গাজীপুর অফিস: স্থায়ী কোন কাজ নেই। শরীরে শক্তি নেই তাই। বয়স সত্তর। তাই কেউ কোন কাজও দেয় না। দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার। জীবিকা নির্বাহ করতে কোন না কোন কাজ তো চাই। তাই ১০ বছর ধরে উন্মুক্ত বিলের কুচুরী পানা থেকে শাক তুলে বাজারে বিক্রি করেই চলছে মারফত আলীর সংসার।
সম্প্রতি গাজীপুর জেলা শহরের ছায়াবীথী এলাকায় একটি বিলের এক অংশে দেখা মিলে মারফত আলীর। তিনি জানালেন, ১০ বছর ধরে বিল থেকে শাক তুলে সংসার চালাচ্ছেন। প্রতিদিন ১০/১২ কেজি শাক তুলতে পারেন মারফত আলী। ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় শাক। আবার কেউ কেউ ৪০ টাকাও দেয়। অবশ্য কোন মাস্তানের পাল্লায় পড়লে টাকা ছাড়াই শাক দিয়ে দিতে হয়। কারণ বিলের মালিক মারফত আলী না হওয়ায় শক্ত কোন ধমকেই শাক দিয়ে বাঁচতে হয় মারফত আলীর। কারণ মাস্তানরা সব বিলের মালিক এটাই মারফত আলীর জানা।
শেরপুরে আদি বাড়ি হলেও এখন আর ঠিকানা টুকুও নেই তার। তাই গাজীপুর শহরের বরুদা এলাকায় এক হাজার টাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে কোন মতে মাথা গুজার ঠাঁই করেছেন মারফত আলী। তাই কম ভাড়ার সঙ্গে শর্ত হল মালিকের বাড়িটাও যেন পাহাড়া দেয়া হয়। তাই নিরাপত্তার কাজ করতে গিয়ে রাতে জেগে থেকে বাড়ি পাহাড়া আর দিনের বেলায় বিল থেকে বিলে ঘুরে ঘুরে কুচুরী পানা থেকে শব্জি তোলার কাজ করেন মারফর আলী। সারা দিনে ফাঁকে ফাঁকে বিলের পাড়ে কোন গাছের ছায়ায় হালকা হালকা ঘুমিয়ে তন্দ্রা থেকে মুক্তি নেয় মারফত আলী।
গাজীপুর শুধু নয় সারাদেশেই মারফত আলীর মত নতুন নতুন পেশায় অসংখ্য মানুষ নিয়োজিত আছেন। জীবিকার তাগিদে তারা যে কোন কাজই করছেন। তবে কাজের মধ্যে ব্যাতিক্রমধর্মী কিছু কাজ আছে যা যে কোন মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়। তার মধ্যে মারফত আলী ও তার কাজ একটি।
লেখক
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম