১৯৭৫ সনের আজকের দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করে বিশ্ববাসীর নিকট বাংলাদেশ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। যার আহবানে মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা ও পরবর্তিতে একটি বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে তাকে সাড়ে ৩ বছরের মাথায় স্বপরিবারে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। যারা খুন করেছেন ও যারা খুনী চক্রকে সহায়তা করেছেন তাদের জাতি ধিক্কার জানায়। আমরা নিন্দা করি। ঘৃনা করি।
বঙ্গবন্ধুর খনী চক্রকে পরবর্তিতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা দিয়েছেন যারা তাদের প্রতি আমাদের চরম ঘৃনা ও অপমান থাকবেই। দীর্ঘ সময় পর বঙ্গবন্ধুর কন্য ক্ষমতায় এসে পিতৃহত্যার বিচার করেছেন এটা গর্বের বিষয় নয়। কারণ পরিবার হত্যা মামলায় যদি সন্তানকে ক্ষমতায় এসে বিচার করতে হয় তবে তা জাতি হিসেবে লজ্জার। যে কারণে এই নৃশংস ঘটনার বিচার হয়নি সে কারণকেও আমরা ঘৃনা করি।
যাই হউক, দীর্ঘ সময় পর ভিকটিমের সন্তান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে বিচার করেছেন। ১২ জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। ৫ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। একজন পলাতক অবস্থায় মারা গেছেন। ৫জন এখনো পলাতক আছেন। আমরা চাই পলাতক খুনীদের দেশে এনে রায় দ্রুত কার্যকর করা হউক।
আজ ১৫ আগষ্ট। বাঙালী জাতির জন্য একটি ভয়াবহ শোকের দিন। এই শোকের দিনে একটি কথা মনে পড়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর কন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ের পর বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু আজো কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর যারা খুনীদের নিয়ে বঙ্গভবনে অনুষ্ঠান করেছেন, যে সকল বুদ্ধিজীবী খুনী মোশতাকের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হয়নি। ইতিহাসের বর্বরতম এই হত্যাকান্ডের পর সে সকল পত্রিকায় খুনীদের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং তাদের কেউ কেউ মন্ত্রীর পতাকাও পেয়েছেন।
অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় যে, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে থেকে উল্লাস করেছেন (যার প্রমান সরকারের নিকট রয়েছে) তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা হয়নি। বরং যারা বঙ্গবন্ধুর খুনী চক্রের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, গণমাধ্যমে লিখেছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে।
আরো কষ্টের বিষয় হল, বঙ্গবন্ধুর খুনী চক্রের দোসর হিসেবে যাদের নাম বার বার আলোচিত হয় তারা সত্যিই দুসর কিনা তার কোন তদন্তও হয়নি।এমনকি সন্দেহভাজনদের কেউ কেউ বঙ্গবন্ধুর দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের হয়ে সংসদেও ছিলেন ও আছেন।
আজের এই দিনে জাতির প্রত্যাশা থাকবে, বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের দেশে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার পাশাপাশি খুনী চক্রের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণামতে বিচারের ব্যবস্থা করা। তবেই জাতি সম্পূর্ন কলংকমুক্ত হবে।