ভর্তি পরীক্ষার নম্বরের শর্ত পূরণ না হওয়ার পরও ১৫৩ শিক্ষার্থীকে নিজ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করায় দশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা করেছে আপিল বিভাগ। আগামী ১০ দিনের মধ্যে মেডিকেল কলেজগুলোকে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে হবে। জরিমানার অর্ধেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এবং বাকি অর্ধেক কিডনি ফাউন্ডেশন ও লিভার ফাউন্ডেশনকে দিতে বলা হয়েছে আদেশে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেয়। দশ মেডিকেল কলেজ হলো- শমরিতা মেডিকেল কলেজ, সিটি মেডিকেল কলেজ, নাইটিঙ্গেল মেডিকেল কলেজ, জয়নুল হক শিকদার মেডিকেল কলেজ, ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, ইস্ট-ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ, তাইরুন নেছা মেডিকেল কলেজ, আইচি মেডিকেল কলেজ, কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও আশিয়ান মেডিকেল কলেজ। জরিমানার অর্থ পরিশোধ সাপেক্ষে ১৫৩ শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস/বিডিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে ১২০ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মন্ত্রণালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও একই সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, এসব শর্ত পূরণ না হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া ১৫৩ শিক্ষার্থীর প্রথম পর্বের রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র আটকে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৫৩ জন শিক্ষার্থী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনের শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৩ই জুন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালিন আদেশ দেয়। একই সঙ্গে রিট আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দেয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পরে ওই আদেশের লিভ টু আপিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১০ই আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি শেষে দশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না এবং তাদের কেন জরিমানা করা হবে না তা জানতে চেয়ে মেডিকেল কলেজগুলোর চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষকে ২১শে আগস্টের মধ্যে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। শুনানিতে ঢাকা পক্ষে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর পক্ষে ছিলেন মাসুদ রেজা সোবহান ও সাইফুল করিম। হাইকোর্টে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও এ জে মোহাম্মদ আলী।