শোলাকিয়ায় হামলাকারী নিহত আবির চার মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন

Slider জাতীয়

d3fdd8ac3338a9a51b9ce8a14cf5b722-sholakia2

ঢাকা; কিশোরগঞ্জের  শোলাকিয়ায় হামলাকারী নিহত আবির রহমান চার মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। শোলাকিয়ায় নিহত হওয়ার আগের দিন তাঁর নিখোঁজ থাকার বিষয়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পরিবার। ফেসবুক ও গণমাধ্যমে ছবি দেখে স্বজনেরা জানতে পারেন, শোলাকিয়ায় নিহত হয়েছেন আবির।
আবির রহমানের বাড়ি ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। তাঁর বাবার নাম সিরাজুল ইসলাম। তিনি ঠিকাদারি করেন। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট আবির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের বিবিএ পড়তেন। এর আগে তিনি ‘ও’ লেভেল ও ‘এ’ লেভেল সম্পন্ন করেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়ালে (বিআইটি)। আবিরদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলায়।
জিডির ব্যাপারে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল মোত্তাকিন  বলেন, আবিরের পরিবার ৬ জুলাই জিডি করে। এতে বলা হয়, গত মার্চ থেকে নিখোঁজ আবির।

আজ সন্ধ্যার পর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আবিরদের বাসায় গেলে ভবনের প্রধান ফটকে এই প্রতিবেদককে আটকে দেন নিরাপত্তাকর্মী নজরুল ইসলাম। আবিরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ফটকে থাকা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করে দেওয়া হয়। ফোনে সাংবাদিক পরিচয় দিলে আবিরের বাবা সিরাজুল ইসলাম কথা বলতে রাজি হন।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, ছেলেবেলা থেকে আবির চুপচাপ স্বভাবের ছিল। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা একটু উচ্ছৃঙ্খল হয়—অনেকের এমন ধারণা থাকলেও আবির তেমনটা ছিল না। ছোটবেলা থেকেই নামাজ পড়ত। হঠাৎ গত মার্চ মাসের ১ তারিখ সে বলে, পড়াশোনা করতে মালয়েশিয়ায় যাবে। আমি বলি, তোমার দুই ভাই অস্ট্রেলিয়ায় থাকে, পড়াশোনা শেষ করে অস্ট্রেলিয়ায় যাও। কিন্তু সে মানতে চায়নি। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে ওই দিন সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।

এত দিন জিডি করেননি কেন জানতে চাইলে আবিরের বাবা বলেন, ভেবেছিলাম রাগ করে মালয়েশিয়া চলে গেছে, ফিরে আসবে। ও এমন কাজে জড়িয়েছে বুঝতেই পারিনি। গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনার পর সন্দেহ হয়। তারপর জিডি করি।

ছেলের লাশ আনতে যাবেন কি না জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, মার্চের ১ তারিখের পর থেকে তার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। এখন ও-তো মরেই গেছে। ফেসবুক ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখে জানতে পারি, সে শোলাকিয়ায় মারা হয়েছে। এখন বলতে চাই না ও-আমাদের পরিবারের কেউ।

একপর্যায়ে আবিরের বাবা বলেন, ‘আর কোনো বাবার যেন এমন পরিস্থিতিতে পরতে না হয়। সব বাবা-মার কাছে আহ্বান, সন্তানদের খোঁজ নিন। কোথায় যায়, কী করে খোঁজ নিন। কাউকে যেন আমার মতো বিপর্যস্ত হতে না হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *