ঘাতকের বুলেট। বিদীর্ণ জাতির পিতার দেহ। ছোট্ট রাসেল। রেহাই মিলেনি তারও। বঙ্গবন্ধুর প্রিয়তমা স্ত্রী, সন্তান, পুত্রবধূ, ভাই, স্বজন কাউকেই বাঁচতে দেয়নি হায়েনারা। ১৫ই আগস্ট, ১৯৭৫। পৃথিবীর ইতিহাসে কলঙ্কময় একটি দিন।
জীবনকে জয় করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এমনকি মৃত্যুকেও। বন্ধুকে তিনি ভালোবাসতেন, শত্রুর প্রতিও প্রতিশোধ নেননি। ক্ষমা তাকে মহত্ত্ব দিয়েছিলো। জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্টের ভাষ্য ছিলো, ‘বন্ধু বন্ধুর উপকার করবে। এটা কোনো মহৎ কাজ নয়। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ যদি তার শত্রুর উপকার করে সেটাই হবে মহত্ত্ব।’ শত্রুদের প্রতিও ক্ষমাশীল ছিলেন বঙ্গবন্ধু। রাজনীতিতে যারা তার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল অনায়াসে তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় পা রেখেছেন। তাদের ঘরে বাজার আছে কি-না খোঁজ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর দেহ যেদিন সমাহিত হলো বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে সহনশীলতা, ক্ষমার মতো বিষয়গুলোও বিদায় নিলো। বিদায় নিলো ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্রের মতো রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামোগুলোও।
বঙ্গবন্ধুকে বারবার সতর্ক করা হয়েছিলো। তার বন্ধুরা তাকে সতর্ক করেছিলো। এখন জানা যাচ্ছে, তার কোনো কোনো শত্রুও তাকে সতর্ক করেছিলো। কিন্তু অকুতোভয় বঙ্গবন্ধু সেইসব আমলে নেননি। তিনি কোনোদিন বিশ্বাস করেননি কোনো বাঙালি তাকে হত্যা করতে পারে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তারাও তার বিশাল ব্যক্তিত্বের সামনে ছিল টলটলায়মান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাবেননি বাংলার আলো-বাতাসে কোনোদিন বেড়ে উঠতে পারে তার ঘাতকেরা। রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর উত্থান দীর্ঘ এক ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। সেই স্কুল জীবনেই শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন তিনি। কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নেতৃত্বগুণ শানিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র থাকাকালে কর্মচারীদের আন্দোলনে প্রেরণা যোগানোর অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু তিনি মাথা নত করেননি। সেই যে তার মাথা উঁচু হয়েছিলো, জীবনে আর কখনও তা নিচু হয়নি। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী লীগ। একে একে নেতৃস্থানীয় পদে আসীন হয়েছেন তিনি। জনগণকে ভালোবেসেছিলেন। জনগণও প্রতিদান দিতে ভুল করেনি। ‘ছয় দফা’ রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে তাকে। পাকিস্তানি শাসকেরা তার বিরুদ্ধে দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি ছিলেন অবিচল। প্রেরণার বাতিঘর হয়েছিলেন বেগম মুজিব। শেষ পর্যন্ত জয় হয় তার। বীরদর্পে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। লাখো জনতার সমাবেশে জনতার পক্ষ থেকে তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে দেন বঙ্গবন্ধু উপাধি। স্বাধিকার আন্দোলন থেকে জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করতে থাকেন তিনি। অবর্ণনীয় কারানির্যাতন সইতে হয় তাকে। ৭০’র নির্বাচনে জনগণ নিরঙ্কুশভাবে ভোট দেয় তাকে এবং আওয়ামী লীগকে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা শুরু করে টালবাহানা। আসতে থাকে চূড়ান্ত সময়। ৭ই মার্চ ১৯৭১। রেসকোর্সে দেখা মিলে রাজনীতির কবির। দৃঢ়, দীপ্ত আর বজ্রকণ্ঠে তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী গ্রেপ্তার করে তাকে। আগ মুহূর্তে তিনি ডাক দিয়ে যান স্বাধীনতার। শুরু হয়ে যায় মহান মুক্তিযুদ্ধ। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, পুলিশ- যে যেভাবে পারেন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। অসীম ত্যাগও স্বীকার করতে হয় তাদের। ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখ বা তার বেশি মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে মিলে স্বাধীনতা, মিলে মুক্তি। কিন্তু অপেক্ষা বঙ্গবন্ধুর জন্য। পাকিস্তানি কারাগারে কেমন আছেন তিনি- উৎকণ্ঠায় গোটা জাতি। অবশেষে ফিরে এলেন তিনি। তার প্রিয় বাংলাদেশে। অশ্রু আর আনন্দে একাকার লাল-সবুজ।
সেই যে বলেছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাথা কোনোদিন নিচু হয়নি। স্বাধীন দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন তিনি। নিশ্চিত করেন, দ্রুত যেন ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশ ত্যাগ করে। যার মাধ্যমে তিনি ইতিহাসে অনন্য নজির স্থাপন করেন। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা বসে ছিলো না। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ভেতরে ভেতরে শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। অতি বিপ্লবীদের হঠকারিতাও বিপাকে ফেলেছিলো বঙ্গবন্ধুকে। এরইমধ্যে ষড়যন্ত্রকারীরা চূড়ান্ত আঘাত হানে। কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনাসদস্য হত্যা করে জাতির পিতাকে। এ কথা সত্য, সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেদিন সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারেননি। যে কারণে গুটিকয়েক সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে সেদিন প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খোন্দকার মোশ্তাকের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারীরা গর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছিলো। শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা। দীর্ঘ সময় যে প্রচেষ্টা চলে। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং তাদের সহযোগীদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। মহানায়কের মৃত্যু নেই- ইতিহাসের সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি ফিরে আসেন প্রবল বিক্রমে। এমনকি জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়েও প্রভাবশালী রূপে। আর এখানেই মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধুর কাছে হেরে যান চক্রান্তকারীরা। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। ২০১০ সালের ২৮শে জানুয়ারি ৫ খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন এখনও পলাতক রয়েছেন। তবে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অনেক কিছুই আজও খোলাসা হয়নি। ইতিহাস হয়তো একদিন সবকিছু পরিষ্কার করবে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির এক কড়া সমালোচক ছিলেন প্রয়াত লেখক আহমদ ছফা। সেই ছফাও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে লিখে গেছেন- ‘দিবসের উজ্জ্বল সূর্যালোকে যে বস্তু চিকচিক করে জ্বলে তা হলো মানুষটির সাহস। আর জ্যোৎস্নারাতে রুপোলি কিরণ ধারায় মায়ের স্নেহের মতো যে বস্তু আমাদের অন্তরে শান্তি ও নিশ্চয়তার বোধ জাগিয়ে তোলে তা হলো তার ভালোবাসা। জানো খোকা তার নাম? শেখ মুজিবুর রহমান।’
জীবনকে জয় করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এমনকি মৃত্যুকেও। বন্ধুকে তিনি ভালোবাসতেন, শত্রুর প্রতিও প্রতিশোধ নেননি। ক্ষমা তাকে মহত্ত্ব দিয়েছিলো। জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্টের ভাষ্য ছিলো, ‘বন্ধু বন্ধুর উপকার করবে। এটা কোনো মহৎ কাজ নয়। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ যদি তার শত্রুর উপকার করে সেটাই হবে মহত্ত্ব।’ শত্রুদের প্রতিও ক্ষমাশীল ছিলেন বঙ্গবন্ধু। রাজনীতিতে যারা তার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল অনায়াসে তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় পা রেখেছেন। তাদের ঘরে বাজার আছে কি-না খোঁজ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর দেহ যেদিন সমাহিত হলো বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে সহনশীলতা, ক্ষমার মতো বিষয়গুলোও বিদায় নিলো। বিদায় নিলো ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্রের মতো রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামোগুলোও।
বঙ্গবন্ধুকে বারবার সতর্ক করা হয়েছিলো। তার বন্ধুরা তাকে সতর্ক করেছিলো। এখন জানা যাচ্ছে, তার কোনো কোনো শত্রুও তাকে সতর্ক করেছিলো। কিন্তু অকুতোভয় বঙ্গবন্ধু সেইসব আমলে নেননি। তিনি কোনোদিন বিশ্বাস করেননি কোনো বাঙালি তাকে হত্যা করতে পারে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তারাও তার বিশাল ব্যক্তিত্বের সামনে ছিল টলটলায়মান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাবেননি বাংলার আলো-বাতাসে কোনোদিন বেড়ে উঠতে পারে তার ঘাতকেরা। রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর উত্থান দীর্ঘ এক ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। সেই স্কুল জীবনেই শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন তিনি। কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নেতৃত্বগুণ শানিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র থাকাকালে কর্মচারীদের আন্দোলনে প্রেরণা যোগানোর অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু তিনি মাথা নত করেননি। সেই যে তার মাথা উঁচু হয়েছিলো, জীবনে আর কখনও তা নিচু হয়নি। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী লীগ। একে একে নেতৃস্থানীয় পদে আসীন হয়েছেন তিনি। জনগণকে ভালোবেসেছিলেন। জনগণও প্রতিদান দিতে ভুল করেনি। ‘ছয় দফা’ রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে তাকে। পাকিস্তানি শাসকেরা তার বিরুদ্ধে দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি ছিলেন অবিচল। প্রেরণার বাতিঘর হয়েছিলেন বেগম মুজিব। শেষ পর্যন্ত জয় হয় তার। বীরদর্পে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। লাখো জনতার সমাবেশে জনতার পক্ষ থেকে তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে দেন বঙ্গবন্ধু উপাধি। স্বাধিকার আন্দোলন থেকে জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করতে থাকেন তিনি। অবর্ণনীয় কারানির্যাতন সইতে হয় তাকে। ৭০’র নির্বাচনে জনগণ নিরঙ্কুশভাবে ভোট দেয় তাকে এবং আওয়ামী লীগকে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা শুরু করে টালবাহানা। আসতে থাকে চূড়ান্ত সময়। ৭ই মার্চ ১৯৭১। রেসকোর্সে দেখা মিলে রাজনীতির কবির। দৃঢ়, দীপ্ত আর বজ্রকণ্ঠে তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী গ্রেপ্তার করে তাকে। আগ মুহূর্তে তিনি ডাক দিয়ে যান স্বাধীনতার। শুরু হয়ে যায় মহান মুক্তিযুদ্ধ। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, পুলিশ- যে যেভাবে পারেন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। অসীম ত্যাগও স্বীকার করতে হয় তাদের। ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখ বা তার বেশি মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে মিলে স্বাধীনতা, মিলে মুক্তি। কিন্তু অপেক্ষা বঙ্গবন্ধুর জন্য। পাকিস্তানি কারাগারে কেমন আছেন তিনি- উৎকণ্ঠায় গোটা জাতি। অবশেষে ফিরে এলেন তিনি। তার প্রিয় বাংলাদেশে। অশ্রু আর আনন্দে একাকার লাল-সবুজ।
সেই যে বলেছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাথা কোনোদিন নিচু হয়নি। স্বাধীন দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন তিনি। নিশ্চিত করেন, দ্রুত যেন ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশ ত্যাগ করে। যার মাধ্যমে তিনি ইতিহাসে অনন্য নজির স্থাপন করেন। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা বসে ছিলো না। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ভেতরে ভেতরে শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। অতি বিপ্লবীদের হঠকারিতাও বিপাকে ফেলেছিলো বঙ্গবন্ধুকে। এরইমধ্যে ষড়যন্ত্রকারীরা চূড়ান্ত আঘাত হানে। কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনাসদস্য হত্যা করে জাতির পিতাকে। এ কথা সত্য, সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেদিন সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারেননি। যে কারণে গুটিকয়েক সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে সেদিন প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খোন্দকার মোশ্তাকের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারীরা গর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছিলো। শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা। দীর্ঘ সময় যে প্রচেষ্টা চলে। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং তাদের সহযোগীদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। মহানায়কের মৃত্যু নেই- ইতিহাসের সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি ফিরে আসেন প্রবল বিক্রমে। এমনকি জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়েও প্রভাবশালী রূপে। আর এখানেই মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধুর কাছে হেরে যান চক্রান্তকারীরা। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। ২০১০ সালের ২৮শে জানুয়ারি ৫ খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন এখনও পলাতক রয়েছেন। তবে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অনেক কিছুই আজও খোলাসা হয়নি। ইতিহাস হয়তো একদিন সবকিছু পরিষ্কার করবে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির এক কড়া সমালোচক ছিলেন প্রয়াত লেখক আহমদ ছফা। সেই ছফাও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে লিখে গেছেন- ‘দিবসের উজ্জ্বল সূর্যালোকে যে বস্তু চিকচিক করে জ্বলে তা হলো মানুষটির সাহস। আর জ্যোৎস্নারাতে রুপোলি কিরণ ধারায় মায়ের স্নেহের মতো যে বস্তু আমাদের অন্তরে শান্তি ও নিশ্চয়তার বোধ জাগিয়ে তোলে তা হলো তার ভালোবাসা। জানো খোকা তার নাম? শেখ মুজিবুর রহমান।’