অবশেষে মারা গেল দিল্লিতে ধর্ষিত ১৪ বছর বয়সী এক বালিকা। নরপিশাচরা তাকে পর্যায়ক্রমে শুধু ধর্ষণই করে নি, একই সঙ্গে তাকে এসিড পান করতে বাধ্য করে। এরপর হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিল সে। কিন্তু সব আশাকে অতিক্রম করে সেও নিয়েছে চিরবিদায়। রোববার সে মারা যাওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে আর কত ‘নির্ভয়া’ ঘটনা ঘটবে ভারতে? উল্লেখ্য, ২০১২ সালে দিল্লিতে চলন্ত এক বাসের ভিতর মেডিকেল পড়–য়া এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনিই নির্ভয়া হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তার মৃত্যুতে ভারতজুড়ে তোলপাড় হয়। সরকার ধর্ষণের শাস্তি নির্ধারণে আইন সংশোধন করে। কিন্তু ধর্ষণ থামছে না ভারতে, বিশেষ করে দিল্লিতে। সেখানে যেন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এসব অপরাধ। রোববার যে বালিকা মারা গেছে সে দলিত সম্প্রদায়ের। এ বিষয়ে দিল্লি কমিশন ফর ওমেন-এর প্রধান স্বাতী মালিওয়ল টুইটে প্রশ্ন রেখেছেন, দিল্লি আর কত নির্ভয়া চায়? এখনও দলিত সম্প্রদায়ের বালিকা ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেপ্তার করে নি পুলিশ। কেন পারে নি তা জানতে চেয়েছেন তিনি। স্বাতী মালিওয়াল এনডিটিভিকে বলেছেন, ওই বালিকাকে জোর করে এসিড পান করানো হয়েছিল। এতে তার শরীরের ভিতরকার সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রচ- বেদনার মধ্য দিয়ে সে মারা গেছে। ওদিকে পুলিশের অভিযোগ, ধর্ষিত বালিকা বা তার পরিবার কখনও তাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে যায় নি। এর জবাবে দিল্লি কমিশন ফর ওমেন বলেছে, বালিকাটি দলিত সম্প্রদায়ের। তাকে ও তার পরিবারকে ধর্ষকের পক্ষ থেকে ভীতি প্রদর্শন ও নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল। এ জন্য তারা থানায় যাওয়ার সাহস পায় নি। কমিশন আরও বলেছে, এর আগেও এই বালিকাকে গত ডিসেম্বরে অপহরণ করা হয়েছিল। তখনও তাকে ধর্ষণ করা হয়। তখন অভিযুক্ত শিবশঙ্করের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল। মে মাসে এ মামলার শুনানির ঠিক আগে বাড়ি থেকে ওই বালিকাকে আবার অপহরণ করা হয়। ২৬শে মে যখন তাকে পাওয়া যায় তখন তার মাথা থেকে রক্ত ঝরছিল। অভিযুক্ত শিবশঙ্করের এক আত্মীয় তাকে অপহরণ করেছিল। অপহৃত অবস্থায় দিনে বেশ কয়েকবার করে শিবশঙ্কর তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় তার হাত-পা বাঁধা থাকতো। খাবার দেয়া হতো না। আত্মীয় ও শিবশঙ্কর জোর করে তাকে ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়ে এসিড পান করতে বাধ্য করে। এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত রয়েছে পুলিশের। তারা বলেছে, ডাক্তারি পরীক্ষায় সব সত্য বেরিয়ে আসবে। পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেছেন, ওই বালিকা দু’বার নিখোঁজ হয়েছিল। দু’বারই সে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে। বালিকাটি মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর ডিসেম্বরে জামিনে মুক্ত হয় অভিযুক্ত শিবশঙ্কর।