হোয়াইট হাউজের দৌড়ে জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন হিলারি ক্লিনটন। রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে তিনি শতকরা ৫ ভাগ সমর্থন বেশি পেয়েছেন। রয়টার্স/ইপসোসের চালানো সর্বশেষ এ জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে শুক্রবার। এতে দু’জনের জনপ্রিয়তার পার্থক্য সামান্যই পরিবর্তন হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, ২৮শে জুলাইয়ের পর থেকে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের জনপ্রিয়তা শতকরা ৪১ ভাগ থেকে ৪৪ ভাগের মধ্যে ওঠানামা করছে। বৃহস্পতিবারের জরিপে হিলারি ক্লিনটনের জনপ্রিয়তা দেখা গেছে শতকরা ৪১ ভাগ, যা এ সপ্তাহে সামান্য কিছু কমেছে। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা শতকরা ৩৩ ভাগ থেকে ৩৯ ভাগের মধ্যে ওঠানামা করেছে। বৃহস্পতিবারের জরিপে তার জনপ্রিয়তা পাওয়া গেছে শতকরা ৩৬ ভাগ, যা এ সপ্তাহে সামান্য বেড়েছে। ফলে তার বিপরীতে ৪১ ভাগ সমর্থন নিয়ে অর্থাৎ শতকরা ৫ ভাগ বেশি সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আছেন হিলারি। তবে নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে বৃহস্পতিবার এ ব্যবধান ছিল শতকরা ৯ ভাগ। শতকরা ৪২ ভাগ নিবন্ধিত ভোটার সমর্থন করেছেন হিলারিকে। আর শতকরা ৩৩ ভাগ ট্রাম্পকে। তবে আগামী ৮ই নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাউকেই পছন্দ করেন না এমন ভোটারের শতকরা হার ২২ ভাগ। এ সপ্তাহে এ হার শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগের মধ্যে উঠানামা করেছে। ফলে এক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন হয় নি। ওই জরিপে গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইন পেয়েছেন শতকরা প্রায় ৩ ভাগ সমর্থন। গত সপ্তাহের তুলনায় এক্ষেত্রে তেমন পরিবর্তন হয় নি। এ জরিপ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করে তার সারমর্ম করা হয়। এতে ৭ই আগস্ট থেকে ১১ই আগস্ট পর্যন্ত ১৪৪৬ জন নিবন্ধিত ভোটার ও ভোটার হতে পারেন এমন ১১১৬ জন ব্যক্তির ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়। উল্লেখ্য, এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করছেন নিউ ইয়র্কের ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি নানা ঘটনায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। এর ফলে রিপাবলিকান দলের শীর্ষ স্থানীয় অনেক কর্মকর্তা ট্রাম্প থেকে দূরে থাকছেন। তার প্রচারণায়ও তারা অংশ নিচ্ছেন না। এর মধ্যে তিনি অস্ত্র অধিকার বিষয়ক কর্মীদের হিলারির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। তার দলের একজন নেতা বলেছিলেন, হিলারিকে গুলি করে মারা উচিত। ওই নেতার প্রশংসা করেছিলেন ট্রাম্প। এর অর্থ তার কথায় সায় দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ট্রাম্প পরে বোল পাল্টান। তিনি বলেন, তিনি শুধু হিলারির বিরুদ্ধে ভোটদের ভোট দেয়ার কথা বলতে চেয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, এরপরে হিলারি ক্লিনটন ও প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে মারাত্মক এক অভিযোগ আনেন তিনি। বলেন, তারা দু’জন হলেন জঙ্গি গ্রুপ আইএসের প্রতিষ্ঠাতা। এ নিয়ে আবার যখন সরগরম রাজনীতির মাঠ। চায়ের কাপে ঝড়। তখন তিনি আবারও সুর পাল্টালেন। বললেন, এ কথার মধ্য দিয়ে তিনি বিদ্রুপ করতে চেয়েছেন। আর এর আগে ডেমোক্রেটদের জাতীয় সম্মেলনে মার্কিন নিহত সেনা ক্যাপ্টেন হুমায়ুন খানের পিতামাতাকে অসম্মান করে তার দেয়া বক্তব্য বিবৃতির কথা তো সবার জানা। প্রায় দু’তিন সপ্তাহ ধরে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র সমালোচনা ছিল। সেই সমালোচনার ঝড় এখনও আছে। প্রতি পদে, রাজনীতির আলোচনায় উঠে আসছে তার এসব বিতর্কিত পদক্ষেপের কথা। এ ছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের নিষিদ্ধ করার কথা বলেছেন দলীয় প্রাইমারি নির্বাচনে। তা নিয়ে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, সারাবিশ্বে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বৃটিশ পার্লামেন্টে তিন ঘন্টার বিতর্ক হয়েছে, যদিও শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবের পক্ষে রায় দেয় নি পার্লামেন্ট। ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের হুমকি দিয়েছেন। এসবই বিতর্কের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে তাকে।