ওনারে মামা বলে পরিচয় দিতেও ঘৃণা হয়। এমন খারাপ লোক কারো মামা হতে পারে না। লাশ যমুনায় ভাসাইয়া দেন। দাফন করার দরকার নাই। যাতে মানুষ দেখে শিক্ষা পায়। ফকির মিসকিন মরলেও মানুষে কান্দে কিন্তু ওর জন্য কেউ চোখের পানিও ফালায় নাই। লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে ঘৃণার সঙ্গে এভাবেই মনের ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন ঢাকার কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গি আবদুল হাকিম ওরফে নাইমের ভাগিনি রোজিনা বেগম। কল্যাণপুরের ঘটনায় নিহত জঙ্গিদের পরিচয় শনাক্তকরণ কালে প্রাথমিক পরিচয়ে জঙ্গি আবদুল হাকিমকে কুয়াকাটার বাসিন্দা হিসেবে শনাক্ত করা হয়। পরে তদন্তে জানা যায় তার প্রকৃত বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত নুরুল ইসলাম।
সরজমিনে জানা যায়, সঠিক জন্ম তারিখ না জানা থাকলেও আনুমানিক ৩৪-৩৫ বছর আগে গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামের দরিদ্র কৃষক নুরুল ইসলামের ঘরে জন্ম গ্রহণ করে হাকিম। জন্মের কিছুকাল পরে তার পিতা মারা যায়। পিতার মৃত্যুর পর তাদের কোনো জমি-বসতি না থাকায় তার মা তাকে নিয়ে নানার বাড়ি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার ঘোড়াধাপ গ্রামে আশ্রয় নেয়। সেখানেই তার বেড়া উঠা এবং আরবি শিক্ষায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করে। এ সময় এলাকার মানুষের কাছে হাকিম মৌলভী নামে পরিচিতিও লাভ করেন। ২০০৪-৫ সালের দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার চাপাইত গ্রামের মৃত আবদুল হামিদ মাস্টারের মেয়ে সখিনা বেগমকে বিবাহ করে। বিবাহিত জীবনে রাজিয়া (১০) তাসলিমা (৭) ও সাইফুল্লাহ (৪) নামের তিন সন্তানের জনক সে। আবদুল হাকিমের চাচী রাবেয়া বেগম বলেন, ২০০৯- ২০১০ সালে হঠাৎ একদিন গ্রামের বাড়িতে বৌ-বাচ্চা নিয়ে হাজির হয় হাকিম। লিবিয়া (বিদেশ) যাবে বলে বৌ-বাচ্চা এখানে রেখে যাবে। তার নিজের কোনো জায়গা না থাকায় আমাদের অংশেই জোর করে ১৩-১৪ হাতের দু’চালা একটি টিনের ঘর তুলে ছয় মাসের মতো অবস্থান করে লিবিয়া চলে যায়। এক থেকে দেড় বছর পর দেশে ফিরে আসে। এই সময়ে তার স্ত্রী সখিনা ও মেয়েরা কিছু সময়ের জন্য এ বাড়িতে অবস্থান করলেও তারা কারো সঙ্গে মিশতো না। প্রচণ্ড রকমের রক্ষণশীল হওয়ায় তার মুখটি পর্যন্ত দেখতে পারেননি কেউ। তিনি আরো বলেন, দু’চালা এই ঘরের ভেতর হাঁড়ি-পাতিল ও একটি স্টিলের ট্রাঙ্ক ছাড়া আর কিছুই নেই। এতোদিন ওই ঘর তালাবদ্ধ ছিল। পুলিশ এসে ওই ঘর থেকে একটি ডায়েরি ও কিছু কাগজপত্রসহ আমার স্বামীকে থানায় নিয়ে গেছে। দূর সম্পর্কের চাচা রহমান বলেন, ২০১১-১২ সালের দিকে লিবিয়া থেকে গ্রামে ফিরে আসে হাকিম। তখন জানায় এ গ্রামেই স্থায়ী হবে সে। আমাদের এ পাড়ায় শিক্ষিত কোনো লোক না থাকায় তার স্থায়ী হবার কথাতে অনেকই খুশিই হয়েছিল। গ্রামে ফিরে এসেই গ্রামের মানুষকে একত্রিত করে টিনের ছাপড়ার একটি মক্তব খুলে। সেখানে যমুনার চরে