সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্যদের গানম্যানসহ যথাযথ নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ এবং জাসদের মাইন উদ্দীন খান বাদল পয়েন্ট অব অর্ডারে এ দাবি জানিয়ে বলেছেন, মন্ত্রী-সচিব-ডিসি-এসপি-বিশিষ্ট ব্যক্তিরা গানম্যান পেলে এমপিরা পাবেন না কেন? কেউ পাবেন আর কেউ পাবেন না- এটা হতে পারে না। আমরা মরতে ভয় পাই না, কিন্তু অসম্মানজনকভাবে মরতে চাই না। এ ব্যাপারে তারা স্পিকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বুধবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রাত ৯টায় অধিবেশন মুলতবির আগে পয়েন্ট অব অর্ডারে তারা এ দাবি জানান। সংসদে উপস্থিত বেশীর ভাগ সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে এ দু’জন এমপির দাবির প্রতি সমর্থন জানান। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সম্প্রতি পুলিশ কমিশনার বার্তা দিয়ে মন্ত্রীদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ আছে, গানম্যানও আছে। বাসায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এমপিদের কোন গানম্যান নেই। আমাদের প্রত্যেকেরই তো মানুষের মাঝে প্রতিনিয়ত যেতে হয়। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা নেই। সন্ত্রাসীরা সব সময় সফট টার্গেট (দুর্বল লক্ষ্য) বেছে নেয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। সেসময় আমরাও এটা করেছি। তাই আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে। বড় বড় ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদেরও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি সংসদের অভিভাবক হিসেবে স্পিকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কাজী ফিরোজ রশীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে জাসদের কার্যকরী সভাপতি মাইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী জনপ্রতিনিধিদের উপরে কেউ নেই। কিন্তু সেটা ফলো করা হয় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর করা প্রিসিডেন্স ফলো করা হয় না। এরশাদের করা আইন ফলো করা হয়। তিনি বলেন, ডিসিদের গানম্যান আছে। সচিবদেরও গানম্যান আছে। মন্ত্রীদের পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে। তারপরও তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে তাঁরা বলেছেন। অথচ সংসদে দুই থেকে আড়াইশ’ সংসদ সদস্য রয়েছেন। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য কিছুই নেই। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এমপিদের নিরাপত্তার কী হবে? তারা কী বাজারে, স্কুলে-কলেজে যাবেন না? তাদের নিরাপত্তা কে দেবে? এমপিদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে সবার নিরাপত্তা তুলে দেন। জনগণ সঙ্গে থেকে নিরাপত্তা দেবে। কাউকে নিরাপত্তা দেবেন, কাউকে দিবেন না এটা হয় না। আমরা বাজেট করি ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার। আর এই আড়াইশ’ এমপির গানম্যান দিতে পারবেন না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। ভয় পাই না। তবে অসম্মানজনকভাবে মরতেও চাই না।