তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে চুরির জন্য সাংসদসহ জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের দায়ী করে বক্তব্য দেওয়ার পর আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। এ সময় তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে মন্ত্রিসভার সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য বলেন, মন্ত্রিসভার নিয়মিত আলোচ্যসূচি শেষ হওয়ার পর তথ্য মন্ত্রণালয়ের লোগো সংবলিত একটি খাম মন্ত্রিসভার সদস্যদের টেবিলে পৌঁছে দেন তথ্যমন্ত্রী। খামের ভেতরে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। যার শিরোনাম ছিল ‘তথ্যমন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশ’। এতে তিনি বলেছেন, টিআর-কাবিখা প্রসঙ্গে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি বা ভুল বোঝাবুঝি হলে বা কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে তা অনভিপ্রেত।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দসহ সকল জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকভাবে সম্মান করি। এই সম্মান অক্ষুণ্ন রয়েছে। তারপরও কেউ যদি অনভিপ্রেতভাবে দুঃখ পেয়ে থাকেন, তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
বৈঠক সূত্র জানায়, তথ্যমন্ত্রী এই বক্তব্য পড়ে শোনানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন যে ‘তির ছেড়ে দিলে এবং মুখের কথা বেরিয়ে গেলে ফিরে আসে না’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্ত্রী বলেন, তথ্যমন্ত্রী বলেছেন যে টিআর-কাবিখা নিয়ে তিনি এভাবে কথা বলতে চাননি এবং কীভাবে তিনি কথাগুলো বলেছেন, তা তুলে ধরার চেষ্টা করেন। এ সময় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, এভাবে বলিনি—এটা বলার কোনো সুযোগ নেই। যখন রেকর্ড দেখাবে, তখন কী বলবেন? এ সময় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ২০০৯ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এক ছটাক গম খেয়েছি—এ কথা কেউ বললে ও প্রমাণ করলে পদত্যাগ করব। এভাবে সবাইকে চোর বানানো ঠিক হয়নি। এ কথা বলে তিনি (তথ্যমন্ত্রী) সবাইকে ডুবিয়ে দিয়েছেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় পল্লি কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের এক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী টিআর-কাবিখা নিয়ে কথা বলেন।
সরকারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এ নিয়ে সরকারের মন্ত্রী-সাংসদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আজ তথ্যমন্ত্রী জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে ৩০০ বিধিতে বক্তব্য রাখতে পারেন।