বাড়ি শাখারিয়া মাদরাসার এক ছাত্রকে দিয়ে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দিতো। পাশাপাশি ওই মক্তবে গ্রামের মানুষদের ধর্মীয় বয়ান দিতো। ধর্ম বিষয়ে এক নাগাড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতে পারতো। কোনো ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করাকে অপছন্দ করতো। তবে বিভিন্ন মসজিদে খুতবা পাঠসহ এলাকার একাধিক মাদরাসায় সারারাত বয়ান দিয়ে মানুষকে ধর্মের কথা বলতেন। তার অধিকাংশ কথাগুলি উগ্র ধর্মীয় মতবাদের ছিল। সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক সকল কিছুতেই ফতোয়া দিতে শুরু করে সে। একটা সময় তার কার্যক্রম আমাদের সন্দেহ হলে তাকে ২০১৩ সালের শেষ দিকে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়। সে উগ্র ধর্মীয় মতবাদের অনুসারী ছিল এমনটাই নিশ্চিত করেছেন নিকট আত্মীয় ও অন্যান্য প্রতিবেশীরা। ওই মক্তবটি এখন বন্ধ রয়েছে। বাড়ির মালিক চাকলাদার তাতে গরুর গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল জলিল বলেন, নাইমের থাকার ঘরের একটি ট্রাঙ্ক থেকে একটি পুরাতন অ্যালবাম উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে হাকিম ও তার স্ত্রী সখিনা খাতুনের একটি ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। এছাড়া লিবিয়া থেকে তার স্ত্রীর নামে হাকিমের টাকা পাঠানোর একটি রশিদও পাওয়া গেছে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাইমের চাচা সুরুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া তার এলাকায় থাকাকালীন সময়ের কার্যক্রম ও স্থানীয় সঙ্গীদের ব্যাপারে নজরদারি চলছে। অন্যদিকে মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার মধুপুরের চাপাইত থেকে হাকিমের স্ত্রীর বড় ভাই আবদুর রহমানকে আটক করা হয়। তাকে হাকিমের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সরজমিনে জানা যায়, সঠিক জন্ম তারিখ না জানা থাকলেও আনুমানিক ৩৪-৩৫ বছর আগে গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামের দরিদ্র কৃষক নুরুল ইসলামের ঘরে জন্ম গ্রহণ করে হাকিম। জন্মের কিছুকাল পরে তার পিতা মারা যায়। পিতার মৃত্যুর পর তাদের কোনো জমি-বসতি না থাকায় তার মা তাকে নিয়ে নানার বাড়ি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার ঘোড়াধাপ গ্রামে আশ্রয় নেয়। সেখানেই তার বেড়া উঠা এবং আরবি শিক্ষায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করে। এ সময় এলাকার মানুষের কাছে হাকিম মৌলভী নামে পরিচিতিও লাভ করেন। ২০০৪-৫ সালের দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার চাপাইত গ্রামের মৃত আবদুল হামিদ মাস্টারের মেয়ে সখিনা বেগমকে বিবাহ করে। বিবাহিত জীবনে রাজিয়া (১০) তাসলিমা (৭) ও সাইফুল্লাহ (৪) নামের তিন সন্তানের জনক সে। আবদুল হাকিমের চাচী রাবেয়া বেগম বলেন, ২০০৯- ২০১০ সালে হঠাৎ একদিন গ্রামের বাড়িতে বৌ-বাচ্চা নিয়ে হাজির হয় হাকিম। লিবিয়া (বিদেশ) যাবে বলে বৌ-বাচ্চা এখানে রেখে যাবে। তার নিজের কোনো জায়গা না থাকায় আমাদের অংশেই জোর করে ১৩-১৪ হাতের দু’চালা একটি টিনের ঘর তুলে ছয় মাসের মতো অবস্থান করে লিবিয়া চলে যায়। এক থেকে দেড় বছর পর দেশে ফিরে আসে। এই সময়ে তার স্ত্রী সখিনা ও মেয়েরা কিছু সময়ের জন্য এ বাড়িতে অবস্থান করলেও তারা কারো সঙ্গে মিশতো না। প্রচণ্ড রকমের রক্ষণশীল হওয়ায় তার মুখটি পর্যন্ত দেখতে পারেননি কেউ। তিনি আরো বলেন, দু’চালা এই ঘরের ভেতর হাঁড়ি-পাতিল ও একটি স্টিলের ট্রাঙ্ক ছাড়া আর কিছুই নেই। এতোদিন ওই ঘর তালাবদ্ধ ছিল। পুলিশ এসে ওই ঘর থেকে একটি ডায়েরি ও কিছু কাগজপত্রসহ আমার স্বামীকে থানায় নিয়ে গেছে। দূর সম্পর্কের চাচা রহমান বলেন, ২০১১-১২ সালের দিকে লিবিয়া থেকে গ্রামে ফিরে আসে হাকিম। তখন জানায় এ গ্রামেই স্থায়ী হবে সে। আমাদের এ পাড়ায় শিক্ষিত কোনো লোক না থাকায় তার স্থায়ী হবার কথাতে অনেকই খুশিই হয়েছিল। গ্রামে ফিরে এসেই গ্রামের মানুষকে একত্রিত করে টিনের ছাপড়ার একটি মক্তব খুলে। সেখানে যমুনার চরে বাড়ি শাখারিয়া মাদরাসার এক ছাত্রকে দিয়ে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দিতো। পাশাপাশি ওই মক্তবে গ্রামের মানুষদের ধর্মীয় বয়ান দিতো। ধর্ম বিষয়ে এক নাগাড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতে পারতো। কোনো ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করাকে অপছন্দ করতো। তবে বিভিন্ন মসজিদে খুতবা পাঠসহ এলাকার একাধিক মাদরাসায় সারারাত বয়ান দিয়ে মানুষকে ধর্মের কথা বলতেন। তার অধিকাংশ কথাগুলি উগ্র ধর্মীয় মতবাদের ছিল। সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক সকল কিছুতেই ফতোয়া দিতে শুরু করে সে। একটা সময় তার কার্যক্রম আমাদের সন্দেহ হলে তাকে ২০১৩ সালের শেষ দিকে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়। সে উগ্র ধর্মীয় মতবাদের অনুসারী ছিল এমনটাই নিশ্চিত করেছেন নিকট আত্মীয় ও অন্যান্য প্রতিবেশীরা। ওই মক্তবটি এখন বন্ধ রয়েছে। বাড়ির মালিক চাকলাদার তাতে গরুর গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল জলিল বলেন, নাইমের থাকার ঘরের একটি ট্রাঙ্ক থেকে একটি পুরাতন অ্যালবাম উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে হাকিম ও তার স্ত্রী সখিনা খাতুনের একটি ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। এছাড়া লিবিয়া থেকে তার স্ত্রীর নামে হাকিমের টাকা পাঠানোর একটি রশিদও পাওয়া গেছে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাইমের চাচা সুরুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া তার এলাকায় থাকাকালীন সময়ের কার্যক্রম ও স্থানীয় সঙ্গীদের ব্যাপারে নজরদারি চলছে। অন্যদিকে মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার মধুপুরের চাপাইত থেকে হাকিমের স্ত্রীর বড় ভাই আবদুর রহমানকে আটক করা হয়। তাকে হাকিমের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।