ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, পৃথক নির্বাচন আমাদের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নির্বাচন ভাগ্য গড়ে দেয়। ’৪৬, ’৭০-এর নির্বাচন তার প্রমাণ। কিন্তু গত ২৫ বছর ধরে ডাকসু’র কোন নির্বাচন হয় না। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক চর্চা করতে পারছে না। জ্ঞানের চর্চা হচ্ছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটা বন্ধ্যত্ব তৈরি হয়েছে। আর এর জন্যই জঙ্গিবাদ তৈরি হচ্ছে। সাংস্কৃতিক মুক্তি থাকলে অন্ধকারের প্রাণীরা ভয় পাবে। জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে তাঁর রচিত ‘জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জনগণের মুক্তি’ গ্রন্থের উপর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সংহতি প্রকাশন লেখকের ৮০তম জন্মদিনে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে গ্রন্থটির উপর আলোচনার আয়োজন করে।
প্রতিক্রিয়ায় সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, গ্রন্থটি আনন্দের সঙ্গে লিখেছি। সে আনন্দ আরও বাড়লো আপনাদের উপস্থিতি ও আলোচনায়। তিনি বলেন, উপমহাদেশে জাতয়িতাবাদী আন্দোলন যারা করেছেন তারা ছিলেন সুবিধাবাদী শ্রেণী। সুবিধাকে আরও বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করলেও তারা জনগণকে কাছে রেখেছিলেন। তবে তাদের আকাক্সক্ষা ও চিন্তার মধ্যে জনগণ ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক বলেন, ইতিহাস চর্চা বাংলাদেশে অনেক কমে গেছে। এখানে ইতিহাস বিমুখতা তৈরী হয়েছে। যা ভয়ংকর। রাজনৈতিক বিমুখতা তৈরী হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধে আইন প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবে আইন করলে তা ইতিহাস হবে না। সরকারী প্রেসনোটে পরিণত হবে। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ক্ষমতাসীনরা কখনো ইতিহাস পছন্দ করেন না। কারণ তাদের ইতিহাস কখনো গৌরবের নয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, এখন ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতার বাইরে থাকা অনেকে প্রশ্ন করেন, কিভাবে তরুণরা জঙ্গি হয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো, তরুণরা যখন অন্যকিছু হতে চায় তা হতে দেন কিনা। ক্ষমতাসীনরা নিজেদের চিন্তা তরুণদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। তরুণদের বলা হচ্ছে, আমরা যাকে বিখ্যাত বলবো তাকে বিখ্যাত বলতে হবে কোন প্রশ্ন করা যাবে না। তরুণদের বলা হচ্ছে আত্মকেন্দ্রিক হও, টাকার পেছনে ছুটো। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদী মতাদর্শ দিয়ে জঙ্গিবাদ দমন করা যায় না। তরুণের নিজের মধ্যে সংশয় তৈরি না হলে, প্রশ্ন না তৈরি হলে সে তো জঙ্গি হবেই। একশ্রেণীর মিড়িয়া ও বুদ্ধিজীবী এ চাপানোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। আনু মুহাম্মদ বলেন, ধ্বংসকে উন্নয়ন হিসেবে এক নাগাড়ে দেখানো হলে সেটাকে তো উন্নয়ন হিসেবেই দেখবে। এ জন্য তিনি শাসক শ্রেণী ও আন্তর্জাতিক পুঁজিবাদী শ্রেণীকে দায়ী করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো নতুন জ্ঞান উৎপাদনের জায়গা। কিন্তু তাকে কারখানা বানিয়ে ফেলেছি। যার কারণে দেশে সংকট তৈরী হয়েছে। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা চাইলে ১০টা বিদ্যুত কেন্দ্র বানাতে পারবো। কিন্তু দুইটা সুন্দরবন বানাতে পারবো না। তিনি বলেন, বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরীর ক্ষেত্রে সরকার মুখপাত্র। এর পেছনে যারা কলকাঠি নাড়েন তারা ঠাকুর। তাদের মুল খুজে পাই না। তারা যা বলেন সরকার তা মেনে নেয়।
ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, সাম্প্রদায়িকতাকে প্রত্যাখ্যান করে জাতীয়তাবাদের মাধ্যমেই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও কেন বারবার সাম্প্রদায়িকতার মধ্যে জড়িয়ে পড়ছি। উগ্র ধর্মান্ধের শিকার হয়ে যাচ্ছি, অনেকাংশে পড়েছি। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বইতে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অনেক উপাদান রেেয়ছে।
নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, জাতীয়তাবাদ সাম্প্রদায়িক হয়ে গেলে পশু হয়ে যায়। আজকের বাংলাদেশকে মানুষের চিন্তার দেশ হিসেবে গড়ে তোলতে চাইলে এর পেছনের অতীতকে তীক্ষèভাবে চিন্তা করতে হবে। তিনি বলেন, ‘৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হলেও মানুষ স্বাধীন হয়নি। এই দেশকে সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের দেশ হিসেবে দেখতে চাইলে অসাম্প্রদায়িক ও বেশির ভাগ মানুষের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ভাষা সৈনিক আহমদ রফিকের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসেন, অধ্যাপক আজফার হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
প্রতিক্রিয়ায় সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, গ্রন্থটি আনন্দের সঙ্গে লিখেছি। সে আনন্দ আরও বাড়লো আপনাদের উপস্থিতি ও আলোচনায়। তিনি বলেন, উপমহাদেশে জাতয়িতাবাদী আন্দোলন যারা করেছেন তারা ছিলেন সুবিধাবাদী শ্রেণী। সুবিধাকে আরও বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করলেও তারা জনগণকে কাছে রেখেছিলেন। তবে তাদের আকাক্সক্ষা ও চিন্তার মধ্যে জনগণ ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক বলেন, ইতিহাস চর্চা বাংলাদেশে অনেক কমে গেছে। এখানে ইতিহাস বিমুখতা তৈরী হয়েছে। যা ভয়ংকর। রাজনৈতিক বিমুখতা তৈরী হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধে আইন প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবে আইন করলে তা ইতিহাস হবে না। সরকারী প্রেসনোটে পরিণত হবে। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ক্ষমতাসীনরা কখনো ইতিহাস পছন্দ করেন না। কারণ তাদের ইতিহাস কখনো গৌরবের নয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, এখন ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতার বাইরে থাকা অনেকে প্রশ্ন করেন, কিভাবে তরুণরা জঙ্গি হয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো, তরুণরা যখন অন্যকিছু হতে চায় তা হতে দেন কিনা। ক্ষমতাসীনরা নিজেদের চিন্তা তরুণদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। তরুণদের বলা হচ্ছে, আমরা যাকে বিখ্যাত বলবো তাকে বিখ্যাত বলতে হবে কোন প্রশ্ন করা যাবে না। তরুণদের বলা হচ্ছে আত্মকেন্দ্রিক হও, টাকার পেছনে ছুটো। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদী মতাদর্শ দিয়ে জঙ্গিবাদ দমন করা যায় না। তরুণের নিজের মধ্যে সংশয় তৈরি না হলে, প্রশ্ন না তৈরি হলে সে তো জঙ্গি হবেই। একশ্রেণীর মিড়িয়া ও বুদ্ধিজীবী এ চাপানোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। আনু মুহাম্মদ বলেন, ধ্বংসকে উন্নয়ন হিসেবে এক নাগাড়ে দেখানো হলে সেটাকে তো উন্নয়ন হিসেবেই দেখবে। এ জন্য তিনি শাসক শ্রেণী ও আন্তর্জাতিক পুঁজিবাদী শ্রেণীকে দায়ী করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো নতুন জ্ঞান উৎপাদনের জায়গা। কিন্তু তাকে কারখানা বানিয়ে ফেলেছি। যার কারণে দেশে সংকট তৈরী হয়েছে। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা চাইলে ১০টা বিদ্যুত কেন্দ্র বানাতে পারবো। কিন্তু দুইটা সুন্দরবন বানাতে পারবো না। তিনি বলেন, বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরীর ক্ষেত্রে সরকার মুখপাত্র। এর পেছনে যারা কলকাঠি নাড়েন তারা ঠাকুর। তাদের মুল খুজে পাই না। তারা যা বলেন সরকার তা মেনে নেয়।
ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, সাম্প্রদায়িকতাকে প্রত্যাখ্যান করে জাতীয়তাবাদের মাধ্যমেই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও কেন বারবার সাম্প্রদায়িকতার মধ্যে জড়িয়ে পড়ছি। উগ্র ধর্মান্ধের শিকার হয়ে যাচ্ছি, অনেকাংশে পড়েছি। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বইতে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অনেক উপাদান রেেয়ছে।
নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, জাতীয়তাবাদ সাম্প্রদায়িক হয়ে গেলে পশু হয়ে যায়। আজকের বাংলাদেশকে মানুষের চিন্তার দেশ হিসেবে গড়ে তোলতে চাইলে এর পেছনের অতীতকে তীক্ষèভাবে চিন্তা করতে হবে। তিনি বলেন, ‘৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হলেও মানুষ স্বাধীন হয়নি। এই দেশকে সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের দেশ হিসেবে দেখতে চাইলে অসাম্প্রদায়িক ও বেশির ভাগ মানুষের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ভাষা সৈনিক আহমদ রফিকের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসেন, অধ্যাপক আজফার হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।