ঠিক এক যুগ আগের বিকাল ছিল এটি। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’র প্রাণবন্ত রাজনৈতিক সমাবেশ পরিণত হয়েছিল ভয়াল মৃত্যুপুরীতে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও ভয়াল হামলায় দলের ২৪ নেতাকর্মীকে হারিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। একুশে আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলার বার্ষিকীতে হারানো নেতাকর্মীদের স্মরণ করা হয়েছে বিনম্র শ্রদ্ধায়। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন স্বজন, শুভানুধ্যায়ীরা। এসেছিলেন সেই বর্বর হামলার ক্ষত বয়ে বেড়ানো আহত নেতাকর্মীরাও। তাদের কাছে পেয়ে কুশল বিনিময় করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভয়াল সেই দিনের স্মৃতি স্মরণ করে আবেগ আপ্লুত প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বর্ণনা করেছেন সেই দিনের বীভৎসতার দৃশ্য। তিনি বলেন, মনে হচ্ছিল কেয়ামত এসে গেছে। নেতাকর্মীদের অসীম সাহসিকতায় তৈরি মানববর্মে বেঁচে যাওয়াকে অলৌকিক ঘটনা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি কখনো মৃত্যুকে ভয় করি না। কারো কাছে মাথা নত করি না উপরে আল্লাহ ছাড়া। একমাত্র আল্লাহর কাছেই আমি মাথা নত করি। কারণ, আমি জাতির পিতার কন্যা, এটা আমি সব সময় মনে রাখি। জন্মালে মৃত্যু হবে, তাই মরার আগে আমি মরতে রাজি না। তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলায় আমরা আইভি রহমানকে হারাই। অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকে হারিয়েছি। অনেকে রক্তাক্ত হয়েছে। চারদিকে শুধু লাশ আর লাশ দেখা যায়। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, প্রথম তিনটা গ্রেনেড মারার পর, কয়েক সেকেন্ড সময়; এরপর আবার গ্রেনেড। প্রকাশ্যে দিবালোকে কোনো জনসভায় এভাবে গ্রেনেড মেরে মানুষ হত্যা করা, আমি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা তখন। ওই ট্রাকে আমাদের সব নেতা-কর্মী। ওই র?্যালিতে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমবেত। একটার পর একটা গ্রেনেড মারতে শুরু করেছে। জানি না আমার কি ভাগ্য, গ্রেনেড ট্রাকের ভেতরেই পড়ার কথা। কিন্তু সেখানে না পড়ে, ডালায় লেগে পাশে পড়ে যায়। আমাদের সাবেক মেয়র হানিফসহ ওখানে যারা নেতা-কর্মী ছিল, তারা আমাকে ঘিরে ধরে। আমি টের পাচ্ছি সব স্প্লিন্টার হানিফ ভাইয়ের মাথায় এসে লাগছে। আমার গায়ে গরম রক্ত বেয়ে পড়ছে। একটার পর একটা গ্রেনেড মেরেছে। ১৩টি গ্রেনেড তারা ছুড়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ১১ থেকে ১২টি ফুটেছিল। ওই অবস্থা যখন চলে, মনে হচ্ছিল কেয়ামত এসে গেছে। সেদিন গ্রেনেডের ধোঁয়ায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। চলে যাওয়ার সময় আমার গাড়িতে গুলিও করা হয়েছিল। তবে বুলেট প্রুফ গাড়ি হওয়ায় গুলি লাগেনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ২১শে আগস্টের দিন সমাবেশের আশপাশে পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। কোনো নিরাপত্তাবলয়ও ছিল না। প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে গ্রেনেড হামলা করে মানুষ হত্যা করা হয়। ২১শে আগস্টে গ্রেনেড হামলার পর আরো অনেককে হারিয়েছি। অনেকে স্প্লিন্টার নিয়ে বেঁচে আছেন। যতদিন যাচ্ছে তারা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এত বড় একটি ঘটনা। যেখানে বিশ্ব বিবেক নাড়া দিয়েছে। বিএনপি নেত্রী উল্টো আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে, আমাকে একটা নিন্দা প্রস্তাব করতে দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, আল্লাহ কিছু মানুষকে কিছু কাজ দিয়ে পাঠান। তা না হলে আমি রক্ষা পেতাম না। তিনি বলেন, ২০০৫ সালের ১৭ই আগস্ট সারা দেশে একইসঙ্গে আধা ঘণ্টায় পাঁচ শ’ স্থানে বোমা হামলা চালানো হয়। দেশকে ধ্বংস করতে কি না করেছে তারা। ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৭ সালে জরুরি সরকার আমাকে গ্রেপ্তার করেছে। সমস্ত আঘাত আসে আমার ওপরে। শুধু মামলা নয়, একটার পর একটা ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষর্থীসহ দেশের অনেকে প্রতিবাদ করেছে। ফলে আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলাম। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দারিদ্র্যবিমোচনে বহুমুখী কর্যক্রম নিয়েছি। দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দূর করতে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছি। গোটা বিশ্বের অস্থিরতার কথা উল্লেখ তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমেরিকার মতো জায়গায় মসজিদের ইমাম নামাজ পড়ে ফিরছিলেন, তখন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার ঘটানা সারা বিশ্বে ঘটে যাচ্ছে। জনগণের শক্তি হচ্ছে বড় শক্তি, সমাজের সব স্তরের মানুষ যদি রুখে দাঁড়ায়, তবে এই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের ঘটনা দেশকে মুক্ত করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সন্ত্রাস করে, গ্রেনেড হামলা করে, তাদের স্থান যেন বাংলার মাটিতে না হয়। এ বিষয়ে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। কারণ, তারা কখনো বাংলাদেশের মানুষকে কল্যাণ দিতে পারে না, অমঙ্গল ছাড়া। তারা তো স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, সেখানেই তারা বারবার আঘাত আনে। ২১শে আগস্টের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে সেটাই আমরা চাই।
আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা
ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১২তম বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকাল ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসাবে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এ সময়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ১৪ দল এবং মেয়র সাঈদ খোকন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মির্জা আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ই আগস্টে নিহত সকল শহীদ, ৩রা নভেম্বর জেলাখানায় ৪ জাতীয় নেতা ও গ্রেনেড হামলার শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করার পরপরই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধু এভিনিউর অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, আওয়ামী যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টি (জেপি), যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, সৈনিক লীগ, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ, হকার্স লীগ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগ সংগঠনসহ অন্যান্য সংগঠন গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা
ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১২তম বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকাল ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসাবে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এ সময়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ১৪ দল এবং মেয়র সাঈদ খোকন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মির্জা আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ই আগস্টে নিহত সকল শহীদ, ৩রা নভেম্বর জেলাখানায় ৪ জাতীয় নেতা ও গ্রেনেড হামলার শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করার পরপরই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধু এভিনিউর অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, আওয়ামী যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টি (জেপি), যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, সৈনিক লীগ, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ, হকার্স লীগ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগ সংগঠনসহ অন্যান্য সংগঠন গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে নির্মিত অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।