অপারেশন স্টর্ম-২৬। ৯ সন্দেহভাজনের সন্ধানে পুলিশ

Slider টপ নিউজ সারাদেশ

 

24902_f2
কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানার ঘটনায় দায়ের করা মামলা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনার শুরু থেকেই এটি পুলিশের পাশাপাশি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছিলো পুলিশের বিশেষ এ ইউনিট। মামলা হস্তান্তরের পর পলাতক জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করতে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছেন গোয়েন্দারা। ঢাকা ছাড়াও দেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এলাকাকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। কল্যাণপুরের জাহাজবাড়ির জঙ্গি আস্তানায় যারা আসা-যাওয়া করতো তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পলাতক জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি শহীদুর রহমান জানান, জঙ্গিরা যাতে পালাতে না পারে এজন্য বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় তথ্য দেয়া রয়েছে। জঙ্গি নির্মূল করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। সূত্রমতে, কল্যাণপুরের ঘটনায় নিহতদের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ ছিল তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে জঙ্গি তৎপরতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। পুলিশ জানিয়েছে, জাহাজবাড়িতে আসা-যাওয়া করতো এমন ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে গ্রেপ্তার রিগ্যান হাসানের কাছ থেকে। তারা হলো কবিরাজ ওরফে আযাদুল, ইকবাল, তামিম চৌধুরী, রিপন, খালিদ, মামুন, মানিক, জুনায়েদ খান ও বাদল। তাদের কয়েকজনের নাম পরিচয়ও খুঁজে পেয়েছে গোয়েন্দারা।
পলাতক ওই ৯ জন জঙ্গি অপারেশন পরিচালনা করে বলে পুলিশের ধারণা। তাদের মধ্যে রিপন অন্তত ১০টি হামলায় জড়িত রয়েছে বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছেন। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। বগুড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গি তৎপরতায় নাম এসেছে বাদলের। তার বাড়ি বগুড়ায় হতে পারে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দারা। খালিদের বাড়ি চাঁপাই নবাবগঞ্জ বলে প্রাথমিক তথ্য রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। তবে দীর্ঘদিন থেকে এলাকাছাড়া রয়েছে সে। ঢাকায় একাধিকবার স্থান পরিবর্তন করেছে বলে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। রিপনকে গ্রেপ্তার করতে বগুড়া, চট্টগ্রাম ও সিলেটে অভিযান চালানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কল্যাণপুরের ঘটনার পরপর স্থান পরিবর্তন করেছে তারা। যে কারণে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে অভিযান চালিয়ে তাদের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রেপ্তার হাসানের দেয়া তথ্যানুসারে রাজধানীর কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা। ব্যবহার করা হচ্ছে নানা প্রযুক্তি।
তদন্তে জঙ্গিদের অর্থের উৎসকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তদন্তে ইতিমধ্যে রিয়াজ, ইয়াসিন ও তাওসিফসহ কয়েক জঙ্গির নাম পাওয়া গেছে। কল্যাণপুরের ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা আছে কি-না তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। তাদের মধ্যে তাওসিফ ঝিনাইদহে ছিল বেশ কিছুদিন। গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনায় নিহত নিবরাস ইসলামের সঙ্গে ঝিনাইদহে ছিল তাওসিফ। এ বিষয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্তে তাওসিফসহ কয়েকজনের নাম এসেছে। পলাতক জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানান তিনি।
জাহাজবাড়ি হিসেবে পরিচিত তাজ মঞ্জিলের পঞ্চম তলার কয়েকটি কক্ষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা। সেখানে অস্ত্র, অর্থ, গোলাবারুদ সংরক্ষণ করা হতো। ছয়তলা ওই ভবনের চার, পাঁচ ও ছয়তলায় মেস। ভবনটির প্রতিটি তলায় ৪টি ও ৩টি করে ইউনিট রয়েছে।
মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আহম্মদ বলেন, মামলাটি কাউন্টার টেররিজিম ইউনিটে চলে গেছে। তবে পলাতক জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করতে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত বাড়ির মালিকের স্ত্রী মমতাজ বেগম, ছেলে মাজহারুল ইসলাম জুয়েল ও দুই প্রহরীকে নিয়মিত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভূঁইয়া মাহবুব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *