যে কারণে মাথায় স্কার্ফ পরেন নাদিয়া হোসেন

Slider লাইফস্টাইল সারাবিশ্ব

file (1)

 

আবারও বৃটেনে সংবাদ শিরোনামে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাদিয়া হোসেন। এবার তিনি সংবাদ শিরোনাম ‘বেক অফ’ হিসেবে নন। এবার নিজে কেন মাথায় স্কার্ফ পরেন সে কারণে তিনি সংবাদ শিরোনাম। নিজেই বলেছেন, আমার চুলগুলো খুব বাজে। তা ঢেকে রাখতেই আমি মাথায় স্কার্ফ পরি। তার এ সরল স্বীকারোক্তি লুফে নিয়েছে বৃটিশ মিডিয়া। ইতিমধ্যেই মাথায় স্কার্ফ-পরা নারী মডেলে পরিণত হয়েছেন তিনি। এ সম্পর্কে বলেছেন, মাথায় স্কার্ফ পরা তার পারিবারিক ঐতিহ্য নয়। তিনি স্রেফ চুল ঢেকে রাখার জন্য এটা পরেন। এর পেছনে আর কোন কারণ নেই। হয়তো তার এ স্বীকারোক্তিতে পরিবারও বিস্মিত হতে পারেন। অনলাইন ডেইলি মেইলে এমন কথা লেখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে নাদিয়া কথা বলেছেন দ্য টাইমসের সঙ্গে। তিন সন্তানের মা ৩১ বছর বয়সী নাদিয়া তাতে ব্যক্তিগত অনেক কথাই খুলে বলেছেন। তার পিতৃপুরুষের জন্মভূমি সিলেটে। সে কথা তিনি ভুলে যান নি। স্মরণ করেছেন বাংলাদেশকে। বলেছেন, আমার মাথায় স্কার্ফ দেখে বাংলাদেশ থেকে বৃটেনে আসা অনেক মানুষ বিস্ময় প্রকাশ করেন। তার ভাষায়, যখন আমি বাংলাদেশে যাই তখন কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, কেন আপনি মাথায় ব্যান্ডেজ (হেড স্কার্ফ) পরে আছেন? আপনার মাথায় কি কোন ক্ষত আছে?
কিন্তু এসব প্রশ্নের উত্তর নিজেই এবার দ্য টাইমসকে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এখন থেকে ১৭ বছর আগে তিনি মাথায় স্কার্ফ পরা শুরু করেন। তখন খুব কম মানুষই স্কার্ফ পরতেন। তিনি বলেন, আমি স্কুল লাইব্রেরিতে প্রচুর সময় অবস্থান করেছি। এ ছাড়া শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন সেকশনে আমাকে যেতে হয়েছে। আমি খুব বেশি ধার্মিক পরিবারের মেয়ে নই। কিন্তু আমি আমার ধর্মকে বেছে নিয়েছি। আমার পিতা খুব বাজেভাবে আমার চুল কেটে দিতেন। তাই মাথাটা ঢেকে রাখার জন্যই স্কার্ফ পরা শুরু করি। নাদিয়া বলেন, প্রথমে তিনি বেডরুমেই একা একা পরীক্ষামুলকভাবে স্কার্ফ পরা শুরু করেন, যাতে তা অন্য কেউ কপি করতে না পারে। অথবা কিভাবে পরতে হবে সে বিষয়ে কেউ নাক গলাতে না আসে। এভাবে তিনি যে পদ্ধতিতে স্কার্ফ পরা শুরু করেন তা তার পোশাকের সঙ্গে চমৎকার মানিয়ে যায়। তিনি কৌতুক করে বলেন, আমাকে দেখাতো তুতেনখামেনের মতো। আমাকে তখন সুন্দর দেখাতো না। নাদিয়া বলেছেন, তিনি কেন স্কার্ফ পরা শুরু করলেন তা নিয়ে তার পিতামাতা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। কিন্তু তাদেরকে তিনি বলে দিয়েছেন, সমাজের কে কি বলবে সেদিকে তিনি থোড়াই কেয়ার করেন। উল্লেখ্য, গ্রেট বৃটেন বেক অফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই নারী। তারপর থেকেই তিনি শুধু বৃটেনে নয়, সারাবিশ্বে একটি রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন। জুনে তার প্রথম রান্না বিষয়ক বই ‘নাদিয়াস কিচেন’ প্রকাশিত হয়েছে। দ্য টাইমসে তিনি একটি কলামও লেখেন। বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ৯০তম জন্মদিনের কেকও বানিয়েছেন নাদিয়া। উপরন্তু তিনি নিজেই একটি টিভি শো করবেন। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘দ্য ক্রোনিকলস অব নাদিয়া’। এতে বাংলাদেশী রন্ধনশৈলীও প্রদর্শন করবেন তিনি। ডেইলি মেইল লিখেছে, জুনিয়র বেক অফ প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে থাকবেন নাদিয়া। তার নতুন এ ভূমিকা নিয়ে তিনি বেশ উদ্বেলিত। সিবিবিসি প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছে ৪০ জন টিনেজার বেকার (রন্ধনশিল্পী)। তাতে আন্তর্জাতিক সব শেফ ও রান্না বিষয়ক লেখক আলেগ্রা ম্যাকএভেডির সঙ্গ বিচারক হিসেবে থাকছেন দ্য গ্রেট বৃটিশ বেক অফ ২০১৫ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নাদিয়া হোসেন। অংশগ্রহণকারীদের সবার বয়স ৯ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। এ জন্য লুটনে জন্ম নেয়া এই তারকা বলেন, গত বছর এই সময়ে আমি ছিলাম বেক অফ প্রতিযোগিতার শিবিরে। এবার আমি আবারও সেখানে যাচ্ছি। তবে সেখানে আগামী প্রজন্মকে তাদের রন্ধনশৈলীতে উৎসাহিত করতে যাচ্ছি। এ সুযোগ পেয়ে আমি আবেগাপ্লুত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *