স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশ দিনের বেশির ভাগ সময় মেঘাচ্ছন্ন ছিল। এর প্রভাবে বেশ কিছু অঞ্চলে সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। স্থল নিম্নচাপের কারণে সাগর বেশ অশান্ত। এ কারণে বাংলাদেশের চার সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে,
ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উত্তর প্রদেশ ও এ লাগোয়া উত্তর-পূর্ব মধ্য প্রদেশে নিম্নচাপটি উত্থিত হয়। পরে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সকালে পশ্চিম মধ্য প্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। এর রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল বিকালে উত্তর-পূর্ব মায়ানমার ও এর পাশের উত্তর-পূর্ব ভারতে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। স্থল লঘুচাপ অথবা স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ একেবারেই কম। শনিবার সারাদিনের বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল সিলেটে ১৩ মিলিমিটার মাত্র। উত্তর-পূর্ব মিয়ানমার ও উত্তর-পূর্ব ভারতের কিয়দংশে সৃষ্ট লঘুচাপের খুব প্রভাব কতটুকু পড়ে আবহাওয়ায় তা হয়তো রোববার পরিস্কার হয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সামনের কয়েক দিন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরো কমে যেতে পারে। আগামী ৪৮ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাবে এবং বেড়ে যাবে তাপমাত্রা। এ অবস্থা পরবর্তি আরো তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিস দক্ষিণ-পশ্চিম মওসুমী বায়ু সম্পর্কে বলেছে, মওসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল পশ্চিম মধ্য প্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকা, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মওসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
সামনের সপ্তাহে সার্বিক তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও রোববার কিন্তু বাড়ছে না। আজ সার্বিক তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।
রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণও হতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৬.২ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাঙ্গামাটিতে ২৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থল নিম্নচাপের প্রভাব সম্পর্কে আবহাওয়া অফিস সতর্ক বার্তায় বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্রগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমূদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।