নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কেপি অলি। তার বিরুদ্ধে অনাাস্থা ভোট আনা হলেও তার আগেই পদত্যাগ করেছেন তিনি। অনাস্থা ভোটকে তিনি তার সরকারের বিরুদ্ধে নেপালের কংগ্রেস ও মাওবাদীদের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন। আর এর মাধ্যমে ‘ভালো কাজের’ জন্য তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবর মাসে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন অলি। তার নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের অন্তর্ভুক্ত দলগুলো তার প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করায় তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনে নেপাল কংগ্রেস ও সিপিএন-মাওয়িস্ট সেন্টার। গতকাল সন্ধ্যায়ই এই অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে জোটের অন্তর্ভুক্ত আরো দুই দল মাধেসি পিপল’স রাইটস ফোরাম-ডেমোক্রেটিক ও রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি এই অনাস্থা ভোট সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিলে অলি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। অলির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি তার দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলোকে সম্মান দেখাননি। অলির নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলেও তাতে জোটের শরিক দলগুলো বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের। অনাস্থা ভোট নিয়ে অলি সংসদে বলেন, নয় মাস আগে দেশের সঙ্কটময় একটি সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। গত বছরের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশটি যখন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তখন আবার সরকারের পরিবর্তনকে তিনি ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেন। ‘ভালো কাজের’ জন্য শাস্তি পেতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সময়ে সরকার বদলের খেলাটা রহস্যময়।’ তিনি আরো বলেন, তিনি দায়িত্ব নেয়ার সময় নেপালের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক ছিল ন্যূনতম মাত্রায়। সেখান থেকে তিনি ভারত ও চীনের সঙ্গে নেপালের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। তার এই প্রচেষ্টা নেপালকে একটি দেশের ওপর নির্ভরতা থেকে মুক্তি দিয়েছে। সংসদে তিনি বলেন, ‘এখানে আসার আগেই আমি প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে এসেছি।’ উল্লেখ্য, কেপি অলি গত ১০ বছর সময়ে নেপালের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের ভয়াবহ ভূমিকম্প ছাড়াও দেশটি রাজনৈতিকভাবেও অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গত বছর দেশটিতে নতুন সংবিধান গৃহীত হলেও এর বিরুদ্ধে মাধেসি সম্প্রদায় ব্যাপক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। তাদের চলমান আন্দোলনের মুখে সংবিধানে কিছু সংশোধনীও যুক্ত করা হয় এ বছরের শুরুতে।