ঢাকা; আওয়ামী লীগ নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। আর এই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল হাওয়া ভবন থেকে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তোফায়েল এসব কথা বলেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বনানীতে হাওয়া ভবন ক্ষমতার আরেকটি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। মূলত তখনকার প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ওই কার্যালয়ে নিয়মিত বসতেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের মধ্যে কেউ যেন ক্ষমতায় যেতে না পারে, সে জন্য ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হাওয়া ভবন থেকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। সেই বিচারকাজ দ্রুত সমাপ্ত করা হবে। প্রকৃত অপরাধীদের বিচার হবে। একাধিকবার তাঁকে (শেখ হাসিনা) হত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। শেখ হাসিনা না থাকলে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ২০১৯ সালের আগে জাতীয় নির্বাচন হবে না। সেদিন একজন দেখলাম মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি করেছেন। কিসের মধ্যবর্তী নির্বাচন? কী কারণে মধ্যবর্তী নির্বাচন? ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এ সরকারের মেয়াদ। ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের যেকোনো দিন নির্বাচন হবে। তার এক দিন আগেও কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না।
তোফায়েল আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক স্বৈরশাসক ছিল ১৫ বছর। তারপর ৯১-তে আসে খালেদা জিয়া সরকার। স্বাধীনতাবিরোধীদের শুধু নয়, বঙ্গবন্ধুদের খুনিদের পুনর্বাসিত করল। ফারুক, ডালিম, নূর, মহিউদ্দিনদের বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিল। এমনকি নির্বাচনে বিজয়ী করে তাদের নিয়ে ৯৬-তে যে ভোটারবিহীন নির্বাচন হলো, সেখানে বিএনপি রশিদকে বিরোধী দলের নেতা বানায়।
বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহ্বান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল বলেন, কার সঙ্গে ঐক্য হবে, যারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকীতে কেক কেটে ফুর্তি করে এবং যারা জঙ্গিদের সমর্থন করে, এমনকি যারা কল্যাণপুর-গুলশানে নিহত জঙ্গিদের পক্ষে কথা বলে; তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হতে পারে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার, এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রমুখ।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বেইমান–বিশ্বাসঘাতকদের সঙ্গে কোনো আপস হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা এমন নয় যে ক্ষমতালিপ্সুরা তাঁকে হত্যা করে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করবে। এটা ছিল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। এর মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের গতিকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল।