সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার দায়ে সিঙ্গাপুরে ৪ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ চারজন এ বছর দেশটিতে চালু হওয়া নতুন সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনের অধীনে আটককৃত ৮ অভিবাসী শ্রমিকদের অন্যতম। তাদের কথিত প্রধান মিজানুর রহমানকে ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। বাকি তিন অভিযুক্তের মধ্যে রুবেল মিয়া ও হাজী নুরুল ইসলাম সওদাগরকে আড়াই বছরের এবং সোহেল হাওলাদারকে দুই বছরের সাজা দেয়া হয়েছে।
সরকারি কৌঁসুলিরা বলেন, বাংলাদেশে হামলার জন্য খাবার, অস্ত্র ও সমরাস্ত্র ক্রয়ের জন্য অর্থায়নের বিষয়টি সবাই স্বীকার করেছেন। ৬০ থেকে সর্বোচ্চ ১৩৬০ সিঙ্গাপুর ডলার অনুদান দিয়েছিলেন তারা। ডয়েছে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিলে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার দায়ে সিঙ্গাপুরে আটক হওয়া একদল বাংলাদেশি অভিবাসীর মধ্যে এরাও ছিলেন। দলের সন্দেহভাজন নেতা মিজানুর রহমানের কাছে অস্ত্র ও বোমা তৈরির কৌশল-সম্পর্কিত বইপত্র, ইসলামিক স্টেট ও আল কায়দার উগ্র বইপত্র পাওয়া গিয়েছিল। এসব ব্যবহার করে অন্যদের দলে ভেড়াতেন তিনি। ৩১ বছর বয়সী মিজানুরও এসব দায় স্বীকার করে নিয়েছেন।
দণ্ডিত এ ব্যক্তিরা নিজেদের ‘ইসলামিক স্টেট ইন বাংলাদেশ’ নামে অভিহিত করতেন। তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাত করে ইসলামিক স্টেটের অধীনে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করাই ছিল তাদের লক্ষ্য।
মিজানুর সম্পর্কে জেলা বিচারক কেসলার সোহ বলেন, ‘তার আরও কড়া শাস্তি হওয়া উচিত ছিল। তিনি ছিলেন মূল হোতা। পুরো চক্র প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি।’ সদস্যদের তহবিলে অনুদান প্রদানের আমন্ত্রণ জানানোয় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের পৃথক দুটি অভিযোগও ছিল। ওই অভিযোগসমূহে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আদালতে শাস্তি কমানোর চেষ্টায় স্বীকারোক্তি দেন মিজানুর। ইংরেজিতে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ধর্ম শিখতে চেয়েছিলাম। আমার বন্ধুরা আমাকে ভুল পথে ও ভুল কর্মকাণ্ডের দিকে নিয়ে যায়। এটা আমার বিশাল বড় ভুল ছিল, স্যার। আমি খুবই অনুতপ্ত।’
সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ সিঙ্গাপুরি ডলার জরিমানা।
অভিযুক্ত আরও দুই ব্যক্তি দোষ স্বীকার করেননি। তাদের বিচার শুরুর তারিখ এখনও ঘোষিত হয়নি।