গুলশানের স্প্যানিশ রেস্তরাঁয় সন্ত্রাসী হামলাকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রেস্টুরেন্টে ভয়ঙ্কর পরিকল্পিত এই হামলার জন্য যারা সন্ত্রাসীদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে, আমরা অবশ্যই সেই অপরাধীদের শেকড় খুঁজে বের করবো। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সিইজি কিহারা সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এদিকে আজ সকাল ১০টায় ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে গুলশান হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বসাধারণও সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এই শ্রদ্ধা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন। জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সন্ত্রাসীরা এর আগে গুপ্তহত্যা চালিয়েছে এবং পুরোহিত, ফাদারস ও ভিক্ষুদের টার্গেট করেছে। অপরাধে জড়িত অনেক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ঐকমত্যে পৌঁছান, বাংলাদেশ ও জাপান ঐক্যবদ্ধভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জাপান ও ভারতে সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুলশানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত জাপানি নাগরিকদের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পারস্পরিক স্বার্থে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে উপস্থিত ছিলেন।
নিহতদের শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী
এদিকে গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহতদের স্মরণে দুদিনের রাষ্ট্রীয় শোকের দ্বিতীয় দিন আজ সকাল ১০টায় ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে শ্রদ্ধা নিবেদনের এই আনুষ্ঠানিকতা হবে। গতকাল আওয়ামী লীগের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গুলশানে নিহতদের স্মরণে দেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশান-২ নম্বরের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তরাঁয় হামলা চালায় কয়েকজন সশস্ত্র জঙ্গি। তারা দেশি-বিদেশিদের জিম্মি করে। ঘটনার পর অভিযান চালাতে গেলে জঙ্গিদের হামলায় বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম নিহত হন। জঙ্গিরা রাতেই তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জন জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। শনিবার সকালে যৌথবাহিনী ওই রেস্টুরেন্টে কমান্ডো অভিযান চালায়। এতে ছয় জঙ্গি নিহত হয়। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।