রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখী বিক্ষোভ মিছিল টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে কয়েকজনকে। ওদিকে, সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি বাতিলে গণভোটের দাবি জানিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। একই সঙ্গে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আগামী ৩০শে জুলাই সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। গতকাল বিকাল ৩টায় রাজধানীর মুক্তিভবনে পুলিশি হামলার পর তাৎক্ষণিক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান, সংগঠনটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি বাতিলে গণভোটের আয়োজন করুন। দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ এ চুক্তি বাতিলের পক্ষে রায় দেবে। দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে জাতীয় কমিটির মিছিলে পুলিশের হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ কয়েক দয়ায় আমাদের মিছিলে বাধা দিয়েছে। গুলি, টিয়ার শেলে ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ আমাদের সংগঠনের শতাধিক কর্মীকে আহত করেছেন বলে অভিযোগ করেন আনু মুহাম্মদ। গুরুতর আহত ৪৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া মিছিল থেকে ৬ জনকে আটক করে রমনা থানায় নেয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য দিয়েছেন তিনি। অবিলম্বে আটকদের মুক্তি দাবি জানিয়েছেন তিনি। হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আগামী ৩০শে জুলাই বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবনবিনাশী ও দেশবিধ্বংসী সব চুক্তি বাতিল এবং বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিলসহ খোলা চিঠি নিয়ে রওনা দেয় জাতীয় কমিটি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের নেতৃত্বে এই কর্মসূচি শুরু হয়। মিছিলটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব দিকের একটি ও শাহবাগ ওভার ব্রিজের পূর্ব দিকে শিশুপার্কের কাছে একটি ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড় হয়ে বেলা সোয়া ১২টার দিকে সাবেক রূপসী বাংলার সামনে এসে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। পুলিশের বাধা ঠেলে মিছিলটি বাংলামোটর মোড়ের দিকে এগোতে গেলে পুলিশ ব্যাপক কাঁদুনে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কাঁদানে গ্যাসের ঝাঁঝালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পরিবাগ এলাকা। এর মধ্যে বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন ধরে পুলিশের গাড়িতে উঠানো হয়। আহত কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় বলে সংগঠন থেকে দাবি করা হয়েছে।