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বের মধ্যেও ছিলেন এমন কথাও আছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারী একাধিক নেতার গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়ার নজীর সবার জানা। সবশেষ মন্ত্রী থাকা অবস্থায় দন্ডিত হয়েছেন একাধিক মন্ত্রী। এ গুলো আমাদের ইতিহাস।
আজকে সাবেক সরকারী দল ও বিরোধী দলের মহাসচিব সাংবাদিক সম্মেলনে যে যে কারণে কাঁদলেন তার থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষৎ রাজনীতি পরিচালিত হলে ভাল হয়। মির্জা ফখরুলের কান্না যদি রোল মডেল হয় তবে রাজনীতি আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ হয়ে যেতে পারে। তাই এই কান্না আনরোল মডেল হউক আশা করা উচিত।