মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়ি ছাড়তে হচ্ছে

Slider বাংলার আদালত

25357_moudud

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়ি তার ভাই মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন (নামজারি) ও ডিক্রি জারি করতে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপিল বিভাগে বাতিল হয়ে গেছে। একইসঙ্গে মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে সরকারি বাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলাও বাতিল হয়ে গেছে আপিল বিভাগে। আজ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় দেয়। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে তিন দশক ধরে বসবাস করে গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ১৫৯ নম্বর বাড়িটি ছাড়তে হবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই প্রভাবশালী নেতার। রাজউক এখন বাড়িটি নিজেদের তত্ত্বাবধানে নেবে বলে জানিয়েছেন  ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।
আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল। আর মওদুদ আহমদের পক্ষে তিনি ছাড়াও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও মাহবুব উদ্দিন খোকন  শুনানিতে অংশ নেন।
৩০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের ওই বাড়ি অবৈধভাবে দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ই ডিসেম্বর গুলশান থানায় মওদুদ আহমদ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ। দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৪ সালের ২৬ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দিলে ওই বছর ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক তা আমলে নেন।
অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের যে বাড়িটিতে মওদুদ আহমদ ও তার পরিবার থাকছেন, তার প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির কাছ থেকে এই বাড়ির মালিকানা এহসান ‘লাভ করেন’। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের পাশাপাশি তার স্ত্রী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এহসান স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। পরের বছর থেকে মওদুদ পরিবার নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এরপর ১৯৭৩ সালের ২ অগাস্ট মওদুদ তার ইংল্যান্ডপ্রবাসী ভাই মনজুরের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। মওদুদ আহমদ ওই অভিযোগ আমলে নেয়ার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গতবছর ২৩ জুন হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেয়। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে মওদুদ আহমদ আপিলের আবেদন করলে আপিল বিভাগ তা মঞ্জুর করে। এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগে আপিলের শুনানি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *